ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, ‘ইসলামী নামের দলকে বিভিন্ন সময়ে বোকা পেয়ে ধোঁকা দিয়ে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতার মসনদে গিয়ে আমাদের বারবার প্রতারিত করেছে। এখন যাঁরা ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, তাঁদের বলতে চাই, ইসলামী আন্দোলনকে বাইপাস করে (পাশ কাটিয়ে) সংসদে যাওয়ার সুযোগ নেই।’

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় যশোর ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। ‘ছাত্র–জনতার বিপ্লবে সংগঠিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার এবং ফিলিস্তিনে ইজরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যা বন্ধের’ দাবিতে যশোর জেলা ইসলামী আন্দোলন এই জনসভার আয়োজন করে।

জনসভায় সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘ক্ষমতার মসনদে গিয়ে দেশের টাকা পাচার করেছে, আমাদের মায়েদের বুক খালি হয়েছে। আমাদের গুম, খুন করা হয়েছে। এর পরিবর্তন আমাদের করতে হবে। গত ৫৩ বছর অনেক নিষ্পেষিত হয়েছি, আর হতে চাই না।’

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম আরও বলেন, ‘দল প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমাদের দলের একজনও সংসদে যায়নি। তার মানে কি আমাদের শক্তি নাই? আমাদের দল দুর্বল? কোনো ধান্ধাবাজদের সংসদের যাওয়ার কোনো সিঁড়ি হয়নি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আর হবেও না। আমরা আওয়ামী লীগের শাসনও দেখেছি, বিএনপির শাসনও দেখেছি, জাতীয় পার্টিকে দেখেছি। আপনাদের এখন ইসলামের শাসন দেখা বাকি। বিগত ৫৩ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তাই জনগণের ইচ্ছাকে সঠিকভাবে প্রতিফলিত করতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে চায় দেশের জনগণ।’

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন যশোরের সভাপতি আবদুল আলিম মিয়া। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনটির নায়েবে আমির হাফেজ মাওলানা আবদুল আউয়াল, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ শোয়াইব হোসেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন যশোরের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল আলম, জয়েন্ট সেক্রেটারি এইচএম মহসিন, সহকারী সেক্রেটারি আবদুর রশিদ প্রমুখ।

বক্তব্য শেষে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ঈদগাহ মোড় থেকে বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে মনিহার স্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদ আম দ র ইসল ম ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঈদের বিরতির পর ফের অবস্থান নিয়েছেন সংস্থাটির কর্মচারীরা। এর সঙ্গে ঢাকাবাসীর ব্যানারে নগরভবনে একত্রিত হয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা। সেখানে উপস্থিত হয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইশরাক হোসেন।

আজ রোববার সকাল থেকে ইশরাকের অনুসারীরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগরভবনে একত্রিত হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও। সকাল ১১ টার দিকে নগরভবনে প্রবেশ করেন ইশরাক হোসেন এবং আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।

ইশরাক হোসেন বলেন, সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করেন। তাহলে অচল অবস্থা কেটে যাবে। এই সমস্যা সুরাহা না করা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লংঘন করেছেন। আন্দোলন চলমান থাকবে। এখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। এই লড়াই থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাবো, তিনি যেন বিষয়টি সরাসরি নিজে তত্ত্বাবধান করেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের আন্দোলন যেভাবে চলছে কোনো অবস্থাতেই আমরা এখান থেকে ফিরে যেতে পারি না। আদালতের রায় জনগণের রায়কে আপনারা মেনে নিন। 

ইশরাক বলেন, আমরা যদি এখান থেকে পেছনের দিকে চলে যাই, তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। সরকারকে আহ্বান জানাবো, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করেন। নইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই সংকটে চলবেই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেসব দৈনন্দিন কার্যক্রম চলবে, জনগণের জন্য ভোগান্তি না হয়। এগুলো আমাদের তত্ত্বাবধানে চলমান থাকবে।

এদিকে তারা ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’, ‘নগর পিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’- এমন নানা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের স্লোগানে উত্তাল ছিল পুরো নগরভবন। তাদের আন্দোলনের ফলে বিরতির আগে ১৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত নগর ভবন থেকে দেওয়া সব নাগরিক সেবা বন্ধ ছিল। ঈদের ছুটির পর আজ থেকে ফের তারা আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয়; সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত ১৫ মে থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

এরপর এ রিট মামলার ওপর কয়েক দফা শুনানির পর তা খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্টের বেঞ্চ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানের শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করার আহ্বান সাবেক শাহের পুত্রের
  • আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
  • অপকর্মকারীদের দায় দল নেবে না: তমিজ উদ্দিন
  • বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, ভালো উদ্যোগ নিলেও বিরোধিতা আসে
  • বাজেটের ত্রুটি সংশোধনের আহ্বান
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • ড. ইউনূসকে দেশের কাজে যুক্ত রাখতে চায় বিএনপি
  • তেহরানে ইসরায়েলের বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
  • জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
  • সহসাই রাজনীতির কালো মেঘ কেটে যাবে: ডা. জাহিদ