বাঙালি ছাড়াও ২৭ জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে হবে এবারের নববর্ষের শোভাযাত্রা: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
Published: 9th, April 2025 GMT
বাংলা নববর্ষের এবারের শোভাযাত্রায় বাঙালি ছাড়াও ২৭টি জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ থাকবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেছেন, ‘দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক বিভাজনকে আমরা সারিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।’
আজ বুধবার বাংলা নববর্ষ এবং পাহাড় ও সমতলের জাতিগোষ্ঠীদের বর্ষবরণ উৎসব নিয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
নববর্ষের শোভাযাত্রায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন (বাম্বা) যুক্ত হচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা ফারুকী। ২০০ গিটারিস্টসহ শোভাযাত্রায় অংশ নেবে বাম্বা। ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের প্রতি সংহতি জানিয়ে তারা ‘ফ্রম দ্য রিভার টু সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’ গানটি গাইবে।নববর্ষ দিনের অনুষ্ঠান সম্পর্কে সংস্কৃতি উপদেষ্টা জানান, প্রতিবারের মতো এবারও ছায়ানটের অনুষ্ঠান হচ্ছে। তবে স্থান বদলে সুরের ধারার অনুষ্ঠানটি এবার রবীন্দ্র সরোবরে হবে।
সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সুরের ধারা এবার বাংলা গানের বাইরেও ভিন্ন আয়োজন রাখবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
নববর্ষের শোভাযাত্রায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন (বাম্বা) যুক্ত হচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা ফারুকী। ২০০ গিটারিস্টসহ শোভাযাত্রায় অংশ নেবে বাম্বা। ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের প্রতি সংহতি জানিয়ে তারা ‘ফ্রম দ্য রিভার টু সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’ গানটি গাইবে।
এ ছাড়া চীনা দূতাবাসের আয়োজনে নববর্ষের দিন বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে একটি ড্রোন শো অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ’২৪–এর জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর আয়োজন থাকবে।
নববর্ষের শোভযাত্রা মধ্যবিত্তদের চালু করা। তবে এর সঙ্গে ফসল–সম্পর্কিত ছিল। যেকোনোভাবে হোক আমাদের শোভাযাত্রায় এগুলো স্থান পায়নি। এবারের শোভাযাত্রায় কৃষক একটি বড় থিম হিসেবে থাকবে।মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, সংস্কৃতি উপদেষ্টাশোভাযাত্রার বড় অংশজুড়ে বাংলার লোকসংস্কৃতি ফুটিয়ে তোলা হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘নববর্ষের শোভাযাত্রা মধ্যবিত্তদের চালু করা। তবে এর সঙ্গে ফসল–সম্পর্কিত ছিল। যেকোনোভাবে হোক আমাদের শোভাযাত্রায় এগুলো স্থান পায়নি। এবারের শোভাযাত্রায় কৃষক একটি বড় থিম হিসেবে থাকবে।’
শোভাযাত্রার নাম কী হবে, তা আগামীকাল জানা যাবে বলেও জানান মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নববর ষ র শ ভ য ত র উপদ ষ ট অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পরমাণু কর্মকাণ্ডে বৈশ্বিক বাধ্যবাধকতা মানছে না: আইএইএ
ইরান ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পরমাণু কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বৈশ্বিক বাধ্যবাধকতা মানছে না বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।
সংস্থাটির গভর্নর বোর্ডে আজ বৃহস্পতিবার গৃহীত একটি প্রস্তাবে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। এই অভিযোগ ভবিষ্যতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি উত্থাপনের পথ খুলে দিতে পারে।
গত সপ্তাহে আইএইএ ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি সংস্থাটির গভর্নর বোর্ডে আজকের সিদ্ধান্তের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছিল, ইরান আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা করছে না। তারা কিছু এলাকায় গোপনে পারমাণবিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে তদন্তের আওতায় থাকা কিছু এলাকায় এমন কিছু পারমাণবিক উপকরণ রেখেছে, যার বিষয়ে তারা তথ্য দেয়নি।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি আইএইএর বৈঠকের আগে ইউরোপীয় শক্তিগুলোকে প্রস্তাবটি সমর্থন না করার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এতে তাঁরা বড় ভুল করবেন এবং ইরান এর ‘জবাব’ দেবে।
আইএইএর প্রতিবেদন এবং গভর্নর বোর্ডের এমন প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে নতুন পারমাণবিক চুক্তির লক্ষ্যে চলমান আলোচনাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
আরও পড়ুননিরাপত্তাঝুঁকিতে ইরাকের দূতাবাস থেকে কর্মীদের আংশিকভাবে সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র১১ ঘণ্টা আগেতা ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। এমন এক সময়ে আইএইএর গভর্নর বোর্ডে প্রস্তাবটি গৃহীত হলো, যার মাত্র এক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের কিছু নাগরিককে মধ্যপ্রাচ্য ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশের নাগরিকদের অঞ্চলটি ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে।
তবে ইরান জোর দিয়ে বলেছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ এবং তারা কখনো পরমাণু অস্ত্র তৈরি বা অর্জনের চেষ্টা করবে না।
২০১৫ সালে ছয় বিশ্ব শক্তি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করেছিল ইরান। এই চুক্তির আনুষ্ঠানিক নাম জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ)। ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নজরদারি করার জন্য এই চুক্তি করা হয়েছিল, যাতে দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে।
আরও পড়ুন‘শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম’ থেকে বঞ্চিত হলে পারমাণবিক চুক্তি নয়: ইরান০৪ জুন ২০২৫চুক্তি করার বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু ২০১৮ সালে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন এই চুক্তি থেকে একতরফা বের হয়ে যায়। তাঁর মতে, এই চুক্তি ইরানের পরমাণু বোমা তৈরির পথ বন্ধে যথেষ্ট নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে চুক্তিটি একধরনের বাতিল হয়ে যায়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে চুক্তিটি নবায়নের জন্য জোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন, কিন্তু সফল হননি।
আইএইএর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৭ মে পর্যন্ত ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ৪০৮ দশমিক ৬ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, যা অস্ত্র তৈরির পর্যায়ের কাছাকাছি এবং প্রায় ৯টি পারমাণবিক বোমা বানানোর জন্য যথেষ্ট। পরমাণু অস্ত্র নেই—এমন যেকোনো দেশের ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম মজুত নজিরবিহীন ঘটনা। ফেব্রুয়ারির সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এই মজুতের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে ১৩৩ দশমিক ৮ কেজিতে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুনইরানের উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়ামের মজুত ৪০৮ কেজি, যা নজিরবিহীন: আইএইএ৩১ মে ২০২৫