হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে সরকারি টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে বাধা দেওয়ার জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। রোববার জলসুখা ইউনিয়নের মধ্যপাড়ায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় আব্দুর রহমান ওরফে বক্কা মেম্বার এবং আলাউদ্দিন মেম্বারের লোকজনের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে আহত হয়েছেন পুলিশ সদস্যও। এ সময় পুলিশ সংঘর্ষে জড়িতদের ছত্রভঙ্গ করতে তিন রাউন্ড টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

সংঘর্ষে আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে এনামুল, বাহার, মেহেদী, কাওসার, ফয়সাল, জাহিদুল, ভুট্টু মিয়া, আফদাল, তকদির, জিয়াউর, রাতুল, শামিম, জফর উদ্দিন, শাওন ও শামীমের পরিচয় জানা গেছে।  অবস্থা গুরুতর হওয়ায় এনামুল, কাউছার ও শামীম মিয়াকে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার সকালে বক্কা মেম্বারের পক্ষের অলি মিয়ার মেয়ে ফারজানা বেগম বাড়ির পাশের আলাউদ্দিন মেম্বারের মেয়ের জামাতা ওয়াহিদ মিয়ার বাড়ির সামনে স্থাপিত সরকারি নলকূপ থেকে খাবার পানি আনতে যায়। এ সময় আলাউদ্দিন মেম্বারের অনুসারী আজমান মিয়ার ছেলে ওয়াসিম মিয়া তাঁকে পানি নিতে বারণ করেন। এতে দু’জনের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে রোববার জলসুখা বাজারে অলি মিয়া ও আজমান মিয়ার মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এর জের ধরে বক্কা মেম্বার ও আলাউদ্দিন মেম্বারের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়।

সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আজমিরীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জিয়াউর রহমান এবং আরও এক পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ তিন রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশকে সহায়তা দেয়।

আজমিরীগঞ্জ থানার ওসি এ বি এম মাঈদুল হাছান বলেন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ আহত পর স থ ত স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ 

রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।

জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’ 

এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ