মহেশখালীতে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা
Published: 9th, April 2025 GMT
কক্সবাজারের মহেশখালীতে গুলি করে আবুল হোসেন (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে। তাঁর পরিবারের স্বজনেরা জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে গুলি করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড মোহাম্মদ শাহ ঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আবুল হোসেন শাহ ঘোনা এলাকারই বাসিন্দা। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাঁকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলার বদরখালী জেনারেল হাসপাতালে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
আবুল হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবেশী মোহাম্মদ হোসেনের সঙ্গে ৩০ একর জায়গা নিয়ে তাঁদের বিরোধ রয়েছে। ১৬ বছর ধরে এসব জায়গা মোহাম্মদ হোসেনের দখলে। সম্প্রতি স্থানীয় সালিসের মাধ্যমে তিন একর জমি তাঁর বাবা আবুল হোসেন ফিরে পেয়েছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর বাবাকে খুন করেছেন।
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে আমার বাবাকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়। এতে সফল না হওয়ার পর বাড়ির সামনে গুলি করে আমার বাবাকে খুন করা হয়েছে।’
বদরখালী জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিকিৎসক রাকিবুল হোছাইন প্রথম আলোকে বলেন, গুলিতে আবুল হোসেনের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে গেছে। হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।
খুনের অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদ হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তিনি পলাতক। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে। জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাইছার হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের গুলিতে আবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। হাসপাতাল থেকে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি