মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পদ্মা সেতুতে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে গতকাল শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত  ৪ কোটি ২৫ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ টাকার টোল আদায় হয়েছে।

শনিবার (২৯ মার্চ) সকালে পদ্মা সেতু সাইড অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়িদ এতথ্য জানান। 

প্রকৌশলী আবু সায়িদ জানান, পদ্মা সেতুতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় শুক্রবার টোল আদায় বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে গতকাল শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত এই সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ২৫ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ টাকা। 

আরো পড়ুন:

উত্তরে গাড়ির চাপ বাড়লেও নেই যানজট, মহাসড়কে সেনাবাহিনী

দৌলত‌দিয়ায় যা‌ত্রী ও যানবাহ‌নের চাপ বাড়‌লেও নেই ভোগা‌ন্তি

এসময় মাওয়া প্রান্ত হয়ে পদ্মা সেতু পারি দিয়েছে ২৬ হাজার ৫৭টি যানবাহন। জাজিরা প্রান্ত দিয়ে পারি দিয়েছে ১৩ হাজার ৫৮০টি যানবাহন। উভয় প্রান্তে চলাচল করেছে ৩৯ হাজার ৬৩৭টি যানবাহন। যার মধ্যে মোটরসাইকেল ছিল ৯ হাজার ৮৫২টি। গত কয়েকদিনের ঈদ যাত্রায় মোটরসাইকেল পারাপারের সংখ্যা শুক্রবারই ছিল সর্বোচ্চ।

তিনি আরো জানান, টানা ৯ দিনের সরকারি ছুটি শুরু হয় শুক্রবার থেকে। ঈদের ছুটিতে শুক্রবার ভোর থেকে দেশের দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশপথ হিসেবে খ্যাত ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দূর পাল্লার যানবাহনের চাপ বাড়ে। শনিবার ভোর থেকে মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ কমে এসেছে। 

স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে যাত্রীবাহী বাসের পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলে বাড়িতে যাচ্ছেন দক্ষিণবঙ্গের মানুষ। তবে আধুনিক এই মহাসড়কের কোথাও কোনো যানজটের বিড়ম্বনা নেই।

মাওয়া ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) জিয়া বলেন, “ছুটির দ্বিতীয় দিনে শনিবার (২৯ মার্চ) ভোর থেকেই পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের ঢল নামলেও তা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এসেছে। নির্বিঘ্নে যাতায়াত করছে সব যানবাহন।” 

তিনি আরো বলেন, “ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের ৭টি বুথে আদায় করা হচ্ছে যানবাহনের টোল। মোটরসাইকেলের জন্য রয়েছে আলাদাভাবে টোল নেওয়ার ব্যবস্থা। বর্তমানে তিনটি বুথ দিয়ে মোটরসাইকেল থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে।”  

হাঁসাড়া হাইওয়ে পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, “শনিবার ভোর থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি চলাচল বেড়েছে। পদ্মা সেতু টোল প্লাজা এলাকায় মোটরসাইকেলসহ অন্য যানবহনের কোনো জট নেই। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোষ্ট বসিয়ে দুর্ঘটনা রোধে যানবাহনের অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।” 

মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকার বলেন, “ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রীদের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সড়কে নিরাপত্তার স্বার্থে দিনে ও রাতে হাইওয়েসহ চার শতাধিক পুলিশ কাজ করবে ঈদের আগে ও পরে।”

ঢাকা/রতন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন পদ ম স ত শ ক রব র র ত ১২ট

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ