মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে তিন প্যাকেট বেনসন সিগারেটের দাম নেওয়ায় অভিযুক্ত সেই পুলিশ সদস্যকে টাঙ্গাইল জেলায় বদলি করা হয়েছে। তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, গত রোববার পাসপোর্ট হারানো বিষয়ে সালমান কবীর নামে এক ভুক্তভোগী সিরাজদীখান থানায় গেলে এএসআই মাহফুজুর রহমান তাঁর কাছ থেকে তিন প্যাকেট বেনসন সিগারেট বা এর সমমূল্য ১ হাজার ২০০ টাকা ঘুষ নেন। এ বিষয়ে পরদিন সোমবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরই বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানতে পারেন।
এ বিষয়ে সিরাজদীখান থানার ওসি শাহেদ আল মামুন জানান, অভিযুক্ত এএসআই মাহফুজুর রহমানকে টাঙ্গাইল জেলায় বদলি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, শুধু বদলি নয়, তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
সিরাজদীখান থানা সূত্রে জানা গেছে, এএসআই মাহফুজুর রহমানের বদলির আদেশ এক মাস আগেই হয়েছিল। কি কারণে তিনি কর্মস্থল ছেড়ে যাননি, সে বিষয় নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন করলো জেলা লিগ্যাল এইড না’গঞ্জ
বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটি নারায়ণগঞ্জ উদযাপন করলো জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) দিনের শুরুতেই সকাল সাড়ে ৮টায় জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান এবং সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, নারায়ণগঞ্জ মোঃ আবু শামীম আজাদ পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে এর শুভ সুচনা করেন।
এ সময় জাহিদুল ইসলাম মিঞা, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক, মো, রবিউল ইসলাম, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার, ডাঃ এ.এফ.এম. মুশিউর রহমান, সিভিল সার্জন, বিচারকবৃন্দ, জেল সুপার, জেলা সমাজ কল্যাণ বিষয়ক কর্মকর্তা, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, জেলা তথ্য বিষয়ক কর্মকর্তা, আইনজীবি সমিতির সভাপতি, সেক্রেটারীসহ নারায়ণগঞ্জ জেলার আইনজীবিবৃন্দ, সকল আদালতের সহায়ক কর্মচারীবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগণের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর সকাল ৯টার দিকে লিগ্যাল এইড মেলা উদ্বোধন করা হয়। পরে জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জনাব মাইমানাহ আক্তার মনি, বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, নারায়ণগঞ্জ।
আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ জনাব মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরী, জানুয়ারি-২০২৪ হতে মার্চ- ২০২৫ পর্যন্ত লিগ্যাল এইড অফিসের কার্যক্রমের এক পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।
এই সময়ের মধ্যে ৬৫৭ জনকে মামলায় আইনগত সহায়তা প্রদান করা হয়, আইনি পরামর্শ গ্রহীতা ১২০ জন, আপোষ মিমাংসার জন্য ১২১২টি আবেদন প্রাপ্ত হয়ে ৪৯৭টি সফল মিমাংসা হয় এবং চার কোটি চৌষট্টি লাখ সত্তর হাজার চারশত টাকা আদায় করে পক্ষদের মধ্যে প্রদান করা হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতি বলেন যারা আর্থিক অস্বচ্ছলতার জন্য ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা লিগ্যাল এইড থেকে উপকৃত হচ্ছে। আজকে এখানে যারা এসেছেন তাদের দায়িত্ব হলো সকলের কাছে সরকারের এই সেবার বিষয়টি পৌছে দেয়া, যাতে করে অসহায়, হতদরিদ্র মানুষজন সহজে আইনি সেবাটা পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
নিলুফা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, যেহেতু আইনের চোখে সবাই সমান তাই সবাইকে ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে লিগ্যাল এইড এর প্রচার এবং প্রসারের জন্য প্রত্যেককে নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করতে হবে।
মো. রবিউল ইসলাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আইনগত সহায়তা দিবসকে আরো মানুষের মধ্যে অধিক প্রচারের জন্য পরামর্শ প্রদান দিয়ে বলেন, দ্বন্দে কোনো আনন্দ নাই, তাই ঝামেলা মিটিয়ে সুন্দর জীবন যাপনের জন্য লিগ্যাল এইড এর সহায়তা নিতে পারে সকল শ্রেণীর মানুষ।
পরবর্তীতে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান সমাপনী বক্তব্যে বলেন, মানুষ যাতে সহজে, দ্রুত বিচার পায়, দারিদ্রতার কারণে যেন কেউ আইনগত সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয় সে উদ্দেশ্যে লিগ্যাল এইড অফিস নিরবিচ্ছিন্ন কাজ করে চলছে। তিনি মানুষদের আইনগত ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন। তার বক্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা সভা সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এছাড়াও এই দিবসটি জনমানুষের মধ্যে অধিক প্রচার ও প্রসারের জন্য দিনব্যাপী লিগ্যাল এইড মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় অংশগ্রহণ করেন, জেলা আইনজীবী সমিতি, কর্মচারী কল্যান পরিষদ, লিগ্যাল এইড অফিস, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং জেলা কারাগার।