বিএনপি নেতার সঙ্গে এনসিপির সারজিস আলমের বাকবিতণ্ডা, ভিডিও ভাইরাল
Published: 27th, March 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের সঙ্গে মতিয়ার রহমান নামে এক বিএনপি নেতার বাকবিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা সম্মেলন কক্ষে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সারজিস আলমের বৈঠককে কেন্দ্র করে এই বাকবিতণ্ডা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে আটোয়ারী উপজেলা বিএনপি নেতা মতিউর রহমান কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরের পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের কার্ড বিতরণের জন্য উপজেলা চত্বরে যান। এ সময় তিনি বিভিন্ন অফিসে কর্মকর্তাদের অনুপস্থিত দেখতে পান এবং খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এনসিপি নেতা সারজিস আলম উপজেলা পরিষদ হলরুমে কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করছেন।
মিটিং শেষ হলে তিনি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতার সঙ্গে কর্মকর্তাদের বৈঠকের বিষয়ে কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান। এ সময় এনসিপি নেতা সাজিদ আলম তাকে বলেন, আমরা উত্তরাঞ্চলের মানুষ কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করলে আমাদের পিছন থেকে টেনে ধরা হয়। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্য তর্ক শুরু হয়। রাতে এই তর্কের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এ নিয়ে একাধিকবার চেষ্টা করো সারজিস আলমের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে বিএনপি নেতা মতিয়ার রহমান বলেন, একটি পার্টির মুখ্য সংগঠক উত্তর অঞ্চলের। আমি যতটুকু জানি, তিনি সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন না। আমি তাৎক্ষণিক আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা বোদা উপজেলার নির্বাহী অফিসারসহ জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করেছি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প জ ত য় ন গর ক প র ট ব এনপ কর মকর ত দ র এনস প ব এনপ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।