প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরছে মানুষ
Published: 3rd, April 2025 GMT
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে রাজধানী ছেড়েছিলেন লাখো মানুষ। দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যাচ্ছে ঈদের ছুটি। এখন জীবিকার তাগিদে রাজধানীতে ফিরছেন কর্মজীবীরা। ঈদের ছুটি শেষে শুরু হচ্ছে কর্মব্যস্ততা।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সকাল থেকেই গাবতলী, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদসহ রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে ঢাকায় ফেরা মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
বেসরকারি চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রাজধানীতে ফিরছেন। ঢাকায় ফিরতে তেমন কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা।
বাসমালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার (২ এপ্রিল) সকাল থেকেই রাজধানীতে ফিরছেন ঈদ করতে গ্রামে যাওয়া মানুষ। আগামী কয়েক দিন এ ধারা অব্যাহত থাকবে। সরকারি চাকরিজীবীদের ছুটি বেশি হওয়ায় তারা ৫ এপ্রিল থেকে ঢাকায় ফিরবেন।
গুলিস্তানে কথা হয় গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে গিয়েছিলাম। প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। আজ (বৃহস্পতিবার) আমার অফিস খুলেছে। তাই, সকাল ৬টায় মাদারীপুর থেকে ঢাকায় চলে আসলাম। গত ১০ বছরের মধ্যে এ বছর ঈদযাত্রায় মহাসড়কে কোনো যানজটে পড়তে হয়নি। তবে, বাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ২০০ টাকা বেশি নিয়েছে।
চন্দ্রা পরিবহনের সুপারভাইজার কালাম হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, যারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি বা ব্যবসা করেন, তারা আজ চলে এসেছেন। যারা সরকারি চাকরি করেন, তারা ৫ এপ্রিল আসবেন। আসার সময় রাস্তায় কোনো যানজট হয়নি। খুব সুন্দরভাবে চলে আসতে পেরেছি।
ঈদে সরকারি ছুটি ৯ দিন হওয়ায় সরকারি চাকরিজীবীরা এখনই ঢাকায় ফিরছেন না। তাই, রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ও কম।
ঢাকা/এএএম/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।