প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে রাজধানী ছেড়েছিলেন লাখো মানুষ। দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যাচ্ছে ঈদের ছুটি। এখন জীবিকার তাগিদে রাজধানীতে ফিরছেন কর্মজীবীরা। ঈদের ছুটি শেষে শুরু হচ্ছে কর্মব্যস্ততা।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সকাল থেকেই গাবতলী, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদসহ রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে ঢাকায় ফেরা মানুষের ভিড় দেখা গেছে।

বেসরকারি চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রাজধানীতে ফিরছেন। ঢাকায় ফিরতে তেমন কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা।

বাসমালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার (২ এপ্রিল) সকাল থেকেই রাজধানীতে ফিরছেন ঈদ করতে গ্রামে যাওয়া মানুষ। আগামী কয়েক দিন এ ধারা অব্যাহত থাকবে। সরকারি চাকরিজীবীদের ছুটি বেশি হওয়ায় তারা ৫ এপ্রিল থেকে ঢাকায় ফিরবেন।

গুলিস্তানে কথা হয় গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে গিয়েছিলাম। প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। আজ (বৃহস্পতিবার) আমার অফিস খুলেছে। তাই, সকাল ৬টায় মাদারীপুর থেকে ঢাকায় চলে আসলাম। গত ১০ বছরের মধ্যে এ বছর ঈদযাত্রায় মহাসড়কে কোনো যানজটে পড়তে হয়নি।  তবে, বাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ২০০ টাকা বেশি নিয়েছে।

চন্দ্রা পরিবহনের সুপারভাইজার কালাম হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, যারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি বা ব্যবসা করেন, তারা আজ চলে এসেছেন। যারা সরকারি চাকরি করেন, তারা ৫ এপ্রিল আসবেন। আসার সময় রাস্তায় কোনো যানজট হয়নি। খুব সুন্দরভাবে চলে আসতে পেরেছি।

ঈদে সরকারি ছুটি ৯ দিন হওয়ায় সরকারি চাকরিজীবীরা এখনই ঢাকায় ফিরছেন না। তাই, রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ও কম।

ঢাকা/এএএম/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ