দেশের ঈদ মানেই এক অন্যরকম আবেগ, ভালোবাসা আর উৎসবের আমেজ। পরিবার-পরিজনের সাথে আনন্দঘন মুহূর্ত, সবার একসাথে ঈদের নামাজ আদায়, আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়ানো- সব মিলিয়ে এক অনন্য অনুভূতি। কিন্তু প্রবাসীদের ঈদ কিছুটা ভিন্ন। এখানে নেই সেই চিরচেনা ঈদের আমেজ, নেই প্রিয়জনদের সান্নিধ্য। 

প্রবাসজীবনে ঈদের দিন শুরু হয় এক ধরনের একাকীত্বের মধ্য দিয়ে। অনেকেরই ঈদের দিন কর্মব্যস্ততার মধ্যে কেটে যায়। কাজের দায়িত্বের কারণে ঈদের সকালেই যেতে হয় ডিউটিতে। তবে কাজের ফাঁকে সহকর্মীদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় হয়, প্রিয়জনদের সাথে ফোনে বা ভিডিও কলে কথা বলা হয়। এতে কিছুটা হলেও পরিবারের কাছে থাকার অনুভূতি আসে। কর্মস্থলে থাকা প্রবাসীরা একে অপরের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার চেষ্টা করেন। কিছু জায়গায় কর্মস্থলের পক্ষ থেকেও ঈদের বিশেষ আয়োজন করা হয়, যাতে সবাই মিলেমিশে উৎসবের আমেজ উপভোগ করতে পারেন।

অন্যদিকে, যাদের ছুটি থাকে, তারা হয়তো সারাদিন ঘরেই কাটান। কয়েকজন বন্ধু বা রুমমেট একসাথে বসে রান্নাবান্না করেন, ভালো কিছু খাবার তৈরি করেন। এরপর পরিবারের সাথে কথা বলে মনকে হালকা করেন। কেউ কেউ ঈদের নামাজ পড়ে কাছের বাংলাদেশি কমিউনিটির সাথে সময় কাটান। বিকেলের দিকে অনেকে কাছের পার্ক বা সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে যান, যেখানে অন্যান্য প্রবাসীরাও একত্রিত হয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন।

আত্মীয়-স্বজন ছাড়া ঈদ আসলে সম্পূর্ণ আনন্দদায়ক হয়ে ওঠে না। দেশের ঈদ যেখানে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব আর আত্মীয়দের সাথে আনন্দ-উৎসবে কাটে, সেখানে প্রবাসীদের ঈদ কিছুটা নিঃসঙ্গতার ছোঁয়া বয়ে আনে। ফোনের পর্দায় ভেসে ওঠা পরিবারের হাসিমুখ দেখে কিছুটা স্বস্তি পেলেও, কাছাকাছি থাকতে না পারার কষ্টটা থেকেই যায়। 

অনেক সময় দেখা যায়, প্রবাসীরা ঈদের আগে ছুটি নেওয়ার আশায় থাকেন, যেন ঈদ দেশে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে উদযাপন করতে পারেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিভিন্ন কারণে সেই স্বপ্ন পূরণ হয় না। কোম্পানির ভিসা জটিলতা, কাজের চাপ, ছুটির অনুমোদন না পাওয়া, কিংবা টিকিটের উচ্চমূল্য- এসব কারণে অনেকেরই দেশে ফেরা সম্ভব হয় না। ফলে তারা ঈদের সেই আনন্দ উপভোগ করতে পারেন না এবং এক ধরনের মানসিক কষ্ট নিয়েই ঈদ উদযাপন করতে হয়।

তবুও, প্রবাসীরা চেষ্টা করেন নিজেদের মতো করে ঈদের আনন্দ খুঁজে নিতে। দূরদেশে থেকেও সবাই চেষ্টা করেন দেশের ঈদের আবহ যেন কিছুটা হলেও ফিরে আসে সবার মাঝে। তাই ঈদের সকালে নাস্তা তৈরি করা হয়ে থাকে, ঠিক যেমনটা দেশে করা হতো। কয়েকজন মিলে পরিকল্পনা করেন, কে কোন খাবার তৈরি করবেন। কারও দায়িত্ব সেমাই রান্না করা, কেউ বানান পোলাও-মাংস। কেউ আবার পেঁয়াজ, রসুন, মরিচসহ যাবতীয় কাটাকাটির কাজ করেন, কেউ মাংস প্রস্তুত করেন, আর ১-২ জন থাকেন রান্নার দায়িত্বে। পরে সবাই একসাথে খাওয়া-দাওয়া করেন। 

দেশে পরিবারের সঙ্গে বসে খাওয়ার মতো আনন্দ না পেলেও, একে অপরের মাঝে আপনজনের ছোঁয়া খুঁজে পান। আমাদের এই ক্ষুদ্র আয়োজন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমরা একা নই। দূরদেশে থেকেও আমরা একে অপরের পাশে আছি, ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছি।

এইভাবেই প্রবাসের ঈদ হয়তো একটু ভিন্ন, কিন্তু ভালোবাসা আর ঐক্যের মাঝে দেশের ছোঁয়া ঠিকই অনুভব করা যায়। ঈদের দিনটি শেষ হয় একরাশ নস্টালজিয়া আর আগামী ঈদে পরিবারের সাথে থাকার আশা নিয়ে।

ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক!

ঢাকা/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ র আনন দ পর ব র র স প রব স র

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব
  • কারও কোনো অপরাধ নাই
  • বিশ্বকর্মা পূজা: গাঙ্গেয় শিল্পের উৎসব
  • আজ থেকে বুসান উৎসব, নানাভাবে রয়েছে বাংলাদেশ
  • ‎সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব : ডিসি
  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • ঘুম থেকে অনন্ত ঘুমে অস্কারজয়ী রবার্ট রেডফোর্ড
  • ২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে ভোলার বৈষা দধি
  • শেষ হলো সপ্তম যোসেফাইট ম্যাথ ম্যানিয়া ২০২৫