লিভারপুল ক্রমেই ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আর্সেনালের সঙ্গেই তাদের পয়েন্টের ব্যবধান ১২। তাই প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষ দুটি স্থান অনেকটা নির্ধারিতই হয়ে গেছে। এখন লড়াই চলছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের যোগ্যতা অর্জন নিয়ে। 

প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ চার দল খেলে ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদার এ টুর্নামেন্টে। ৩০ ম্যাচে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থান প্রায় পাকা করে ফেলেছে নটিংহাম ফরেস্ট। লড়াইটা চলছে মূলত চতুর্থ স্থান নিয়ে। বৃহস্পতিবার রাতে টটেনহামকে ১-০ গোলে হারিয়ে সে লড়াইয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে চেলসি। 

স্টামফোর্ড ব্রিজে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে চেলসির পক্ষে জয়সূচক গোলটি করেন এনজো ফার্নান্দেজ। বাঁ প্রান্ত থেকে কোল পালমারের ক্রসে হেড করে টটেনহামের জালে বল পাঠান এ আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার। এ জয়ে ৩০ ম্যাচে ৫২ পয়েন্ট নিয়ে চারে উঠে এসেছে চেলসি। সমান ম্যাচে তাদের চেয়ে ১ পয়েন্ট পিছিয়ে পঞ্চম স্থানে ম্যানচেস্টার সিটি। 

২৯ ম্যাচে ৫০ পয়েন্ট নিয়ে নিউক্যাসল আছে ষষ্ঠ স্থানে। আগামী ম্যাচে লিস্টার সিটিকে হারাতে পারলে চেলসিকে হটিয়ে চারের দখল নেবে নিউক্যাসল। অ্যাস্টন ভিলা ৪৮ ও ব্রাইটন ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে তাদের পেছনে নিঃশ্বাস ফেলছে। পয়েন্ট টেবিলই বলে দিচ্ছে, লিগের বাকি সময়টা চতুর্থ স্থান নিয়ে জোর লড়াই চলবে। 

তবে চতুর্থ স্থান দখলের লড়াইয়ে আরেকটু হলেই পা ফসকে যাচ্ছিল চেলসির। আর এটা হতে যাচ্ছিল কোচ এনজো মারেস্কার ভুলে। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পার হতেই আক্রমণভাগের দুই সেনানি পালমার ও ফার্নান্দেজকে উঠিয়ে দুই ডিফেন্ডার নামান চেলসি কোচ। তাঁর উদ্দেশ্যটা ছিল পরিষ্কার, গোল হজম না করা। কিন্তু তিনি যখন দেখলেন ১২ মিনিট যোগ করা হয়েছে, তখনই অস্বস্তিতে ভুগতে থাকেন মারেস্কা।

ফরোয়ার্ড ও প্লেমেকারকে তুলে নেওয়ায় খেলা একমুখী হয়ে পড়ে। ম্যাচের পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে নিজের ভুল মেনে নেন চেলসি কোচ, ‘প্রথমার্ধে আমরা যথেষ্ট সুযোগ তৈরি করেও কাজে লাগাতে পারিনি। দ্বিতীয়ার্ধে ওই ভুলের পর.

.. সত্যি বলতে, ভুলটা আমারই। কারণ অতিরিক্ত সময় দেখার আগেই আমি দুটি বদল করে ফেলি। যখন দেখলাম ১২ মিনিট যোগ করা হয়েছে, তখনই মনে হলো একটু আগেভাগেই এমন পরিবর্তন করে ফেলেছি। সৌভাগ্যক্রমে ম্যাচটা জিতেছি বলে স্বস্তি।’  

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ লস

এছাড়াও পড়ুন:

জুভেন্টাস-বরুশিয়ার ৮ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে জয় পায়নি কেউ

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম রাতেই যেন ফুটবলপ্রেমীরা এক অসাধারণ ম্যাচের সাক্ষী হলো। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে তুরিনে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে জুভেন্টাস ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ৪-৪ গোলে ড্র করেছে। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ডর্টমুন্ডের জয় যখন প্রায় নিশ্চিত, ঠিক তখনই জুভেন্টাসের নাটকীয় প্রত্যাবর্তনে সবাই হতবাক হয়ে যায়।

ম্যাচের নায়ক ছিলেন জুভেন্টাসের সেই খেলোয়াড় যাকে ক্লাব এই গ্রীষ্মে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল, দুসান ভ্লাহোভিচ। ২৫ বছর বয়সী এই সার্বিয়ান ফরোয়ার্ড বদলি হিসেবে নেমে যেন ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। দুটি গোল করার পাশাপাশি ইংরেজ ডিফেন্ডার লয়েড কেলির গোলে সহায়তাও তিনিই করেছেন। নির্ধারিত সময়ের পরও যখন ডর্টমুন্ড ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল, সেই অবস্থায় শেষ মুহূর্তে এই অবিশ্বাস্য ড্র নিশ্চিত করেন ভ্লাহোভিচ।

আরো পড়ুন:

এমবাপ্পের জোড়া গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়ালের রোমাঞ্চকর জয়

মেসির গোলে, অ্যাসিস্টে মায়ামির জয়

ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলতে থাকে। ৫২তম মিনিটে ডর্টমুন্ডের করিম আদেয়েমি বাম পায়ের শটে বক্সের বাইরে থেকে প্রথম গোলটি করে দলকে এগিয়ে দেন। এরপরই জুভেন্টাসের তরুণ তারকা কেনান ইলদিজ ডান দিক থেকে নেওয়া এক শটে বল জালে জড়িয়ে সমতা ফেরান। কিন্তু জুভেন্টাস সমর্থকদের এই আনন্দ খুব বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। কারণ, মাত্র এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে আদেয়েমি আবার মাঠে ঝলসে ওঠেন এবং তার পাস থেকে ফেলিক্স এনমেচা বক্সের বাইরে থেকে ডর্টমুন্ডের দ্বিতীয় গোলটি করে বসেন।

ম্যাচের এমন টানটান উত্তেজনার মধ্যেই ৬৭তম মিনিটে ইলদিজ দুর্দান্ত একটি পাস বাড়িয়ে দেন ভ্লাহোভিচের দিকে। ভ্লাহোভিচ ডান পায়ের শটে সহজেই গোল করে স্কোর ২-২ করেন। এরপর আবার ডর্টমুন্ড এগিয়ে যায়। ৭৪তম মিনিটে ইয়ান কৌটো এবং ৮৬তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে বেনসেবাইনি গোল করেন। লয়েড কেলির হ্যান্ডবলের কারণে এই পেনাল্টি পেয়েছিল ডর্টমুন্ড। যখন মনে হচ্ছিল, ডর্টমুন্ড ৪-২ গোলে জয়ী হতে চলেছে, ঠিক তখনই ভ্লাহোভিচ জুভেন্টাসকে বাঁচিয়ে দিলেন।

ম্যাচের ৯০+৩ মিনিটে ডর্টমুন্ডের জয় যখন প্রায় নিশ্চিত, তখন পিয়ের কালুলুর ক্রস থেকে ভ্লাহোভিচ ৯০+৪ মিনিটে সরাসরি শটে গোল করে ব্যবধান ৪-৩ করেন। এবং নাটকীয়তার শেষ এখানেই নয়! ৯৬তম মিনিটে জুভেন্টাসের কেলি গোল করে বসেন এবং ৪-৪ সমতা ফেরান। শেষ পর্যন্ত এই সমতা নিয়েই শেষ হয় ম্যাচ।

দুই দলের এমন গোল উৎসব চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এই নিয়ে সপ্তমবার ঘটল, যেখানে উভয় দলই অন্তত চারটি করে গোল করেছে।

এবারের লিগ-পর্বের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, শীর্ষ আটটি দল সরাসরি শেষ ষোলোতে যাবে এবং পরের ১৬টি দল দুই লেগের প্লে-অফ খেলবে। সেই প্লে-অফ থেকে আরও আটটি দল শেষ ষোলোতে সুযোগ পাবে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুভেন্টাস-বরুশিয়ার ৮ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে জয় পায়নি কেউ