অপরাধী শনাক্তে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরার বেশির ভাগই অচল
Published: 28th, March 2025 GMT
ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও চুরির মতো ঘটনায় অপরাধীদের শনাক্তে নোয়াখালী পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয় ১০২টি সিসিটিভি ক্যামেরা। এসব ক্যামেরার বেশির ভাগই ভাঙচুরসহ নানা কারণে অচল হয়ে পড়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের কারণে পৌর শহরে অপরাধ কমে এসেছিল। তবে এখন সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট হয়ে পড়ায় আবারও অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিন শহরের মোহাম্মদীয়া মোড়, সুধারাম থানার সামনে, হাসপাতাল সড়ক, মাইজদী বাজার, নতুন বাসস্ট্যান্ড, টাউন হল মোড়, জেলা জামে মসজিদ মোড়, পৌর বাজার, বিশ্বনাথ ও মফিজ প্লাজা, স্টেডিয়াম পাড়া, নাপিতের পোলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা হয়। এসব এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোর বেশির ভাগই ভাঙা কিংবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন। এসব ক্যামেরা এখন আর তেমন কোনো কাজেই আসছে না।
আশপাশের এলাকার ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা জানান, ২০২২ সালে এসব ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। গত বছর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলার সময় অন্তত এক-তৃতীয়াংশ ক্যামেরা ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়াও নানা কারণে অকেজো হয়ে পড়ে বেশ কিছু ক্যামেরা। ভেঙে ফেলা কিংবা অকেজো হয়ে পড়া ক্যামেরাগুলো আর সচল করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
জেলা পুলিশ ও সুধারাম থানা সূত্রে জানা গেছে, শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে জেলা পুলিশের উদ্যোগে রাজনৈতিক দলের নেতা, শহরের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের সহায়তায় প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিল। এসব ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণকক্ষ ছিল সুধারাম মডেল থানায়। একজন পুলিশ সদস্য সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ক্যামেরায় নজর রাখতেন। এতে শহরে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা অনেকটাই কমে আসে।
শহরের টাউন হল মোড় এলাকার ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরার কারণে অপরাধীরা আগে আতঙ্কের মধ্যে থাকতেন। এখন ক্যামেরা নষ্ট হওয়ায় সেই ভয় তাদের আর নেই। পুনরায় এসব ক্যামেরা সচল করতে পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
শহরের মাইজদী বাজার এলাকার বাসিন্দা মো.
নোয়াখালী শহর বণিক সমিতির সভাপতি এ কে এম সাইফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, শহরকে নিরাপদ করার জন্য পুনরায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো প্রয়োজন। এতে শহরের ব্যবসা-বাণিজ্যও ভালোভাবে চলবে। কেনাকাটা করতে এসে কাউকে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হবে না।
জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার মো. আবদুল্লা আল ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অচল সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। অচল ক্যামেরা সচল করে আগের মতো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তদারকির ব্যবস্থা করা হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এসব ক য ম র র ব যবস ছ নত ই শহর র অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে সৌদিপ্রবাসীর অপহৃত শিশুসন্তান উদ্ধার
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী ইউনিয়ন থেকে অপহৃত সাত বছরের একটি শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রুহুল আমিন (২০) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের মধ্যে অপহরণকারীরা গতকাল শুক্রবার গহিন জঙ্গলে মায়ের কাছে শিশুটিকে দিয়ে পালিয়ে গেছে। তবে বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) রাঙ্গাঝির এলাকার সদস্য মো. শাহাবুদ্দিনের দাবি, তিন লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে অপহরণকারীরা শিশুটিকে মায়ের কাছে দিয়ে গেছে।
বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করিম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে সৌদি আরবপ্রবাসী সাইফুল ও শাহেদা বেগম দম্পতির সাত বছরের ছেলেকে বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের পর সন্ত্রাসীরা ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ঘটনার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। পুলিশের অভিযানে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে।
মুক্তিপণ দিয়ে শিশুটিকে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনো তথ্য নেই বলে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
বাইশারী ইউপির রাঙ্গাঝিরি এলাকার সদস্য মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার রাতে রাঙ্গাঝিরি পাড়ার শিশুটি অপহৃত হওয়ার পর পরিবার থেকে অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছিল। অন্যদিকে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনীও অভিযান পরিচালনা করেছে। গতকাল শুক্রবার শিশুটির মা রাঙ্গাঝিরি থেকে আলেক্ষ্যং এলাকায় যান। সেখান থেকে তাঁর অপহৃত সন্তানসহ বিকেলে ফিরে আসেন। সন্ত্রাসীরা প্রথমে ১০ লাখ টাকা দাবি করলেও পরে তিন লাখ টাকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে বলে তাঁরা জেনেছেন।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, অভিযানের মুখে অপহৃত শিশুটিকে মুক্তি দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। অপহরণের ঘটনার পর থেকে অভিযান চালানো হয়েছে। উদ্ধারের পর শিশুটির পরিবার মামলা করার জন্য থানায় গেছে।