ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়িরচাপ থাকলেও নেই যানজট
Published: 30th, March 2025 GMT
দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এখন অন্য রকম চিত্র। রোববার সকাল থেকে মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে যানবাহনের কিছুটা চাপ থাকলেও দেখা মেলেনি যানজটের। ব্যক্তিগত যানবাহন বেশি চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে যাত্রীবাহী বাসেও ছিল না যাত্রীর চাপ। পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করছে কম।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের ঈদ যাত্রায় আগে সরকারি বন্ধ থাকায় অধিকাংশ লোকজন ২/৩ দিন আগ থেকে বাড়ি ফেরায় বড় ধরনের যানজট ছিল না।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, কুমিল্লা রিজিয়ন অংশে ২৬টি পয়েন্ট যানজট প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার ১০২ কিলোমিটার অংশে ছিল ১২টি। কিন্তু এবার এসব অংশে কোনো যানজট দেখা যায়নি। রোববার মহাসড়কের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, দাউদকান্দি টোলপ্লাজা, ইলিয়টগঞ্জ বাজার, নিমসার বাজার, চান্দিনা বাজার ও চৌদ্দগ্রাম এলাকায় খবর নিয়ে জানা গেছে, কোথাও যানজট নেই।
ঢাকা থেকে আজ সকালে রওনা হয়ে মিয়ামি পরিবহনের একটি গাড়ি কুমিল্লায় আসে প্রায় ২ঘণ্টা ১০ মিনিট পর। ওই বাসের যাত্রী লাকি আক্তার, বোরহান উদ্দিন বলেন, পুরো রাস্তায় যানজট ছিল না। কিছু এলাকা ফাঁকা। গাড়িতে কিছু আসনও খালি ছিল।
একই বাসের যাত্রী মো.
কুমিল্লা-ঢাকা রোডে চলাচলকারী এশিয়া এয়ারকনের চালক মো. শাহজালাল বলেন, আগে এত দ্রুত আসা যেত না। ইফতার-সেহরি দুইটাই বাসে বসে করতে হতো। আগের রাতে রওয়ানা দিয়ে সময় মতো বাড়িতে গিয়ে ঈদের নামাজও কেউ পড়তে পারত না। ৮ বছর গাড়ি চালাই। এমন খালি সড়ক খুব কমে দেখেছি।
কুমিল্লা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. তাজুল ইসলাম বলেন, পরিবহনের ভাষায় ঈদের আগের দিন আমরা চাঁদরাত বলি। এ দিন বাস যাত্রীদের সামাল দেওয়া কঠিন হয়, যাত্রী থাকে ঠাসা। কিন্তু গত দুই দিনে এমন চিত্র তেমন ছিল না। সড়কে নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সকলের চেষ্টায় লোকজন ভোগান্তি ছাড়া নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারছে।
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ওসি নুরুল আফসার সমকালকে বলেন, টোল প্লাজা নিয়ে বড় টেনশনে ছিলাম। কারণ উভয়মুখী লেনে এখানে গাড়ির জটলা হলে বড় ধরনের যানজট হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু টোল প্লাজায় আমাদের অধিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। এতে আর যানজট দেখা যায়নি।
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম বলেন, গত কয়েকরাতে ঘুমাতে পারিনি। হাইওয়ের সকল পুলিশ সদস্য ঘাম ঝড়ানো শ্রম দিচ্ছে। মহাসড়কে কোনো যানজট নেই।
তিনি আরও বলে, আমাদের ৮ শতাধিক হাইওয়ে পুলিশ ছাড়াও সারা বাংলাদেশে আমরাই প্রথম মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণে ২৩৮ রোভার সদস্যকে অস্থায়ীভাবে কাজে লাগাচ্ছি। তাদের ট্রেনিং করিয়েছি। তারা মহাসড়কের কাজের দায়িত্বে আছে। এছাড়াও সেনাবাহিনী, জেলা পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য নজট পর বহন হ ইওয় য নজট
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?