এসএসসি পরীক্ষা: কুমিল্লায় ছাত্রের চেয়ে ছাত্রী বেশি ২৯ হাজার
Published: 9th, April 2025 GMT
এবারের এসএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রদের চেয়ে ২৯ হাজার ৩৮০ জন বেশি ছাত্রী অংশ নিচ্ছেন। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) থেকে সারা দেশে শুরু হচ্ছে ২০২৫ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবছর এসএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৬৮০ জন। যা গত বছরের তুলনায় ১৩ হাজার ৭৪৮ জন বেশি। কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর নিয়ে গঠিত এই শিক্ষা বোর্ড।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবারের পরীক্ষায় ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৯ হাজার ৫৩০ জন ছাত্রী। ৭০ হাজার ১৫০ জন ছাত্র। অর্থাৎ, ২৯ হাজার ৩৮০ জন বেশি ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা এই তিনটি বিভাগেই শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ রয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগে ৫৯ হাজার ৩৬৬ জন, মানবিক বিভাগে ৫৫ হাজার ৬৫২ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৫৪ হাজার ৬৬২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসবে।
আরো পড়ুন:
ইউএনওকে প্রত্যাহারে ডিসির কাছে শিক্ষার্থীদের আবেদন
হামাস যোদ্ধাদের বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, ক্ষমা চাইলেন শিক্ষিকা
অন্যদিকে, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এবার ২৩ হাজার ৩৫১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে না। গত বছর ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩২ জন, যেখানে নিবন্ধন করেছিল ২ লাখ ৯ হাজার ৩৩৭ জন এবং অনুপস্থিত ছিল ৫৩ হাজার ৪০৫ জন।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো.
তিনি আরো বলেন, “আইনশৃঙ্খলাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ। বৃহস্পতিবার থেকে সুন্দর পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।”
কুমিল্লা জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী আরিয়ান আব্দুল্লাহ বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মাঝে কিছুদিন বিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ থাকলেও শিক্ষকদের সহায়তায় ভালোভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পেরেছি।”
একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল হাফিজ বলেন, “দেশের পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে, আমরা সবাই মিলে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি। আশা করি, পরীক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করবে।”
এদিকে, পরীক্ষা চলাকালীন কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা প্রশাসন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কেন্দ্রগুলোর ২০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে এবং সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এসএসস পর ক ষ য় পর ক ষ র
এছাড়াও পড়ুন:
ফুডপ্যান্ডার ডেলিভারি বয় থেকে সফল ফ্রিল্যান্সার আবু সালেহ, মাসে আয় কত জানেন
পরিবারের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। অভাবের সংসারে নিজেকে একরকমের বোঝাই মনে করতেন। কিছু একটা করা দরকার। পরিস্থিতি যেন আবু সালেহ আহমেদকে দিন দিন আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অনেক স্বপ্ন দেখেছেন, সেই স্বপ্নে নিজেকে অটুট রেখেছেন। আর পাড়ি দিতে হয়েছে অনেকটা পথ। ধৈর্য নিয়ে নিজের স্বপ্নের দিকে তাকিয়ে আজ সালেহ নিজেকে বলতেই পারেন একজন সফল ফ্রিল্যান্সার। কেননা এখন তিনি মাসে আয় করেন তিন লাখ টাকা।
আবু সালেহ আহমেদ। ডাকনাম আফনান। বাবা মো. কুতুব উদ্দিন শেখ মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এখন অবসর নিয়েছেন। মা সাজেদা খাতুন গৃহিণী। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার তারাপুর গ্রামের আবু সালেহ আহমেদ এখন অবশ্য এলাকায় থাকেন না। থাকেন ঢাকার কাঁঠালবাগানে। এখান থেকেই আফনান গড়ে মাসিক তিন লাখ টাকা আয় করেন। ছোট্ট একটা অফিসও নিয়েছেন, যেখানে চারজন ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান করেছেন।
২০১৬ সালে সেনগ্রাম ফাজিল মাদ্রাসা থেকে এসএসসি পাসের পর ২০২০ সালে লক্ষ্মীপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন আবু সালেহ আহমেদ। এখন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে স্থাপত্য বিভাগে চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। ছাত্রাবস্থাতেও তাঁর মাসিক আয় কোনো কোনো মাসে পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যায়। ২৭ বছর বয়সী আবু সালেহ আহমেদ বিয়ে করেছেন গত বছর। স্ত্রীর নাম ফাতেমা জোহরা।
পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াই ছিল কঠিন
আফনান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আসলে মাদ্রাসা থেকে এসএসসি পাস করে বের হয়েছি। তখন ইচ্ছা থাকলেও আমাদের সামর্থ্য ছিল না ভালো জায়গায় পড়ার। আমার চার বছর যে সময়টা কেটেছে, আসলে খুব কষ্টে কেটেছে। কলেজে আমি এক্সট্রা কারিকুলামে ভালো ছিলাম, ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি ছিলাম, বেশ কিছু জায়গায় বিতর্ক করে চাম্পিয়নও হয়েছি। স্যারদের চোখে পড়েছি। একসময় আর পেরে উঠছিলাম না, তাই দুই বছর পড়তে পড়তেই টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) নিতে গিয়েছিলাম। লক্ষ্মীপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষকেরা আমার কথা শুনে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। যার ফলে আমি পড়াশোনাটা শেষ করেছি।’
আবু সালেহ আহমেদ প্রথম আলোকে আরও বলেন, ‘দিনগুলো কঠিন ছিল। টিউশনি করাতাম। ১ হাজার ৫০০ টাকা পেতাম। ১ হাজার টাকা মেসভাড়া ও ৫০০ টাকায় খাওয়া। সকালে ও রাতে খেতাম। মাসে তা–ও খাওয়ার বিল আসত ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। মেসের বাকিরা সেটা দিয়ে দিত। তারপর একদিন ২ হাজার ৫০০ টাকার একটা টিউশনি পেয়ে একটু যেন শক্তি পেলাম। এভাবেই আমার ডিপ্লোমার চার বছর কেটেছে।’
একবুক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায়
২০২০ সালে ডিপ্লোমা পড়া শেষ করেই একবুক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন আবু সালেহ আহমেদ। এসেই শুরু করেন আবার জীবনসংগ্রাম। কোথাও কাজ পাচ্ছিলেন না। শেষমেশ ফুডপ্যান্ডায় রাইডার (ডেলিভারি বয়) হিসেবে কাজ নেন তিনি। কিন্তু শুধু ফুডপ্যান্ডায় কাজের আয় দিয়ে তাঁর চলছিল না। তখন থেকেই কাজের পাশাপাশি কিছু একটা করার চেষ্টা করছিলেন। কিছু জায়গায় খোঁজ নিয়ে ভর্তি হয়ে যান তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণের প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ আইটিতে। খাবার ডেলিভারির পাশাপাশি কাজও শিখতেন।
আবু সালেহ আহমেদ