জুলাই অভ্যুত্থানে বরফ কারখানার এক কর্মচারীকে গুলি করে খুনের অভিযোগে আট মাস পর সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ৩২৫ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহত ইউসুফের বাবা মো. ইউনুস বাদী হয়ে আজ বুধবার চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় মামলাটি করেন।

পুলিশ জানায়, গত বছরের ৫ আগস্ট গুলিতে ইউসুফ নামের এক ব্যক্তি নিহত হন বলে মামলায় বলা হয়েছে। নিহত ইউসুফ স্থানীয় একটি বরফ কারখানার কর্মচারী ছিলেন বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার।

মামলায় মহিবুল ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন, এম এ লতিফ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চসিক কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, জাফর আলম চৌধুরী, তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, যুবলীগ নেতা আরশাদুল আলম, নুরুল আজিম, দিদারুল আলমসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আসামি রাখা হয় আরও ৩০০ জনকে।

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিহত ইউসুফ সরকারিভাবে ঘোষিত জুলাই-আগস্ট শহীদ। তাঁর বাবা মামলা করেছেন এবং পুলিশ তা রেকর্ড করে তদন্ত শুরু করেছে।’

ইউসুফের বাবা মো.

ইউনুস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছেলে বরফ কারখানায় কাজ করত। সে গুলিতে নিহত হয়। আমরা পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) না করেই তাকে হাটহাজারীতে দাফন করি।’

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় ইউসুফ দেওয়ানহাট এলাকায় বিভিন্ন দোকানে বরফ সরবরাহ করছিলেন। রাত ১১টার দিকে ইউসুফের স্ত্রীর বড় বোনের কাছ থেকে ফোন পান, ইউসুফ ডবলমুরিং এলাকায় সহিংসতায় গুলিতে নিহত হয়েছেন। তাঁর মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরে তাঁকে হাটহাজারীতে দাফন করা হয়।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর অভিযুক্তরা পরস্পরের সঙ্গে যোগসাজশে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়, এতে প্রাণহানি ঘটে।

উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্টে চট্টগ্রাম নগরে গুলি ও সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ১১।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউস ফ আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

রিকশাচালকদের সমাবেশ থেকে বাসদ নেতাসহ তিনজন গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে একটি সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও ছাত্র ফ্রন্টের নেতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে নগরের দেওয়ানহাট মোড় এলাকা থেকে তাঁদের আটক করে ডবলমুরিং থানা-পুলিশ। তবে হালিশহর থানায় আগে হওয়া বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

জানা গেছে, আজ সকালে দেওয়ানহাট মোড় এলাকায় ‘রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান, ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ ছিল। সেখান থেকে বাসদ নেতাসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। পুলিশ বলছে, অনুমতি ছাড়াই সমাবেশটি করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে বাধা দেওয়া হয়। পুলিশ সড়ক অবরোধে বাধা দিলে পুলিশে ওপর চড়াও হন কয়েকজন। তাঁদের মধ্য থেকে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

তবে আয়োজকেরা জানিয়েছেন, সমাবেশের জন্য ব্যানার নিয়ে দাঁড়াতেই পুলিশ ব্যানার কেড়ে নেয় এবং মাইক ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের জেলা আহ্বায়ক ও বাসদ (খালেকুজ্জামান) চট্টগ্রাম জেলা শাখার ইনচার্জ আল কাদেরী, ছাত্র ফ্রন্টের নেতা মিনহাজ উদ্দিন এবং ইজিবাইকের চালক মো. রোকনকে নিয়ে যায় পুলিশ।

ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের সদস্যসচিব মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘ ১৩ বছর যাবৎ ৭ দফা দাবিতে এই আন্দোলন আমরা করে আসছি। আমরা ইজিবাইকের নীতিমালার জন্য কাজ করছি, কোনো রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ করিনি। কর্মসূচি শুরুর আগেই পুলিশ এভাবে হামলা করে গ্রেপ্তার করতে পারে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো. রফিক আহমেদ বলেন, ‘সমাবেশের কোনো অনুমতি ছিল না। সমাবেশের লোকজন এসে দেওয়ানহাট মোড়ে গাড়ি ও রাস্তাঘাট বন্ধ করছিলেন। আমরা তিনজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেছি। হালিশহর থানার একটি মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে অটোরিকশা চালকদের সমাবেশ পণ্ড, গ্রেপ্তার তিন
  • রিকশাচালকদের সমাবেশ থেকে বাসদ নেতাসহ তিনজন গ্রেপ্তার