যমুনা সেতু এলাকায় রাতে যানজট থাকলেও এখন নির্বিঘ্নে চলছে যানবাহন
Published: 30th, March 2025 GMT
যমুনা সেতুর ওপর গাড়ি বিকল ও দুর্ঘটনার কারণে গতকাল শনিবার রাতে সেতুর পূর্ব প্রান্তে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সেতুর ঢাকাগামী লেন বন্ধ রেখে উভয় লেন দিয়ে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন পার করা হয়। এতে আজ রোববার সকালে যানজটের নিরসন হয়।
যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। রাতে সেতুর ওপর তিনটি গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে এবং দুটি গাড়ি বিকল হয়। এ কারণে গভীর রাত থেকে যানজটের সৃষ্টি হয়। এই যানজট ভোরে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ হয়। পরে সেতুর ঢাকাগামী যানবাহন সিরাজগঞ্জে আটকে দেওয়া হয়। উভয় লেন দিয়ে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন পার করানো হয়। এতে সকাল নয়টার দিকে যানজট নিরসন হয়। তার পর থেকে মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ থাকলেও কোথাও যানজট নেই।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল বলেন, ঈদযাত্রায় যমুনা সেতুর দুই প্রান্তে ৯টি করে মোট ১৮ বুথে টোল আদায় করা হচ্ছে। এর মধ্যে দুই পাশে দুটি বুথ দিয়ে মোটরসাইকেলের জন্য পৃথক বুথে টোল নেওয়া হচ্ছে।
যমুনা সেতু পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ রুবেল বলেন, শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে অন্তত ১২ বার সেতুর টোল আদায় বন্ধ ছিল।
যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ হাজার ৪৭৮টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ২১ লাখ ৬৪ হাজার ৬০০ টাকা।
এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ২৯ হাজার ২৮৮টি যানবাহন পার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯০ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫০ টাকা। অপর দিকে ঢাকাগামী ১৬ হাজার ১৯০টি যানবাহন পার হয়েছে। এতে টোল আদায় ১ কোটি ৩১ লাখ ১৮ হাজার ৮৫০ টাকা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য নজট
এছাড়াও পড়ুন:
২২ বছর পর চাকা ঘুরছে রাজশাহী টেক্সটাইলের
দীর্ঘ ২২ বছর পর আবার চাকা ঘুরতে যাচ্ছে রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের। এরই মধ্যে কারখানাটিতে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। তাতে কর্মসংস্থান হয়েছে এক হাজার জনের। সরকারি মালিকানাধীন বস্ত্রকলটি সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারত্বে (পিপিপি) আবারও চালু করতে যাচ্ছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। আজ সোমবার প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কারখানাটি পরীক্ষামূলক চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পিপিপিতে নেওয়ার পর রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের নাম বদলে রাখা হয়েছে বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল। পরীক্ষামূলক উৎপাদন শেষে শিগগিরই কারখানাটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হবে। এটি পুরোদমে চালু হলে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। আজ দুপুরে রাজশাহী নগরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রাণ-আরএফএলের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল, গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মাল্টি লাইন ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান, গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) তৌহিদুজ্জামান ও বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক শরীফ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, রাজশাহীতে অবস্থিত সরকারি এই টেক্সটাইল মিলটি ২২ বছর ধরে বন্ধ ছিল। সম্প্রতি সরকারের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে এটি পিপিপিতে চালুর উদ্যোগ নেয় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। প্রায় ২৬ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত এই কারখানাকে প্রাণ-আরএফএল উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পরিবেশবান্ধব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে। কারখানাটিতে তৈরি হবে শতভাগ রপ্তানিমুখী পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে থাকবে বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, জুতা ও তৈরি পোশাক। দুই বছরের মধ্যে কারখানাটিতে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরিতে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত বছরের অক্টোবরে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিসেম্বরে কারখানার দায়িত্ব বুঝে নেয় গ্রুপটি। এরপর তিন মাসের মাথায় কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। দুই বছরের মধ্যে কারখানাটি পুরোদমে চালু হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কামরুজ্জামান কামাল বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য ঢাকাকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হয়ে তারা উত্তরবঙ্গে এই বৃহৎ শিল্প প্রকল্প শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে রাজশাহীর হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন এবং স্থানীয় অর্থনীতি গতিশীল হবে।
আনিসুর রহমান বলেন, কারখানায় বর্তমানে সীমিত পরিসরে জুতা ও ব্যাগ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাতে রাজশাহীর প্রায় এক হাজার লোক কাজের সুযোগ পেয়েছেন। স্থানীয় কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এখানে একটি ‘স্কিলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ স্থাপন করা হবে। কারখানায় উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি হবে।
রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসে কারখানা চালু করার প্রক্রিয়ায় কয়েক শ গাছ ও পুকুর ভরাটের বিষয়ে রাজশাহীতে সমালোচনা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনও করেছে। এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে জানতে চাইলে কামরুজ্জামান কামাল বলেন, গাছ কাটা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। তাঁরা সঠিক উপায় অবলম্বন করেই এগুলো করেছেন। বন বিভাগকে চিঠি দিয়েছেন। তার বিপরীতে তিন হাজার নতুন গাছ লাগানো হয়েছে।