ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রকে কেন বিশ্বের বয়কট করা উচিত
Published: 13th, April 2025 GMT
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীন ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটছে। শিক্ষা, শিল্প, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, সামাজিক কল্যাণ, মানবিক সহায়তা ও স্বাস্থ্যসেবা–ব্যবস্থা ধ্বংসের পথে। আড়াই শতাব্দী ধরে লালিত একটি জাতীয় অবকাঠামো আমাদের চোখের সামনে ভেঙে পড়ছে।
কেউ এটা থামাতে সক্ষম বলে মনে হচ্ছে না। প্রতিরোধের যেটুকু সম্ভাবনা আছে, তা-ও নিরর্থক বলে মনে হচ্ছে।
সিনেটর চাক শুমারের মতো ডেমোক্র্যাট নেতারা ট্রাম্পের আইনগত এজেন্ডার সামনে আত্মসমর্পণ করে নিশ্চুপ হয়ে পড়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ও ট্রাস্টিরা ভয়ে সিঁটিয়ে গেছেন। বড় আইনি প্রতিষ্ঠানগুলো ট্রাম্পের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে প্রস্তুত। প্রযুক্তি শিল্পের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাঁদের লাভের খাতিরে নিজেদের ভোক্তাদের চেয়ে ট্রাম্পের প্রতি বেশি আনুগত্য দেখাচ্ছেন।
বিদেশি ছাত্রদের আটক করা হচ্ছে। আর তাঁরা আটককেন্দ্রগুলোর চার দেয়ালে হারিয়ে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় বিচারব্যবস্থা ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে রায় দিলেও কার্যকর কোনো প্রতিরোধ গড়ে তোলেনি।
অনেক মার্কিন নাগরিক ট্রাম্পের অগ্রাধিকারগুলো সমর্থন করেন। ৫৪ শতাংশ মার্কিন বিশ্বাস করেন, ট্রাম্প তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেনের তুলনায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভালো কাজ করেছেন।
ট্রাম্প দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ অনেক বন্ধু দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করেছেন। তিনি কানাডা ও গ্রিনল্যান্ড দখলের হুমকি দিয়েছিলেন। বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচলের পথ পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ মধ্য আমেরিকার দেশ পানামার কাছে থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন।ট্রাম্প দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ অনেক বন্ধু দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করেছেন। তিনি কানাডা ও গ্রিনল্যান্ড দখলের হুমকি দিয়েছিলেন। বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচলের পথ পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ মধ্য আমেরিকার দেশ পানামার কাছে থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন।
ট্রাম্প ঐতিহাসিক কূটনৈতিক চুক্তিগুলো বাতিল করেছেন। বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও গবেষকদের হুমকি দিয়েছেন যে তারা যদি বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচি পরিত্যাগ না করে, তবে তাদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার পাশাপাশি গবেষণা সহযোগিতা বাতিল করা হতে পারে।
ট্রাম্পঘোষিত ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতার’ দিনে বিপর্যয়
এরপর এল ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি। যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি পণ্য আমদানির ওপর ট্রাম্পের কথায় তাঁর দেশের ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতার’ দিনে তিনি শাস্তিমূলক কর আরোপ করেছেন। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কুঠারাঘাত করেছেন তিনি। চীনা পণ্য আমদানির ওপর ব্যাপক হারে শুল্ক আরোপ করেছেন। তাঁর শুল্কনীতির লক্ষ্য বেছে বেছে বা নিশানা করে কোনো দেশ নয়; বরং যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে এমন প্রায় সব দেশ। এটি সবাইকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
হিটলারের ইউরোপ দখল ও ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দেওয়ার ইতিহাস এখনো এ মহাদেশকে ছায়ার মতো ঢেকে রেখেছে, যা একবার ঘটেছিল, তা আবারও ঘটতে পারে।ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণায় বিশ্ব পুঁজিবাজারে ধস নেমেছে। তিনি গত জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রায় ১১ ট্রিলিয়ন ডলার হারিয়েছে বিশ্ববাজার; যার অর্ধেকের বেশি হয়েছে গত কয়েক দিনে। ব্যবসায়ীরা এটিকে একটি ‘হত্যাযজ্ঞ’ ও ‘রক্তস্নান’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
ট্রাম্পের উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতকে পুনরুজ্জীবিত করার একটি ব্যর্থ চেষ্টা। তাঁর এ আর্থিক নীতি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান, এমনকি গোটা বিশ্বের অর্থনীতিকে ধ্বংসের মুখে ফেলবে। মুখ থুবড়ে পড়বে শিল্পকারখানা।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন শ্রমজীবী মানুষ; যাঁরা দেশ ও বিদেশে চাকরি হারাবেন। গত মাসেই ট্রাম্পের ধ্বংসাত্মক অর্থনৈতিক নীতির কারণে ২ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ চাকরি হারিয়েছেন, যেটা শেষবার দেখা গিয়েছিল কোভিড-১৯ মহামারির সময়। ধনাঢ্য অভিজাত ও ট্রাম্পের স্বাভাবিক মিত্রদের তেমন কিছুই হবে না। প্রেসিডেন্টের নতুন শুল্কনীতিতে তাঁরা বিশাল লাভ করবেন।
ট্রাম্প এমন সামরিক জোটগুলো থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, যেগুলো বহু প্রজন্ম ধরে বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করছে। ইউরোপকেও তিনি রুশ হুমকির মুখে একা ছেড়ে দিয়েছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ প্রতিষ্ঠানগুলো ফেডারেল কর্তৃত্বের কাছে জিম্মি হলেও বাইরের প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রগুলোকে এত সহজে ভয় দেখানো যায় না। তারা অবশ্যই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। দখলদার বা ত্রাস সৃষ্টিকারীরা সফল হওয়ার জন্য ভয় দেখানোর ওপর নির্ভর ও বলপ্রয়োগ করে নিজের স্বার্থ হাসিল করে।
কিছু দেশ মনে করে, মার্কিন শুল্ক থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আত্মসমর্পণ করে একটা চুক্তিতে পৌঁছানোই এখন সবচেয়ে ভালো উপায়। ট্রাম্প বলেছেন, তারা এখন শুল্ক থেকে মুক্তি পেতে সারি বেঁধে অনুরোধ করছে।
ত্রাস সৃষ্টিকারীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো অস্ত্র হলো সংহতি, তথা সমন্বিত ও ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ। তাঁকে দেখিয়ে দিতে হবে যে আপনি ও আপনার মিত্ররা একসঙ্গে তাঁর চেয়েও বেশি শক্তিশালী। তখন স্বভাবতই তিনি পিছু হটবেন।
ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ
এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। ইউরোপ কখনোই ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে কথা বলেনি। কখনো তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ও বিশ্বশক্তির বিশ্বাসঘাতকতার মুখোমুখি হয়নি। এখন প্রশ্ন হলো এই বিচিত্র ও অনেক সময় বিপরীতমুখী স্বার্থের রাষ্ট্রগুলো কি একটি সাধারণ লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে। তারা কি আঞ্চলিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নিজেদের ঐতিহাসিক ঐকমত্যভিত্তিক নীতিমালা ত্যাগ করতে পারবে, যাতে হাঙ্গেরির মতো একগুঁয়ে রাষ্ট্রগুলোকে পাশ কাটানো যায়?
এ প্রশ্নগুলোর উত্তরই নির্ধারণ করবে ইউরোপের ভবিষ্যৎ। যদি এ রাষ্ট্রগুলো ব্যর্থ হয়, তবে কিছু দেশের পরিণতি হতে পারে রাশিয়ার অধীন রাজ্য হিসেবে। এসব দেশ ট্রাম্পের একই রকম হুমকির মুখে পড়তে পারে, যেমনটি তিনি গ্রিনল্যান্ড, মেক্সিকো ও কানাডাকে দিয়েছিলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া আগ্রাসী শুল্কনীতি বিশ্বকে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ষ ট রগ ল কর ছ ন ইউর প সবচ য় ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ভিসা ও প্রযুক্তি দিয়ে আসিয়ানে সংযোগ বাড়াচ্ছে চীন
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সদস্যরা এখনও মধ্যম আয়ের ফাঁদে আটকা। এসব দেশে বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ কম থাকায় গবেষণা ও উন্নয়নে তেমন অগ্রগতি নেই। প্রযুক্তির সীমিত বিস্তারের কারণে আজও এই অঞ্চলটি পেছনে পড়ে আছে। শিল্প খাতে অপর্যাপ্ত বিনিয়োগ ও নিম্নমানের শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়নেও অঞ্চলটি পিছিয়ে।
প্রতিরক্ষা খাত দুর্বল হওয়ায় পরিবর্তিত ঝুঁকি ও হুমকির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট সাহস নেই দেশগুলোর। এ কারণে মিয়ানমার সংকটে শক্তিশালী কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছে না জোটটি। এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বহিরাগত শক্তি এই অঞ্চলে ক্রমশ জেঁকে বসছে। বিশেষ করে চীন বিনিয়োগের পাশাপাশি ভিসা ও প্রযুক্তির ব্যবহার করে আসিয়ানে সংযোগ বাড়াচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমার সংকট নিয়ে আসিয়ান এখনও বিভক্ত। একদিকে চীনের প্রভাব আসিয়ানকে মিয়ানমারে পদক্ষেপ নিতে বাধা দিচ্ছে, অন্যদিকে বহিরাগত শক্তির ওপর নির্ভরতা নিজেদের সক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করছে। আঞ্চলিক নেতৃত্ব এবং ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক দৃশ্যপটে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা না রাখায় মিয়ানমার সংকট গভীর হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এই অঞ্চল ঘিরে চীন প্রতিরক্ষাসহ নানা খাতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। থেমে নেই যুক্তরাষ্ট্রও। উৎপাদন ও প্রযুক্তি খাতে যথেষ্ট উন্নতি না করতে পারায় দেশগুলো সামনের দিকে অগ্রসর হতে বাধা পাচ্ছে।
শক্তিশালী শাসনব্যবস্থার অভাবে তারা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারছে না। এই অবস্থায় এই অঞ্চলে অর্থনীতির কাঠামোগত রূপান্তর প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
আসিয়ানের সদস্য দেশগুলো হলো- ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম।
১০ দেশের এই জোটটির লক্ষ্য দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। আসিয়ানে গড় মাথাপিছু আয় প্রায় ৫ হাজার ৩০০ ডলার এবং দেশগুলোর সম্মিলিত জিডিপি প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন ডলার।
আসিয়ান কোন দিকে ঝুঁকছে, যুক্তরাষ্ট্র না চীন- এই প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ নিক্কেই এশিয়ায় এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, দেশগুলোর উচিত বেইজিংয়ের প্রবৃদ্ধি থেকে লাভবান হওয়া। তিনি ভারতের সঙ্গেও বাণিজ্য বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।
অন্যদিকে মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কলিন্স চং ইউ কিট মনে করেন, আত্মরক্ষার নিজস্ব শক্তি ও ক্ষমতা অর্জন না করা পর্যন্ত আসিয়ান দেশগুলোকে মার্কিন নিরাপত্তার ছাতার তলেই থাকতে হবে।
অধ্যাপক কলিন্স ইউরেশিয়া রিভিউকে বলেন, গত কয়েক দশক ধরে আসিয়ান দেশগুলো নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের ওপর নির্ভর করেছে। হঠাৎ করে চীন এই অবস্থানে যেতে পারবে না। আসিয়ান দেশগুলো এটা ভালো করেই জানে। যদিও বেইজিংকে এই অঞ্চলের প্রধান অর্থনৈতিক বিকল্প ও সম্পদের প্রধান সরবরাহকারী হিসেবে দেখা হয়।
গালফ নিউজের সিনিয়র বিশ্লেষক বলরাম মেনন মনে করেন, অনেক বছর ধরে আসিয়ানসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করে আসছে। অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্র ভোক্তা বাজার সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। তাছাড়া প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বিনিয়োগও বাড়াতে চায় ওয়াশিংটন।
থাইল্যান্ডের মাহিদোল ইউনিভার্সিটি ইন্টারন্যাশনাল কলেজের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উইলিয়াম জে জোন্স মনে করেন, আসিয়ান রাষ্ট্রগুলোকে বহিরাগত শক্তির কাছে ঐক্যবদ্ধ বিশ্বাসযোগ্যতা প্রদর্শন করতে ইচ্ছুক হতে হবে। ট্রাম্পের বৈদেশিক নীতির পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে পূর্ব এশিয়াও। এজন্য আসিয়ানকে বাস্তবসম্মতভাবে একটি ঐক্যফ্রন্ট উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
আসিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করছে চীন
ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা ও ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্যে আসিয়ান ও চীনের মধ্যে সহযোগিতার গভীরতা আগের চেয়ে বেড়েছে। চীন দেশগুলোর সঙ্গে সখ্য গড়তে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহারকে গুরুত্ব দিচ্ছে। দেশগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা চীনকে এআই প্রযুক্তি কাজে লাগাতে পরামর্শ দিয়েছেন।
এছাড়া চীন আঞ্চলিক সংযোগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য চালু করেছে ‘আসিয়ান ভিসা’। আন্তঃসীমান্ত ভ্রমণ এবং আঞ্চলিক একীকরণে এটি চীনের বড় পদক্ষেপ।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান মনে করেন, নতুন ভিসা সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যমান পারস্পরিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করবে।
গত ২৭ মে কুয়ালালামপুরে হয়ে গেল আসিয়ান-চীন-জিসিসি (উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ) শীর্ষ সম্মেলন। তিনটি পক্ষ তাদের নিজ বাজারকে সংযুক্ত করার মাধ্যমে বিশাল অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ উন্মোচন করতে পারে। তিন পক্ষের সম্মিলিত শক্তি বিশ্ব অর্থনৈতিক দৃশ্যপটকে নতুন রূপ দিতে পারে।
ক্ষমতার আধিপত্য বজায় রেখেছে ওয়াশিংটন
অধ্যাপক কলিন্স চং ইউ কিট মনে করেন, আসিয়ানে প্রযুক্তিগত আধিপত্যসহ অর্থনৈতিক ও সামরিক খাতে আগামী ৫০ বছর ওয়াশিংটন প্রধান ভূমিকায় থাকবে। এই সময়ের মধ্যে দেশগুলোতে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক বিভাজন ঘটতে পারে। ফলে বিনিয়োগ, প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তার জন্য তারা বিদেশি শক্তির ওপর আরও নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। এসব ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই সুবিধা নেবে যুক্তরাষ্ট্র।
কঠোর নিরপেক্ষতা থাকা সত্ত্বেও আসিয়ান দেশগুলো প্রায় নিশ্চিতভাবেই নতুন সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে বলেও মনে করেন কলিন্স চং। তিনি বলেন, দক্ষিণ চীন সাগর ও তাইওয়ান কেন্ত্রিক এই সংঘাত শুরু হতে পারে। এই সংঘাতে ওয়াশিংটন যুক্ত হয়ে পড়লে দক্ষিণ চীন সাগরে চীন বেকায়দায় পড়বে। ফলে আসিয়ান দেশগুলোর মধ্যে আরও অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা থাকবে।
সূত্র: গালফ নিউজ, ইউরেশিয়া রিভিউ, ইস্ট এশিয়া ফোরাম