ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার ধেরুয়া ফ্লাইওভারের নিচে ‘আনিশা জলকুটির অ্যান্ড ফটো গ্যালারি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছে। এতে ওই সড়কে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলার ধেরুয়া রেলক্রসিংয়ের পূর্ব পাশে মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে জালাল উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির আনিশা জলকুটির নামে একটি ফাস্টফুডের দোকান রয়েছে। এবার ঈদের আগের দিন থেকে ওই ফাস্টফুডের দোকানের উল্টো পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গায় ফ্লাইওভারের নিচে নির্মিত স্থাপনায় তিনি আরেকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির জন্য লম্বা আকারের ঘর তৈরি করা হয়েছে। চিকন লোহার তৈরি জাল দিয়ে চারপাশে বেড়া দেওয়া হয়েছে। সেখানে দোকান থেকে খাবার খাচ্ছেন ঈদের ছুটিতে
ঘুরতে আসা লোকজন। প্রতিদিন দুপুরের পর
থেকে ভিড় বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর প্রচুর লোকসমাগম হয় এবং রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।
তোফাজ্জল হোসেন নামে একজন রিকশাচালক বলেন, ফাস্টফুডের দোকানকে কেন্দ্র করে লোকজনের ভিড়ে ওই এলাকায় সার্ভিস লেন দিয়ে রিকশা চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ভিড় ঠেলে সেখান দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক মতিউর রহমান জানান, তাদের মহাসড়কের ওপর দিয়ে চলাচল নিষেধ থাকায় সার্ভিস লেন দিয়ে চলাচল করতে হয়। কিন্তু ধেরুয়া এলাকায় রাস্তার দুই পাশে দোকান থাকায় তাদের যাতায়াত করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
ফাস্টফুডের দোকানটির মালিক জালাল উদ্দিন বলেন, ফ্লাইওভারের নিচে তাদের জায়গা ছিল। সরকার সেই জায়গায় রাস্তা করেছে। ফ্লাইওভারের
নিচে খালি জায়গা থাকায় সেখানে তিনি
দোকান করেছেন।
মির্জাপুর সড়ক ও জনপথের উপবিভাগীয় কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী শামীম কবির জানান, ওই স্থানে যিনি ব্যবসা চালাচ্ছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন ফ ল ইওভ র র ব যবস সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
দোয়ার ফজিলত ও আদব
দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)
আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)
মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)
‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)
নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। ‘পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)
দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।
হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]