দরিভালে অনাস্থা, ব্রাজিলের কোচ হতে পারেন যারা
Published: 26th, March 2025 GMT
গত নভেম্বরের দুই ম্যাচে ভেনেজুয়েলা ও উরুগুয়ের বিপক্ষে সমতায় মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল। তখনই ব্রাজিলের কোচ দরিভাল জুনিয়রের চাকরির সুতোয় টান পড়েছিল। মার্চের কলম্বিয়া ও আর্জেন্টিনা ম্যাচ ছিল তার জন্য প্রমাণের সুযোগ।
ওই পরীক্ষায় বাজেভাবে ফেল করেছেন ব্রাজিল বস দরিভাল। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ২-১ গোলে জিতলেও ভালো খেলেনি ব্রাজিল। শেষ মিনিটে ভিনিসিয়াসের দুর্দান্ত গোলে জয় পায় সেলেসাওরা। আর্জেন্টিনার মাঠে গিয়ে ৪-১ গোলে হেরেছে দরিভালের দল।
আগামী জুনে ইকুয়েডর ও প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল। ইকুয়েডর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের পয়েন্ট টেবিলে দুইয়ে আছে। তাদের মাঠে ম্যাচটি তাই কঠিন হতে পারে। ওই লড়াইয়ের আগেই কোচ পরিবর্তন করতে পারে ব্রাজিল। তবে ওই পরিকল্পনাও ভেস্তে যেতে পারে জুনের ক্লাব বিশ্বকাপের কারণে।
সংবাদ মাধ্যম গ্লোবো জানিয়েছে, ব্রাজিল কোচের সঙ্গে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট এডনাল্ড রদ্রিগেজের দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে। তিনি দরিভালকে সরিয়ে পুনরায় কার্লো আনচেলত্তিকে ব্রাজিলের ডাগ আউটে দেখতে চান।
এছাড়া ব্রাজিলের সাবেক চেলসি ও অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ডিফেন্ডার ফিলিপে লুইজকে রাখা হয়েছে তালিকার। এর বাইরে আছেন আল হিলালে কাজ করা পর্তুগিজ কোজ হোর্হে জেসুস ও পালমেইরাসে কাজ করা পর্তুগিজ কোচ আবেল ফেরেইরা।
রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে কার্লো আনচেলত্তির ২০২৬ সাল পর্যন্ত চুক্তি আছে। চলতি মৌসুমে লস ব্লাঙ্কোসরা খুব ভালো না খেলায় মৌসুম শেষে চাকরি যেতে পারে তার। তবে জুনের ক্লাব বিশ্বকাপ পর্যন্ত আনচেলত্তিকে দেখা যেতে পারে রিয়ালের ডাগআউটে। গ্লোবের মতে, আনচেলত্তিও পুনরায় ব্রাজিলের বিষয়ে কাছের মানুষদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
আনচেলত্তির মতো ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নেবে ফিলিপে লুইজের ফ্লামেঙ্গোও। জুনের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সূচিতে তাই ব্রাজিলকে দরিভালের ওপরই ভরসা রাখতে দেখা যেতে পারে। কাউকে অন্তবর্তীকালীন দায়িত্বও দেওয়া হতে পারে। জুনের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে পা হড়কালে ব্রাজিলের বিশ্বকাপে খেলা শঙ্কায় পড়ে যেতে পারে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র জ ল আর জ ন ট ন ব শ বক প ব ছ ই র ব শ বক প দর ভ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য
দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।
আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।
আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।
কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।