বন্দরের মদনপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রকাশ্যে শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী  যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদের মালিকানাধীন নবনির্মিত বহুতল ভবন উদ্বোধন করতে আমন্ত্রিত অতিথি  নারায়ণগঞ্জ  জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ তিন নেতা। 

ওসমান পরিবারের সহচর  ও ছাত্র-জনতা  হত্যা সহ  একাধিক মামলার  আসামি অহিদের বাড়িতে  নারায়ণগঞ্জের বিএনপির  শীর্ষ  তিন নেতার আগমনের  এ খবরটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে  তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

আমন্ত্রিত অতিথিরা হলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ,  মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড, সাখাওয়াত হোসেন খান  ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু,  বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ।

মাজহারুল ইসলাম হিরণ  অর্থের বিনিময়ে অহিদকে পূর্নবাসনে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ। আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক প্রভাবে  মাদক ব্যবসা ,  দখল, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণসহ  অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থে অহিদের মালিকানাধীন স্পেশালাইজড হসপিটালের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপি শীর্ষ নেতারা আমন্ত্রিত অতিথি হচ্ছেন  বলে ক্ষোভ প্রকাশ  করছেন  মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দ সহ তৃণমূল নেতাকর্মীরা। 

উত্তরাঞ্চলের শীর্ষ সন্ত্রাসী, যুবলীগ নেতা অহিদের অবৈধ টাকায় মদনপুর ফুলহর এলাকায় গড়ে তোলা  বহুতল বভনেই  হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হবে  আগামী ১৪ এপ্রিল  আগামীকাল সোমবার বিকালে। 

উদ্বোধনী এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে আয়োজিত আমন্ত্রণ পত্রে আমন্ত্রিত অতিথিরা হলেন, উদ্বোধী হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজমল খানের সভাপতি, প্রধান অতিথি, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। উদ্বোধক, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড.

সাখাওয়াত হোসেন খান|

বিশেষ অতিথি, সোনারগাঁও উপজেলার বিএনপির সভাপতি আজাহারুল ইসলাম মান্নান, সাধারণ সম্পাদক  মোশাররফ হোসেন  ও কাঁচপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম হক রুমী, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব  আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ,  শিল্পপতি আনোয়ার হোসেন।

স্থানীয়রা  জানান, বিগত আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় ক্ষমতাবলে  অহিদুজ্জামান অহিদ  মদনপুর এলাকায় গড়ে তোলে সন্ত্রাসী বাহিনী। অহিদের নেতৃত্বে  এ বাহিনী নিয়ন্ত্রণে ছিলো মদনপুর এলাকা সহ উত্তরাঞ্চলের  মদক, চাঁদাবাজি,  দখল, ছিনতাই সহ নানা অপকর্ম।

এছাড়াও ক্ষমতার দাপটে অহিদ একই এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী আমির হোসেনের পৈত্রিক  জমি দখল করে অবৈধ  ইটভাটা গড়ে তুলেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে প্রকাশ্য অস্ত্র নিয়ে হামলার  ভিডিও ফেসবুক জুড়ে  ছড়িয়ে পড়েছে।

৫ আগস্ট  হাসিনা দেশ ছাড়ার পর অহিদ পালিয়ে যায়।  তার পর অদৃশ্য ইশারায়  বৈষম্য বিরোধী ছাত্র হত্যা মামলার আসামি হয়েও বহাল তবিয়তে অহিদ।

মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,  অহিদ আগামীর পথ চলা বিএনপির ছায়াতলে।  উপজেলা বিএনপির সভাপতি  হিরণের নিয়ন্ত্রণে পূর্নবাসনের পায়তারা করছে আসছে। আওয়ামী লীগের আমলে  বিএনপি কর্মীদের দাস বানিয়ে ব্যবহার করতেন।

তার  নিয়ন্ত্রণে না  থাকলেই যে কাউকে  ইয়াবা সহ  পুলিশে সোপর্দ করতো।  অদৃশ্য ইশারায় অহিদের  বহুতল বভন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন  জেলার শীর্ষ বিএনপি নেতারা। তাদের উপস্থিতি, আগমন নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ দেখা দিয়েছে   বিএনপি  নেতাকর্মীদের মধ্যে।

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ হ র ল ইসল ম ন র য়ণগঞ জ র ব এনপ র কর ম দ র ন ত কর ম মদনপ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ

ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না। 
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস চালু হচ্ছে ১০ মাস পর
  • অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে, দুই বন্ধু নিহত
  • আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার মাসুম প্রকাশ্যে. আতঙ্ক
  • মে দিবসের সমাবেশকে সফল করতে মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভা 
  • নারায়ণগঞ্জে বালক (অনূর্ধ্ব-১৫) ফুটবল প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
  • নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে তরুণের মৃত্যু
  • নারায়ণগঞ্জের কদম রসুল সেতুর সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ পুনর্নির্ধারণের দাবিতে স্মারকলিপি
  • জেলা প্রশাসককে ২৪’র শহীদদের স্মারক দিল জামায়াত
  • কমিউনিষ্ট পার্টির হাফিজের বিরুদ্ধে ইসমাইলের সংবাদ সম্মেলন
  • কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ