গাজীপুরের কাপাসিয়ায় মঞ্চস্থ হয়েছে নাটক ‘আপন দুলাল’। আজ শনিবার উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারের পাশে উদয়ন কিন্ডারগার্টেন মাঠে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়।

নরসিংদীর একটি নাট্যদলের ১৭ জন‌ ও স্থানীয় ৪ জন অভিনয়শিল্পী নাটকটিতে অভিনয় করেছেন। নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার সময় দর্শকসারিতে ছিলেন কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আজিজুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তামান্না তাসনীম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.

নুরুল আমীন, কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বারিক প্রমুখ।

বেলা সাড়ে ১১টায় ‘আপন দুলাল’ শুরু হয়, শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টার দিকে। মাঝে ছিল এক ঘণ্টার বিরতি। নাটক উপভোগ করতে উপস্থিত ছিলেন বিপুলসংখ্যক দর্শক। মো. আলমগীর শিকদার নামের একজন দর্শক বলেন, ‘আপন দুলাল’ অসাধারণ একটি গীতিনাট্য। নাটকটি তাঁরা ভালো উপভোগ করেছেন।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আজিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, দর্শকেরা আনন্দচিত্তে নাটক উপভোগ করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ওই মাঠে নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল। বিভিন্ন কারণে তা বাতিল করা হয়। পরে এ বিষয়ে শুক্রবার পুলিশ, স্থানীয় মুসল্লি ও এলাকাবাসীর প্রতিনিধি, নাটকটির আয়োজক, বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিসহ গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে আলোচনা হয়। পরে নাটকটি শনিবার মঞ্চস্থ করার সিদ্ধান্ত হয়।

নাটকটি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে মঞ্চস্থ হওয়ায় আয়োজক, দর্শক, কলাকুশলীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান কাপাসিয়ার ইউএনও তামান্না তাসনীম।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপন দ ল ল উপজ ল ন টকট

এছাড়াও পড়ুন:

‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি

ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।

শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।

ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।

ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।

কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলা

শিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।

শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’

শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি