নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় এক খামারির ফাঁদে একটি মেছোবাঘ ধরা পড়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার পাচুড়া গ্রামের শেখ জামালের হাঁসের খামার থেকে মেছোবাঘটি আটক করা হয়। মেছোবাঘটির উচ্চতা প্রায় দুই ফুট এবং লম্বায় তিন ফুট। সারা গায়ে ডোরাকাটা দাগ। গায়ের রং ধূসর। এটি দেখতে ভিড় করেছেন স্থানীয় লোকজন।

কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, একটি হাঁসের খামার থেকে মেছোবাঘ আটকের খবর পেয়েছেন। বনজঙ্গলে হয়তো খাবার না পেয়ে মেছোবাঘটি লোকালয়ে চলে এসেছে। এটি অবমুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ, বন বিভাগ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাচুড়া গ্রামের শেখ জামালের খামার থেকে গত দুই মাসের মধ্যে কয়েক দিন পরপর কয়েকটি করে হাঁস কমে যাচ্ছিল। তিনি খামারের বেড়ার চারদিকে জাল দিয়ে রাখেন। এতেও কাজ হয়নি। সম্প্রতি তিনি কলমাকান্দা থেকে লোহার তৈরি ফাঁদসহ একটি খাঁচা বানিয়ে আনেন। খাঁচাটির ভেতর একটি হাঁস রেখে রাতে খামারের পাশে রেখে দেন। ইতিমধ্যে দুটি শেয়াল ওই ফাঁদে আটকা পড়ে। পরে অবশ্য তা ছেড়ে দেওয়া হয়। আজ ভোরে ওই ফাঁদে একটি মেছোবাঘ ধরা পড়ে। খবর পেয়ে সকাল থেকে উৎসুক লোকজন সেটি দেখতে খামারির বাড়িতে এসে ভিড় করেন।

খামারি শেখ জামাল বলেন, ‘গত দুই মাসে রাতের বেলা আমার খামারের অন্তত ২৮টি হাঁস খেয়েছে। আমি ভেবেছিলাম, শিয়াল অথবা বনবিড়াল–জাতীয় কোনো প্রাণী হাঁসগুলো খেয়েছে। পরে ফাঁদে মেছোবাঘ ধরা পড়ে। গ্রামের লোকজন মেছোবাঘটি মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমি হতে দিইনি। মেছোবাঘটি উদ্ধার করে নিয়ে যেতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বন বিভাগের লোকজনকে খবর দেওয়া হয়েছে।

নেত্রকোনা সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক প্রধান ও বন্য প্রাণী গবেষক মো.

নুরুল বাসেত জানান, মেছোবাঘ হাওর, জলাশয় ও জলাভূমির আশপাশের ঝোপজঙ্গল, নির্জন স্থানে আবাস গড়ে। এসব স্থানেই চলাফেরা ও বাচ্চা প্রসব করে। কখনো ধানখেতে, কখনো বাড়ির পরিত্যক্ত ঘরের কোণে আশ্রয় নেয়। জলাশয়ের দুর্বল ও রোগাক্রান্ত মাছ শিকার করে খায়। ধানখেতের জন্য ক্ষতিকর ইঁদুর শিকার করে। ফসল বাঁচায়। কৃষকের উপকার করে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনসহ পরিবেশ বিপর্যয়, ঝোপজঙ্গল উজাড়, জনবসতির সম্প্রসারণের ফলে প্রাণীটির আবাসস্থল সংকুচিত হয়ে পড়েছে। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএন মেছোবাঘকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল কজন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সায়েমের অলরাউন্ড পারফরম‌্যান্সে পাকিস্তানের জয়ে শুরু

জয়ের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকায় শেষ টি-টোয়েন্টি জয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম‌্যাচ সিরিজের প্রথমটিতেও জয় পেয়েছে তারা।

অলরাউন্ড পারফরম‌্যান্সে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক সায়েম আইয়ুব। তার ৩৮ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান লাডারহিলে ৬ উইকেটে ১৭৮ রান করে। জবাব দিতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে ১৬৪ রানের বেশি করতে পারেননি। দারুণ ব‌্যাটিংয়ের পর বোলিংয়ে সায়েম ২০ রানে ২ উইকেট নেন। ১৪ রানের জয়ে সিরিজে ১-০ ব‌্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তান।

টস হেরে ব‌্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান শুরুতে শাহিবজাদা ফারহানের উইকেট হারায়। ১২ বলে ১৪ রান করে আউট হন ডানহাতি ব‌্যাটসম‌্যান। তিনে নেমে ফখর সায়েমকে সঙ্গ দেন। দুজন ৮১ রানের জুটি গড়েন। এ সময়ে ফখর ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ বলে ২৮ রান করেন। বাকি রান আসে সায়েমের ব‌্যাটে।  এ সময়ে তিনি তুলে নেন ক‌্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি। হোল্ডারের বলে এলবিডব্লিউ হলে থেমে যায় তার ইনিংস।

এরপর হাসান নওয়াজের ১৮ বলে ২৪, সালমান আগার ১০ বলে ১১, ফাহিম আশরাফের ৯ বলে ১৫ রানে পাকিস্তান লড়াকু পুঁজি পায়। শেষ দিকে ১ বল খেলার সুযোগ পান হারিস। ছক্কায় উড়িয়ে পাকিস্তানের শেষটা ভালো করেন তিনি।
বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সেরা ছিলেন শামার জোসেফ। ৩০ রানে নেন ৩ উইকেট।

লক্ষ‌্য তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৭২ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর হঠ‌্যাৎ ছন্দপতন। ৫ রান পেতেই ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ওই ধাক্কার পর তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। জনসন চার্লস ও জুয়েল অ‌্যান্ড্রু ৩৫ রানের দুটি ইনিংস খেলেন। শেই হোপ (২),  গুদাকেশ মোটি (০), শেফরন রাদারফোর্ড (১১) ও রস্টন চেজ (৫) দ্রুত আউট হন। শেষ দিকে পরাজয়ের ব‌্যবধান কমান হোল্ডার ও জোসেফ। হোল্ডার ১২ বলে ৪ ছক্কায় ৩০ রান করেন। ১২ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২১ রান করেন জোসেফ ।

পাকিস্তানের বোলারদের মধ‌্যে সেরা ছিলেন হাসান নওয়াজ। ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার। সায়েমের ২ উইকেট বাদে ১টি করে উইকেট পেয়েছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি ও সুফিয়ান মুকিম।
আগামীকাল একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ