জোরপূর্বক গুমের শিকার ভুক্তভোগী পরিবারের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’–এর সমন্বয়কারী সানজিদা ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৫ বছর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশজুড়ে একটি গুম ও খুনের সরকার কায়েম করেছিল। শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়া এলাকায় ইফতারসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথাগুলো বলেন।

তেজগাঁও থানার ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে গুমের শিকার ওই ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের তেজগাঁও থানার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ এম আদনান চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাউসার আহমেদ স্মারণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সানজিদা ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেন ফ্যাসিস্ট হাসিনা। রাতের আঁধারে ভোট চুরির মাধ্যমে বারবার অবৈধভাবে ক্ষমতার মসনদে আসীন হন শেখ হাসিনা। জনগণের ভোট ছাড়াই ক্ষমতা দখল করে জনকল্যাণমুখী কোনো কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেনি তাঁর সরকার।

ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা আনোয়ারুজ্জামান বলেন, ‘গত ১৫ বছরে তেজগাঁওয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সবচেয়ে বেশি গুম ও খুনের শিকার হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবেও গত ১৫ বছরে এক দিনও ঘরে ঘুমাতে পারিনি। জীবনের অধিকাংশ সময় কারাগারে কাটাতে হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাশেদ। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো.

মঞ্জুর হোসেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মায়ের ডাকের আফরোজা ইসলাম, তেজগাঁও থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মিরাজ উদ্দিন হায়দার, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আসাদ, ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, সদ্য কারামুক্ত নেতা কবির হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা শফিকুল ইসলামসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব চ ছ স বক ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিবন্ধী ছেলেকে সেতু থেকে ফেলে দেন মা: পুলিশ

মাদারীপুরের শিবচরে ১৫ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলেকে সেতু থেকে এক মা নদে ফেলে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নে আড়িয়াল খাঁ নদীর হাজী শরিয়তউল্লাহ সেতুতে এ ঘটনা ঘটে।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। ওই নারী ভিক্ষাবৃত্তি করেন এবং কিছুটা ভারসাম্যহীন। ১৫ বছর বয়সী ছেলেটি জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, নিজের ছেলেকে সেতু থেকে নদীতে ফেলে দেন ওই নারী। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নিখোঁজ ছেলেটিকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

শিবচর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা লিয়াকত হোসেন আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সকাল থেকে নদীতে অভিযান চালানো শুরু করেছেন। সঙ্গে ডুবুরি দলও আছে। ছেলেটির সন্ধানে আশপাশের এলাকায়ও খোঁজ করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন সহায়তা করছেন। তবে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই নারীর নাম রিজিয়া বেগম। তিনি উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের শিকদার হাট এলাকার মৃত আজগর আলীর স্ত্রী। স্বামীর মৃত্যুর পর ভিক্ষাবৃত্তিতে তাঁর সংসার চলে। তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলে আছে। ছেলে নাসিরউদ্দিন জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। সে চোখে দেখে না, চলাফেরাও করতে পারে না।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. আরিফ বলেন, আসরের নামাজের পর থেকে ওই নারীকে সেতুর ওপর বসে থাকতে দেখেন। সঙ্গে ৮-৯ বছর বয়সী একটি মেয়ে ও একটি ছেলে ছিল। ছেলেটি কাঁদছিল। নারীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেছিলেন, ‘খিদার জন্য কাঁদছে।’

নূর আলম নামে সন্ন্যাসীর চর চৌরাস্তা এলাকার এক আইসক্রিম বিক্রেতা বলেন, তিনি আইসক্রিম বিক্রি করে বাড়িতে ফিরছিলেন। দূর থেকে দেখেন, এক নারী ছেলেটিকে ফেলে দিলেন। আরও অনেকে দেখেছেন দাবি করে তিনি বলেন, এক অটোরিকশাচালক দৌড়ে যেতে যেতে ওই নারী কাজটি করেন।

ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন নারীকে ঘিরে ধরে ছেলেটিকে ফেলে দেওয়ার কারণ জানতে চান। এ সময়ের দুটি ভিডিও প্রথম আলোর হাতে এসেছে। ভিডিওতে ভরণপোষণ করতে না পেরে প্রতিবন্ধী ছেলেকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন বলে জানান ওই নারী। কিছুক্ষণ পর পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে হেফাজতে নেয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ