Samakal:
2025-11-03@03:23:05 GMT

জামালের ভবিষ্যৎ কী?

Published: 29th, March 2025 GMT

জামালের ভবিষ্যৎ কী?

ম্যাচের আগের দিন ভারতের বিপক্ষে ছয় বছর আগে করা গোলের ভিডিও নিজের ভেরিফায়েড পেজে শেয়ার করেছিলেন। তাঁর নেওয়া ফ্রি কিক থেকে সাদ উদ্দিনের করা সেই গোলের ভিডিও এবং সুনীল ছেত্রির সঙ্গে লড়াইয়ের দৃশ্যগুলো সামাজিক মাধ্যমে দিয়েছিলেন জামাল ভূঁইয়া। এমনকি শিলংয়ের পাঁচতারকা হোটেলে ২৪ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে ভারতকে রীতিমতো হুমকি দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। 

কিন্তু ২৫ মার্চ জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতের বিপক্ষে শুরুর একাদশে নেই ডেনমার্ক প্রবাসী এ ফুটবলার। সবাই আশায় ছিলেন হয়তো বদলি হিসেবে মাঠে দেখা যাবে তাঁকে। কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার পাঁচ বদলিতেও ছিলেন না জামাল ভূঁইয়া। ম্যাচ নিয়ে কথার ফুলঝুরি ফোটানো অধিনায়ক জামাল ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ছিলেন না। খেলা শেষে বিষণ্ন মনে মাঠ ত্যাগ করা জামাল কারও সঙ্গে কথা বলেননি। তাঁর হৃদয় যে ভেঙেছে, সেটা অনুমেয়। ভারত ম্যাচে সুযোগ না পাওয়ায় বাংলাদেশ দলে জামালের ভবিষ্যৎ নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। লাল-সবুজের জার্সিতে কি সমাপ্তির পথে জামাল অধ্যায়?

২০১৩ সালে প্রথম প্রবাসী হিসেবে বাংলাদেশ দলে অভিষেক জামাল ভূঁইয়ার। সময়ের সঙ্গে বাংলাদেশের ফুটবলের অন্যতম তারকা বনে যান এ মিডফিল্ডার। এক সময় তাঁর হাতে ওঠে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড। কাগজে কলমে এখনও জাতীয় দলের কাপ্তান তিনি। কিন্তু কয়েক বছর ধরে জামালের পারফরম্যান্সে ভাটার টান। যে কারণে শেষ কয়েকটি ম্যাচে ৫০ কিংবা ৬০ মিনিট পর্যন্ত খেলতে দেখা গেছে তাঁকে। গত বছর থেকে এই পর্যন্ত ফিফা প্রীতি ম্যাচ এবং বিশ্বকাপ বাছাইসহ আটটি ম্যাচ খেলেছেন জামাল। যেখানে পাঁচ ম্যাচে শুরুর একাদশে ছিলেন না ৩৪ বছর বয়সী এ প্রবাসী। 

জাতীয় দলে এক যুগের ক্যারিয়ারে ৮৭টি ম্যাচ খেলেছেন জামাল। শুরু একাদশে ছিলেন ৭৮ বার। বদলি নেমেছেন চারবার এবং বাকি পাঁচ ম্যাচে ছিলেন বেঞ্চে। সর্বশেষ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে একাদশে তো দূরের কথা, কোচ তাঁকে দেননি প্লেয়িং টাইমও। সংবাদ সম্মেলন থেকে সব জায়গায় কথা বলা জামালকে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে সুযোগ না দেওয়া প্রসঙ্গে স্প্যানিশ কোচের যুক্তি ছিল এমন, ‘ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলোয়াড়রা বেঞ্চে ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে খেলার পরিক্রমায় ম্যাচটি যেভাবে অগ্রসর হচ্ছিল, তাতে দৈহিক শক্তি বিবেচনায় রানাকে ব্যবহার করা হয়েছে। জামাল আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার।’

ক্যাবরেরার অধীনে দেড় বছর ধরে জামাল হয় একাদশে অনিয়মিত কিংবা এক অর্ধ পরে উঠিয়ে নেওয়া হয়। জামাল মাঠে না থাকলে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ওঠে তপু বর্মণের হাতে। ভারত ম্যাচে তপু চোটে পড়ায় নেতৃত্বের ভার উঠেছিল রহমত মিয়ার কাঁধে। কাগজে কলমে অধিনায়ক জামাল যদি পুরো নব্বই মিনিট খেলতে না পারেন, তাহলে তাঁর হাতে আর্মব্যান্ড কেন? এই প্রশ্ন ওঠায় ফুটবলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকেরই অভিমত এভাবে জামালকে নেতা হিসেবে রাখা উচিত নয়। আবার ভারতের বিপক্ষে জামালকে উপেক্ষিত করে চন্দন রয়ের মতো অনভিজ্ঞ মিডফিল্ডারকে বদলি হিসেবে নামানোয় সমালোচনা হয়েছে ক্যাবরেরার। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কাপ্তান যখন কোচের পরিকল্পনা নেই, তখনই প্রশ্ন উঠেছে, জামাল অধ্যায়ের কি সমাপ্তি?

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ল দ শ ফ টবল ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য

দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।

আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।

লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।

আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা।

কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ