লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, দেশের কোথাও শেখ পরিবারের নামফলক থাকার সুযোগ নেই, কারণ তারা দেশদ্রোহী। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করার অধিকারও হারিয়েছে।

অলি আহমদ আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবার যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল। তারা গণহত্যাকারী দল। দ্রুত তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে।

আজ সোমবার দুপুরে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকার সুপরামর্শ গ্রহণ করছে না, এমন অভিযোগ করে অলি আহমদ বলেন, ‘অতীতে আমরা ১২৭টি প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা জানি না, প্রধান উপদেষ্টা এগুলো দেখেছিলেন কি না, না দেখলে দেখার অনুরোধ করব। আমাদের পরামর্শ এলডিপি কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য নয়; বরং এটা জনগণের ভালোর জন্য।’

অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে এলডিপির শীর্ষ নেতা বলেন, সরকার গঠনের আট মাস পরে এখনো টাকায় মুজিবের ছবি কেন? মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমানের কোনো অবদান নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

দেশে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করে তাঁদের অনৈতিক সুবিধাগুলো অনতিবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানান অলি আহমদ। তাঁরা জনগণের করের টাকায় অবৈধ সুবিধা কেন নেবেন, এমন প্রশ্ন তুলে তিনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশ করার দাবি জানান।

আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার ‘পালিত খুনি বাহিনীর’ কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, ‘অভিযুক্ত ডিসি ওসিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাঁদের শাস্তি হচ্ছে না কেন?’ তিনি মনে করেন, গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে।

দেশের ইতিহাসে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান পৃথক অস্তিত্ব বহন করে উল্লেখ করে এলডিপির সভাপতি বলেন, একাত্তর ও চব্বিশ দুটো এক জিনিস এক নয়। অনেকে দুটি প্রেক্ষাপটকে একীভূত করে বিবেচনা করছেন। কিন্তু এটা পাগলামির শামিল। দুই ইতিহাসের কোনোটিকে হেয়প্রতিপন্ন করার সুযোগ নেই।

দেশ গড়তে প্রবীণদের ভূমিকা উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, নবীনদের মেধা ও যোগ্যতার সঙ্গে প্রবীণদের অভিজ্ঞতাকে মূল্যায়ন করতে হবে। স্বপ্নের দেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।

সংবাদ সম্মেলনে সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহৃত গাড়ির তালিকা তৈরি, বিচার বিভাগের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ, রাস্তার ওপর বসানো হাটবাজার উচ্ছেদ, দুর্নীতি বন্ধে অনলাইনে টেন্ডার আয়োজন, মানুষকে উন্নত সেবা দিতে বিশেষায়িত একাধিক হাসপাতাল স্থাপন এবং দেশের উন্নয়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান অলি আহমদ।

সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয় এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য নেয়ামূল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, কে কিউ সাকলায়েন ও অধ্যাপক ওমর ফারুক। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন এলডিপির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মো.

মাহবুবুর রহমান ও যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এলড প র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ

‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে’ আগামী ২ মে (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি।

সমাবেশ উপলক্ষে তৈরি করা প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে এনসিপি। এগুলো হলো ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।

এরপর চারটি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারপত্রে। এগুলো হলো প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।

দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে। এই সমাবেশে এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিল করছে এনসিপি। এর ধারাবাহিকতায় এবার কিছুটা বড় পরিসরে ঢাকা মহানগর শাখার ব্যানারে সমাবেশ হতে যাচ্ছে।

এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা পর্যায়ে কিছুদিন ধরে এনসিপির যে কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, এগুলোরই চূড়ান্ত সমাবেশটা হবে আগামী ২ মে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৫১ ফিলিস্তিনি নিহত
  • রাজধানীতে পরপর তিন দিনে তিন জনসমাবেশ
  • বিশ্বনেতাদের সতর্ক দৃষ্টির সামনেই ঘটছে গণহত্যা
  • ইসলামবিরোধী প্রস্তাবনা রুখে দেওয়া হবে: মামুনুল হক
  • ২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
  • শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
  • ‘বিশ্বের নজরদারির মধ্যেই ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল’
  • রাখাইনে করিডর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ হেফাজতের
  • ইয়েমেনে মার্কিন হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা ইরানের
  • নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি