ইয়েমেনের বন্দরশহর হোদেইদারে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার এ হামলা চালানো হয়। বৃহস্পতিবার টেলিভিশন চ্যানেল আল মাশিরার বরাতে এক প্রতিবেদনে গালফ নিউজ এ তথ্য জানায়। 

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনিস আল আসবাহি জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে ৪ জন শিশু এবং ২ জন নারী আছেন।

২০২৩ সালের অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে লোহিত সাগরে চলাচলকারী ইসরায়েলি কিংবা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে। কয়েক মাস এ অবস্থা চলার পর হুথিদের সতর্কবার্তা দিতে ইয়েমেনে বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র; তারপর থেকে লোহিত সাগরে চলাচলকারী মার্কিন বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা শুরু করে হুথিরা।

হামলা বন্ধে কয়েক দফায় সতর্কবার্তা দেওয়ার পর গত ১৫ মার্চ থেকে ফের ইয়েমেনে বিমান অভিযান শুরু মার্কিন বিমান বাহিনী। এর তিন দিন পর ১৮ মার্চ থেকে দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় ফের সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলও।

অবশ্য হুথি বিদ্রোহীরাও থেমে নেই। হুথি বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানিয়েছেন, বুধবার হুথি যোদ্ধারা একটি মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করেছে, তেল আবিবে ইসরায়েলের একটি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালিয়েছে এবং লোহিত সাগরে টহলরত মার্কিন এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার জাহাজ হ্যারি এস ট্রুম্যানকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা করেছে।

ইরানের মদতপুষ্ট হুথি গোষ্ঠী ২০১৪ সালে ইয়েমেনের সরকারকে হটিয়ে রাজধানী সানা দখল করে। তবে এখনও পুরো ইয়েমেন নিজের কব্জায় আনতে পারেনি গোষ্ঠীটি। বর্তমানে ইয়েমেনের অর্ধেক অঞ্চল হুথিদের দখলে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের মধ্যে খনিজ সম্পদ নিয়ে চুক্তি সই

কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি চুক্তিতে সই হয়েছে। এর ফলে ওয়াশিংটন কিয়েভের মূল্যবান দুর্লভ খনিজসম্পদে প্রবেশাধিকার পাবে ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে তার পুনর্গঠনে তহবিল জোগান দেবে।

বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে এ চুক্তি সই হয়। খবর আল জাজিরার

গত মার্চে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বৈঠকের পর এ সম্পর্ক তলানিতে নেমেছিল।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিল গঠনের মাধ্যমে রাশিয়াকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির পক্ষে। 

তিনি বলেন, এই অংশীদারত্বের ধারণাটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের—যা দুই দেশের জনগণের শান্তি ও অগ্রগতির প্রতিশ্রুতি বহন করে।

ইউক্রেনের অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ইউক্রেন পুনর্গঠন তহবিলে’ যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি বা সামরিক সহায়তার মাধ্যমে অবদান রাখবে এবং কিয়েভ তার প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে পাওয়া রাজস্বের ৫০ শতাংশ তহবিলে দেবে।

মন্ত্রণালয় আরও জানায়, তহবিলের সম্পূর্ণ অর্থ প্রথম ১০ বছর শুধু ইউক্রেনে বিনিয়োগ করা হবে, এরপর ‘লাভ অংশীদারদের মধ্যে বণ্টন করা হতে পারে’। তহবিলে দুপক্ষের সমান সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকবে। এ চুক্তি শুধু ভবিষ্যতের মার্কিন সামরিক সহায়তায় নজর দেব, অতীতের সহায়তা এতে অন্তর্ভুক্ত নয়।

ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া সিরিদেনকো বলেন, ‘আমরা শুধু বিনিয়োগই পেতে যাচ্ছি না; বরং এমন একটি কৌশলগত অংশীদারকেও পাচ্ছি, যারা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনে সহায়তা করতে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ চুক্তি বিস্তারিত আলোচনার ফল এবং আমি দুপক্ষের মধ্যস্থতাকারী দলকে তাদের পেশাদারি ও নিষ্ঠার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।’

চুক্তি সইয়ের কিছুক্ষণ আগে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মাইগাল সামাজিকমাধ্যম টেলিগ্রামে লিখেছেন, এ চুক্তির ফলে ইউক্রেন তার ‘ভূগর্ভস্থ সম্পদ, অবকাঠামো ও প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে’ এবং এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রচেষ্টায় কোনো বাধা তৈরি করবে না।

চুক্তিটি কয়েক সপ্তাহ আগেই স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু মার্চে হোয়াইট হাউসে বৈঠকে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডার জেরে এটি বিলম্বিত হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ