ঘুস চেয়ে জেল হাজতে গেলেন ‘ভুয়া’ পুলিশ সদস্য
Published: 9th, April 2025 GMT
গোপালগঞ্জে উৎপল মন্ডল (৪২) ওরফে গৌতম মন্ডল নামে এক ‘ভুয়া’ পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা ঘোনাপাড়া এলাকার থেকে তাকে আটক করে গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ।
পুলিশ পরিচয়দানকারী ওই ব্যক্তি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার দিস্তাইল গ্রামের নিরাপদ মন্ডলের ছেলে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান ওই ‘ভুয়া’ পুলিশ সদস্যকে আটকের তথ্য নিশ্চিত করে জানায়, তিনি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া এলাকার টেইলারিং শপের মালিক মনোতোষ মন্ডলকে বলেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শওকত হোসেন দিদার হত্যা মামলায় আপনাকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। কিছু টাকা-পয়সা দিলে আপনাদের ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। মনোতোষ মন্ডলের কাছে ওই ব্যক্তির আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। তিনি বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আটক করে।
ওসি বলেন, পুলিশ পরিচয় দিয়ে টাকা দাবি করার অপরাধে উৎপল মণ্ডল ওরফে গৌতম মন্ডলকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছে থেকে পুলিশের উপপরিদর্শকের একটি ভুয়া আইডি কার্ড জব্দ করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি মামলা হচ্ছে ভুয়া পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রতারণা মামলা। পরে তার বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ সদর থানায় প্রতারণা মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আটক গ প লগঞ জ সদর
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।