সাতক্ষীরায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ১২ বিঘা খাসজমি উদ্ধার
Published: 8th, April 2025 GMT
সাতক্ষীরার আলীপুরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রভাবশালীদের দখলে থাকা ১২ বিঘা সরকারি খাসজমি উদ্ধার করেছে জেলা প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাক আহমেদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশের দুটি দল দিনভর আলীপুরে অভিযান চালিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ওই জমি উদ্ধার করে।
দীর্ঘদিন ওই জমি নিজেদের দখলে রেখে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছিলেন আলীপুরের বাসিন্দা আবদুস সবুর ও তাঁর ভাই আবদুর রউফ। আবদুস সবুর সাতক্ষীরা জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি এবং আবদুর রউফ জেলা বিএনপির সাবেক নেতা ও আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ জানান, তাঁদের কাছে তথ্য আসে, জেলার অনেক খাসজমি দীর্ঘদিন ধরে কয়েকজন ব্যক্তি দখলে রেখে ভোগদখল করছেন। এরপর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মঈনুল ইসলামকে জেলার কোথায় কোথায় খাসজমি আছে এবং জমিগুলো কী অবস্থায় আছে, তার তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়। পাশাপাশি সওজ ও পাউবোকে একই দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে সাতক্ষীরার আলীপুরের আবদুস সবুর ও তাঁর ভাই আবদুর রউফের দখলে থাকা ১২ বিঘা জমি উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, জমিগুলো সওজ ও পাউবোর। এসব খাসজমি অবৈধভাবে ভরাট করে ট্রাক টার্মিনাল ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল। আজ সেখানে অভিযান চালিয়ে সবকিছু গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এভাবে ধীরে ধীরে জেলার সব খাসজমি যেগুলো অবৈধভাবে দখলে আছে, সেগুলো উদ্ধার করা হবে। তাঁরা অভিযান শুরু করেছেন। তাঁদের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা আছেন। তিনি সবার সহযোগিতা চেয়ে বলেন, সাতক্ষীরার এক খণ্ড সরকারি জমি যাতে কোনোভাবে প্রভাবশালী বা দখলকারীর হাতে না থাকে, সে লক্ষ্যে তাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন।
সরকারি খাসজমি উদ্ধার ও উচ্ছেদ অভিযানে সাতক্ষীরা সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাবিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শেখ মঈনুল ইসলাম, সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অতিশ কুমার সরকার, আরডিসি পলাশ আহমেদ, সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম সরোয়ার, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সালাহ উদ্দীনসহ পুলিশ ও সেনাসদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকে আশ্রয় দেওয়ায় তাঁতী দলের নেতা বহিষ্কার
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিনকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত মোহাম্মদ সৈকত উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি ছিলেন। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক ইকবাল করিম সোহেল ও সদস্যসচিব মোরশেদ আলমের যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি মূল্যায়নে ব্যর্থ হওয়ায় হাতিয়া উপজেলা তাঁতী দলের দক্ষিণ কমিটিকে সতর্ক করা হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামে সৈকতের বাড়ি থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে হাতিয়া থানা–পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ১০টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ সৈকত সম্পর্কে ফুফা–ভাগনে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ সৈকত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে অনেকগুলো পরিবার থাকে। আমি ব্যবসার কাজে দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকি। আলাউদ্দিন কখন বাড়িতে এসেছেন, তা আমার জানা নেই। আমাদের ঘর থেকে তাঁর শ্বশুরদের ঘর অনেক দূরে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে জড়ানো হয়েছে।’
নোয়াখালী জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম বলেন, আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকে আত্মগোপনে থাকার সুযোগ করে দেওয়ায় মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের তাঁতী দল কমিটিকেও সতর্ক করা হয়েছে।
আরও পড়ুনহাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার৩১ জুলাই ২০২৫