Prothomalo:
2025-08-01@01:56:37 GMT

ইউনূস সরকার কতটা চাপমুক্ত

Published: 12th, April 2025 GMT

৮ এপ্রিল অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আট মাস পার করল। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছর ৮ আগস্ট যখন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়, তখন সর্বত্র বিশৃঙ্খল অবস্থা চলছিল। সেই অবস্থা থেকে গত আট মাসে সরকার অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মোটামুটি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পেরেছে।

সাধারণ মানুষের উদ্বেগ ছিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে; আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষুব্ধ জনতার সহিংস প্রতিক্রিয়া আমরা দেখি। একের পর এক মব ভায়োলেন্সের ঘটনাও ঘটেছে, যার রেশ এখনো আছে। দ্বিতীয় উদ্বেগ ছিল নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি, আর্থিক খাতের বিশৃঙ্খলা ও জনপ্রশাসনে অস্থিরতা। কয়েক মাস ধরে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার পর গত রোজায় কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে এনেছে সরকার। এটা সাফল্যই বলতে হবে। অন্যদিকে জনপ্রশাসনে শুরুতে যে অস্থিরতা চলছিল, তা–ও কমে এসেছে।

গত আট আসে নানা কারণে বেশ কিছু কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রতিবছর কর্মবাজারে ২৪ থেকে ২৫ লাখ তরুণ–তরুণী প্রবেশ করেন। কিন্তু তাঁদের কাজের সংস্থান নেই। দেশের বিভিন্ন স্থানে যে ছিনতাই, ডাকাতি ও হানাহানির ঘটনা ঘটে চলেছে, তার একটি বড় কারণ বেকারত্ব।

সম্প্রতি সরকার যে বিনিয়োগ সম্মেলনটি করেছে, সেটি কিছুটা হলেও তরুণদের মধ্যে আশা জাগাতে পারে। যদিও তা সময়সাপেক্ষ। বৃহস্পতিবার একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) এক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে আলাপ হলো। তিনি জানালেন, ইউএসএআইডির প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কমপক্ষে এক লাখ কর্মী চাকরি হারিয়েছেন।

নানা রকম প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সরকারকে যে দুটি খাত ভালো অবস্থানে রেখেছে, সেটা হলো রপ্তানি ও প্রবাসী আয়। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রপ্তানি করেছে ৩০.

২৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাক, যা আগের বছরের তুলনায় ১০.৮৪ শতাংশ বেশি। গত মার্চে রেমিট্যান্স ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে এসেছে ৩২৯ কোটি ডলার, যা গত বছরের মার্চের তুলনায় ৬৪.৭ শতাংশ বেশি।

এই মুহূর্তে সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্কারোপ ও ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর সাময়িক সুবিধা আমরা পেতে পারি। কিন্তু স্থায়ী সমাধানের কথাই ভাবতে হবে আমাদের। ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করায় আমাদের রপ্তানি ব্যয় ও সময় দুটোই বাড়বে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন। কিন্তু সেটা এখনই সম্ভব নয়। আমাদের সক্ষমতা ছিল না বলেই ভারতীয় বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি করা হতো।

ডেইলি স্টার–এর প্রতিবেদন থেকে জানা গেল, গত ১৫ মাসে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ‍্যমে ভারতীয় রুট ব্যবহার করে ৩৬টি দেশে ৪৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। মোট রপ্তানির পরিমাণ ৩৪ হাজার ৯০০ টনের বেশি। ২০২০ সালের ২৯ জুন থেকে বাংলাদেশ এই সুবিধা পেয়ে আসছিল।

সাত–আট মাস ধরে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সরকার এত দৌড়ঝাঁপ, এত কমিশন গঠন, এত আলোচনার পরও এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসতে না পারা স্বস্তির খবর নয়। সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে বল ছুড়ে দিয়েছে। আবার রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দুই পক্ষের এই দ্বৈরথ কিংবা ‘অল্প সংস্কার’ না ‘বেশি সংস্কারের’ দোলাচলে পড়ে নির্বাচন নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হোক, তা কেউ চায় না।

ভারত এই সুবিধা বাতিলের জন্য তাদের পণ্যজটের দোহাই দিলেও মূল কারণ ‘রাজনৈতিক’। রাজনৈতিক কারণেই ভিসা সীমিত করা হয়েছে। রাজনৈতিক কারণেই দ্বিপক্ষীয় সমস্যাগুলো ঝুলে আছে। অনেকের ধারণা ছিল, ব্যাংককে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বরফ গলবে। কিন্তু সেটি গলেনি।

আমাদের তৈরি পোশাকশিল্পের কাঁচামালের একটি বড় অংশ আমদানি হয় ভারত থেকে। ভবিষ্যতে নয়াদিল্লি যদি সে ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ আরোপ করে, তাহলে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত আরও ঝুঁকিতে পড়ে যেতে পারে। তাই সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ধীরে-সুস্থে, মাথা ঠান্ডা রেখে।

আট মাস পরও আইনশৃঙ্খলার উন্নতি না হওয়া সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ মনে করি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যেদিন দাবি করলেন আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হয়েছে, তার পরদিনই সাভারে দিনদুপুরে চলন্ত বাসে ছিনতাই, স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনা ঘটল। বৃহস্পতিবার তিনি সুনামগঞ্জে বলেছিলেন, ‘সাধারণ মানুষ বলতাছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো। ওই রাস্তা থেকে হুনি, মানুষ বলতাছে, আপনারা আরও পাঁচ বছর থাকেন।’

এর আগেও নানা মহল থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের আরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা দরকার বলে প্রচার চালাচ্ছেন। এনসিপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেছেন, তিনি চান মুহাম্মদ ইউনূস পাঁচ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় থাকুন। কিন্তু সেটি কীভাবে সম্ভব? তিনি তো এসেছেন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে। এ ধরনের কথাবার্তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হলেও একজন উপদেষ্টার মুখে এই প্রথম শুনলাম। রাস্তার লোকজন সরকার সম্পর্কে আরও অনেক কিছু বলেন। সেটাও যেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মনোযোগ দিয়ে শোনেন।

সরকারের নানামুখী উদ্যোগ সত্ত্বেও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ব্যাংককে মিয়ানমার সরকারের প্রতিনিধি ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা দেশে ফিরে যাওয়ার যোগ্য বলে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে অনেকে আশ্বস্ত হয়েছিলেন। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের বক্তব্য ছিল মূলত প্রতারণামূলক। মিয়ানমার প্রতিনিধি বলেননি যে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে তঁারা ফেরত নেবেন। কূটনীতিতে ‘ফেরত নেওয়া’ আর ‘ফেরতযোগ্য’ শব্দদ্বয়ের মধ্যে বিরাট ফারাক। এর আগেও মিয়ানমার কথা দিয়ে কথা রাখেনি। বরং গত আট মাসে আরও লাখ খানেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে বলে নানা সূত্রে খবর পাওয়া গেছে।

মূল কথা হলো যে রাখাইন প্রদেশ থেকে তারা বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে এসেছে, সেখানে মিয়ানমার সরকারের কর্তৃত্ব নেই। বেশির ভাগ এলাকাই সেখানকার বিদ্রোহী আরাকান আর্মির দখলে। রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরতে হলে এখন চার পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হতে হবে—মিয়ানমার সরকার, আরাকান আর্মি, রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাংলাদেশ সরকার।

আগের চেয়ে সরকারকে অনেক আত্মবিশ্বাসী মনে হয়। কিন্তু এই আত্মবিশ্বাসের যৌক্তিক কারণ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন। সমালোচকেরা মনে করেন,  রাজনৈতিক সরকারের মতো অন্তর্বর্তী সরকারও অনেক কিছু ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করছে। প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরেও সহায়তার বড় কোনো অঙ্গীকার পাওয়া যায়নি। যদিও বলা হচ্ছে চীন সফর অভূতপূর্ব সফল। বিমসটেক সম্মেলনে বাংলাদেশ জোটের পরবর্তী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ১৯৯৮ সালে যাত্রা শুরু করা এই জোট তো কার্যকরই হলো না। তবু আমরা চেয়ারম্যান হয়েছি, এটুকু সান্ত্বনা।

সাত–আট মাস ধরে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সরকার এত দৌড়ঝাঁপ, এত কমিশন গঠন, এত আলোচনার পরও এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসতে না পারা স্বস্তির খবর নয়। সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে বল ছুড়ে দিয়েছে। আবার রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দুই পক্ষের এই দ্বৈরথ কিংবা ‘অল্প সংস্কার’ না ‘বেশি সংস্কারের’ দোলাচলে পড়ে নির্বাচন নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হোক, তা কেউ চায় না।

সোহরাব হাসান প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবি

[email protected]

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত আট ম স সরক র র উপদ ষ ট ন র পর আম দ র ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

ফেস্টুন অপসারণ করায় ইউএনওকে শাসালেন বিএনপি নেতা 

ফেস্টুন অপসারণ করায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আহমেদকে শাসিয়েছেন এক বিএনপি নেতা। তিনি ইউএনওকে আগের স্থানেই ফেস্টুন লাগিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, “তা না হলে যেটা করা দরকার, সেটাই করব।”

এই বিএনপি নেতার নাম কে এম জুয়েল। তিনি রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক। গোদাগাড়ী উপজেলার রিশিকুলে তার বাড়ি। 

গত মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) গোদাগাড়ী উপজেলা সদরের সড়ক বিভাজকে থাকা বিভিন্ন দলের ফেস্টুন অপসারণ করেন ইউএনও ফয়সাল আহমেদ। বিষয়টি জানতে পেরে ইউএনওকে ফোন করে ধমকান জুয়েল।

কে এম জুয়েলের ফোনকল রেকর্ড পাওয়া গেছে। এতে শোনা গেছে, কে এম জুয়েল বলেছেন- “আজকে একটা ঘটনা ঘটেছে, আমি শুনেছি। আমি ইঞ্জিনিয়ার কে এম জুয়েল বলছি, সম্ভাব্য ক্যান্ডিডেট। আপনার গোদাগাড়ী থানার প্রোপারে যে পোস্টার সরিয়েছেন, এই বিষয়ে কিছুক্ষণ আগে আমাকে ইনফর্ম করা হয়েছে। সেখানে আমার পোস্টার ছিল। জামায়াত-বিএনপির পোস্টার ছিল। আপনি যে হটাইছেন, এর কারণ কী? কোনো পরিপত্র আছে, না ইচ্ছে করেই?”

ইউএনও তখন বলেন, “জনগণ অভিযোগ দিয়েছে।” জুয়েল বলেন, “জনগণ তো অনেক অভিযোগ দিয়েছে। সমগ্র গোদাগাড়ী থানাতে ভর্তি হয়ে আছে পোস্টার। তোলেন, সব তোলেন।”

এ সময় ইউএনও কিছু বলতে চাইলে তাকে থামিয়ে দিয়ে জুয়েল বলেন, “শোনেন, আমি যেটা বলছি লিগ্যাল রাইট নিয়ে বলছি, সেটার সঠিক অ্যানসার করবেন। আপনি কেন ওই জায়গার পোস্টার তুলেছেন, আর অন্য জায়গার তুলছেন না কেন? আমি ঢাকাতে আছি, আমি আসতেছি।”

ইউএনও বলেন, “আচ্ছা ঠিক আছে।” জুয়েল বলেন, “না, আপনি যেখান থেকে পোস্টার তুলেছেন, সেখানে আপনি সাবমিট করবেন পোস্টার।” কথা না বাড়িয়ে ইউএনও বলেন, “ঠিক আছে।”

এ সময় আরো ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপি নেতা জুয়েল বলেন, “কালকে যেন আমরা ওখানে দেখতে পাই, পোস্টার যেখানে ছিল। ঠিক আছে মানে কী? অবশ্যই করবেন। না হলে যেটা করা দরকার সেটাই করব। আপনার এগেইনেস্টে যেরকম স্টেপ নেওয়া দরকার, সেটাই আমি করব। বিশেষ করে আমরা করব। আমার নেতার ছবি তুলেছেন আপনি ওখান থেকে। জাস্ট রিমেম্বার ইট।”

জুয়েল বলতে থাকেন, “নরসিংদী বাড়ি দেখান আপনি, না? কোন দল থেকে আসছেন আপনি? কোন দল থেকে এসেছেন? কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেছেন আপনি? কালকে পোস্টার ভদ্রলোকের মতো লাগাবেন। ফাইজলামি! এহ, বিশাল ব্যাপার। উনি টিএনও হয়ে গোদাগাড়ীতে আসছেন।”

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ইউএনও ফয়সাল আহমেদ বলেন, “ডাইংপাড়া মোড়ে ব্যানার-ফেস্টুন এরকম পর্যায়ে ছিল যে, যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছিল। পাশাপাশি পৌরসভার সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছিল বলে অভিযোগ ছিল। স্থানীয় জনগণ এ ব্যাপারে অভিযোগ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পৌরসভা থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে সরানোর জন্য। দুই-তিনবার মৌখিকভাবে ও লিখিত আকারে জানানো হয়েছিল। না সরানোর কারণে ব্যানার-ফেস্টুন সরিয়ে পৌরসভায় রাখা হয়েছে।”

তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির একাধিক সভাতেও আলোচনা হয়েছিল। সেখান থেকে সকল রাজনৈতিক দলের পোস্টারই পৌরসভার পক্ষ থেকে সরানো হয়েছে। তবে, বিএনপি নেতা কে এম জুয়েলের ফোনে শাসানোর বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা কে এম জুয়েল বলেন, “ইউএনওর কাছে জনগণ অভিযোগ করেছে, আর আমরা কি মানুষ না? আমরা জানোয়ার? আমার ছবি তুলে ফেলুক আপত্তি নাই। আমার নেতার ছবিতে হাত দিয়েছে কেন? তার কাছে কি নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পোস্টার তুলে ফেলতে? তিন মাসের মধ্যে কি নির্বাচন? উনি জাস্টিস করতেন, আমার কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু গরু-ছাগলের মতো আচরণ করবেন, তা তো হয় না।”

বিষয়টি নিয়ে কোথাও আলোচনা হয়নি, ইউএনও কোনো চিঠিও দেননি, দাবি করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “গতকাল আমার এক লোককে ডেকে ইউএনও বলেছেন, যেখানে পোস্টার ছিল, দয়া করে আপনারা লাগিয়ে নেন। কিন্তু, আমরা তো লাগাব না। ইউএনওকেই লাগাতে হবে।”

উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির একজন সদস্য জানান, প্রায় দুই মাস আগে উপজেলা সদরের এসব ব্যানার-ফেস্টুন ও পোস্টারের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উত্থাপন করেন এক ব্যক্তি। এক মাসেও সেগুলো অপসারণ না হওয়ায় পরবর্তী মাসের সভাতেও বিষয়টি আলোচনায় ওঠে। ওই সভায় ট্রাফিক পুলিশ আপত্তি করেছিল যে, ফেস্টুনের কারণে রাস্তার একপাশ থেকে অন্যপাশ দেখা যায় না। এতে দুর্ঘটনা ঘটছে। এ দুটি সভার মধ্যে প্রথম সভায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম শাওয়াল ছিলেন না। দুই সভার মাঝে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটি পুনর্গঠন করা হলে তিনি পরবর্তী সভায় উপস্থিত ছিলেন।

তবে, কোনো আলোচনা হয়নি দাবি করে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম শাওয়াল বলেন, “আমি আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য। পোস্টার নিয়ে কোনো আলোচনা সভায় হয়নি। ইউএনও আমাদের না জানিয়ে এভাবে ফেস্টুন অপসারণ করে ঠিক করেননি। সেখানে আমাদের নেতার ছবি ছিল।”

ঢাকা/কেয়া/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সারা দেশে সাত দিনে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ২৮৮
  • জুলাইয়ে মব তৈরি করে ১৬ জনকে হত্যা, অজ্ঞাতনামা ৫১ লাশ উদ্ধার
  • শৈলকুপায় ইউপি কার্যালয়ে তালা, বিএনপি নেতাসহ আটক ৬
  • ইউনিয়ন পরিষদে তালা দেয়ায় বিএনপি নেতা আটক
  • গোপালগঞ্জে এনসিপির অনেকের জীবননাশের হুমকি ছিল, আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগ করা হয়েছে
  • ‘ভূমিকম্পে ছিন্নভিন্ন হওয়া দেশকে স্থিতিশীলতায় ফিরিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার’
  • ফেস্টুন অপসারণ করায় ইউএনওকে শাসালেন বিএনপি নেতা 
  • কক্সবাজারে ৩৫ পুলিশ সদস্যের পোশাকে থাকবে ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’
  • ২৯ জুলাই-৮ আগস্ট ‘ফ্যাসিবাদী শক্তির’ নৈরাজ্যের আশঙ্কায় এসবির সতর্কতা
  • ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন