ছাদে শতাধিক যাত্রী নিয়ে কমলাপুর ছাড়ল আন্তনগর ট্রেন, পুলিশের বাঁশি, মাইকে ঘোষণা কাজে এল না কিছুই
Published: 29th, March 2025 GMT
ঈদ এলে বাড়ি ফিরতে ট্রেনের ছাদে চড়ে বসেন অনেকেই। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে আপনজনের কাছে ছুটে যান তাঁরা। ট্রেনের ছাদে চড়ে ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণ করা যাবে না, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের এমন নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রতিবছরেরই চিত্র এটা।
এবার ঈদযাত্রার শুরুর দিকে এ নিয়ে কঠোর ছিল কর্তৃপক্ষ। আজ শনিবার ঈদযাত্রার ষষ্ঠ দিনে এসে সেই চেষ্টায় ছন্দপতন ঘটেছে।
গত পাঁচ দিনের ঈদযাত্রায় অন্তত কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে যাত্রীদের ছাদে উঠে ভ্রমণ করতে দেখা যায়নি। গতকাল শুক্রবার কিছু ট্রেনে অল্পসংখ্যক যাত্রী ছাদে উঠে যাত্রার চেষ্টা করলেও রেল পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের নামিয়ে দেন।
আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে একটি আন্তনগর ট্রেন ছাদে শতাধিক যাত্রী নিয়ে কমলাপুর ছেড়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ছাদে উঠে পড়া যাত্রীদের নিচে নামাতে চেষ্টার কমতি ছিল না। ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার আগমুহূর্ত তাঁদের চেষ্টা করে যেতে দেখা যায়, কিন্তু ফল মেলেনি।
সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে গিয়ে দেখা যায়, পঞ্চগড় অভিমুখী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভেতরে যাত্রী ঠাসা। অনেকেই দাঁড়িয়ে যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউ কেউ ট্রেনের বগির দরজা কিংবা দুই বগির সংযোগস্থলেও অবস্থান নিয়েছেন।
এমন সময়ে ট্রেনের সামনের দিকে রেলওয়ে পুলিশ সদস্যরা অনবরত বাঁশি বাজাতে শুরু করেন। মাইকেও কিছু একটা ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু প্রচণ্ড ভিড় আর মানুষের কোলাহলে সেই শব্দ অস্ফুট রয়ে যায়। সামনে এগিয়ে ছাদের দিকে তাকাতেই দেখা যায় শতাধিক মানুষের কোমর থেকে হাঁটুর অংশ। ট্রেনের ছাদ ও প্ল্যাটফর্মের ছাদের এ দুইয়ের মাঝে থাকা ফাঁকা অংশটুকুতে একজন মানুষের ওই টুকুই দেখা যাচ্ছিল। দেখা যায়, ছাদে থাকা বেশির ভাগ মানুষ বাঁশির শব্দ আর মাইকে হুঁশিয়ারি শুনে তাঁরা এক বগির ছাদ থেকে অন্য বগির ছাদের দিকে সরে যাচ্ছিলেন, কিন্তু কেউ নামছিলেন না। অপেক্ষা করছিলেন ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার।
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়ছেন মানুষ। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, ঢাকা, ২৯ মার্চ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কমল প র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ