সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে মতামত দিল আরও দুই দল
Published: 13th, April 2025 GMT
সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে লিখিত মতামত জমা দিয়েছে গণফোরাম ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।
আজ রোববার দল দুটির প্রতিনিধিরা আলাদাভাবে জাতীয় সংসদ ভবনে কমিশনের কার্যালয়ে গিয়ে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের কাছে মতামত জমা দেন। এ নিয়ে দেশের ৩৪টি রাজনৈতিক দল কমিশনের কাছে লিখিত মতামত দিল।
আজ প্রথমে সংস্কারের সুপারিশ নিয়ে নিজেদের প্রস্তাব জমা দেয় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। পরে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেয় দলটির মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম এর আগে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে নিজেদের মতামত জানিয়েছিল। আজ বাকি চারটি সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে নিজেদের মতামত জমা দেয় দলটি।
দল দুটির মতামত জমা দেওয়ার সময় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করে।
প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান, জনপ্রশাসন, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চায় এ কমিশন। সুপারিশগুলো স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। ১৩ মার্চের মধ্যে দলগুলোকে মতামত দিতে বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুনসংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য না হয়ে নির্বাচনে গেলে শঙ্কা দেখা দেবে: জামায়াত১৭ ঘণ্টা আগেআজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৩৪টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে মতামত পাওয়া গেছে। মতামতের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা শুরু করেছে কমিশন। ইতিমধ্যে আটটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা শেষ করেছে কমিশন। ১৫ এপ্রিল জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও বাংলাদেশ বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সঙ্গে এবং ১৭ এপ্রিল বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসবে কমিশন।
আরও পড়ুনডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করতে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার২০ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনসংস্কার নিয়ে মতামত দিল আরও দুই দল০৯ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র মত মত মত মত জ মত মত দ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।
আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।
এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।
নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।
জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।