আ.লীগ নেতাদের চাঁদায় এনসিপির ব্যানারে ইফতার
Published: 30th, March 2025 GMT
খুলনার কয়রায় আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা চাঁদায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ব্যানারে ইফতার মাহফিল আয়োজনের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ের শিক্ষার্থী সমাজ ও সচেতন মহলে চলছে সমালোচনা।
কয়রা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী ও তাঁর অনুসারী আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন একই কমিটির সদস্য সচিব এস কে গালিবসহ একাধিক নেতাকর্মী।
শুক্রবার কয়রা উপজেলা পরিষদের মাঠে বিশাল প্যান্ডেল করে কয়রা উপজেলা নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ব্যানারে ইফতার মাহফিল করা হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী। ওই ইফতার মাহফিলে স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব গালিব বলেন, কয়রায় এখন পর্যন্ত এনসিপির কমিটি হয়নি। এ জন্য গ্রহণযোগ্য ও ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের সংগঠিত করার কাজ চলছে। দলের কমিটিই হয়নি অথচ তার ব্যানারে ইফতার আয়োজন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এতে উপস্থিত থাকার কথা উল্লেখ করে ছাপানো দাওয়াতপত্র দিয়ে চাঁদা তুলেছেন গোলাম রব্বানী ও আব্দুর রউফ। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী এবং সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে কয়রা উপজেলার আমাদী ইউপি চেয়ারম্যান, যুবলীগ নেতা জিয়াউর রহমান জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক রব্বানী ও তাঁর অনুসারী আব্দুর রউফ এনসিপির ইফতার আয়োজনের কথা বলে তাঁর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলার মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, গোলাম রব্বানী, রউফসহ কয়েকজন এসে ইফতার অনুষ্ঠানের জন্য ৫০ হাজার টাকা দাবি করলে তিনি টাকা দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামীপন্থি আরেক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ইফতার মাহফিলে চাঁদা না দিলে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। একপর্যায়ে বাধ্য হয়েই তিনি চাঁদা দিয়েছেন।
ইফতার মাহফিলের দাওয়াতপত্রে আয়োজকদের কারও নাম না থাকলেও যোগাযোগের জন্য দুটি ফোন নাম্বার দেওয়া আছে; যার একটিতে কল করলে কথা হয় গোলাম রব্বানীর সঙ্গে। অপর নাম্বারটি আব্দুর রউফের। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী বলেন, হিতাকাঙ্ক্ষী ও নিজেদের অর্থে ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। তাদের ভালো কাজ দেখে নিজ দলের অনেকেরই হিংসা হচ্ছে। তারাই এসব মিথ্যাচার করছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়রা উপজেলার মুখ্য সংগঠক ইমদাদুল হক বলেন, ৫ আগস্টের আগে ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে থেকেছেন তারা। কৌশলে গোলাম রব্বানী আহ্বায়কের পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। ইফতার আয়োজনে খরচের উৎস সম্পর্ক জানতে চাইলে সে নিজ মুখে চাঁদা আদায়ের কথা স্বীকার করেছেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) খুলনার সংগঠক হামীম আহম্মেদ রাহাত বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির লোকজনই এনসিপির কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত এনসিপির খুলনা জেলা কমিটি গঠন হয়নি, উপজেলা কমিটির তো প্রশ্নই আসে না। কয়রায় এনসিপির সাইনবোর্ড ও নাম ভাঙিয়ে আওয়ামীপন্থিদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প আওয় ম ল গ ইফত র গ ল ম রব ব ন এনস প র আওয় ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।
মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।
তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।
এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।