ইরাকের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ ধূলিঝড় বয়ে গেছে। এতে হাজারেরও বেশি মানুষ শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতায় পড়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা যায়, ঘন কমলা রঙের ধুলার চাদরে আচ্ছাদিত হয়ে পড়েছে চারপাশ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ওই এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা ও বিভিন্ন অঞ্চলে ফ্লাইট স্থগিত থাকার খবর দিয়েছে।

ইরাকে ধূলিঝড় একটি সাধারণ ঘটনা। তবে কিছু বিশেষজ্ঞের মতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এগুলো এখন আরও ঘন ঘন ঘটছে।

এএফপির তথ্য অনুযায়ী, পথচারী ও পুলিশ সদস্যরা ধুলোর হাত থেকে বাঁচতে মাস্ক পরে চলাফেরা করছিলেন এবং অ্যাম্বুলেন্স কর্মীরা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত মানুষদের সাহায্য করছিলেন।

নজাফ প্রদেশে ২৫০ জনের বেশি মানুষকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। দিওয়ানিয়াহ প্রদেশে শিশুসহ অন্তত ৩২২ জন রোগীকে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার কারণে ভর্তি করা হয়েছে। আরও ৫৩০ জন ধিকার ও বসরা প্রদেশে শ্বাসকষ্টের অভিযোগ করেছেন। ধূলিঝড়ের কারণে প্রশাসন নজাফ ও বসরা প্রদেশের বিমানবন্দরগুলো বন্ধ করতে বাধ্য হয়।

স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, মঙ্গলবার সকাল নাগাদ পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

জাতিসংঘের তালিকা অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা পাঁচটি দেশের মধ্যে ইরাক একটি। দেশটিতে নিয়মিত ধূলিঝড়, প্রচণ্ড গরম ও পানি সংকট দেখা দেয়।

ইরাকের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মতে, ভবিষ্যতে দেশটি আরও বেশি ‘ধুলির দিন’ দেখবে।

মুথান্না প্রদেশের এক কর্মকর্তা এএফপি সংবাদ সংস্থাকে জানান, সেখানে কমপক্ষে ৭০০টি দমবন্ধ জনিত সমস্যার ঘটনা ঘটেছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ব সজন ত র গ শ ব সকষ ট ধ ল ঝড়

এছাড়াও পড়ুন:

এককালের প্রেম যখন উপেক্ষিত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার পুরনো বন্ধু কিম জং উনের সাথে সাম্প্রতিক এশিয়া সফরে হঠাৎ করেই আলোচনার আশা করেছিলেন। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এ ব্যাপারে কোনো সাড়া দেননি। 

ট্রাম্প তার এশিয়া সফরের সময় কিমকে বারবার আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেছিলেন,  তিনি বৈঠকের জন্য শতভাগ উন্মুক্ত। এমনকি ট্রাম্প কয়েক দশক ধরে মার্কিন নীতির বিপক্ষে গিয়ে স্বীকার করেছেন যে উত্তর কোরিয়া ‘এক ধরণের পারমাণবিক শক্তিধর।’

কিন্তু পিয়ংইয়ং আমন্ত্রণে চুপ ছিল। এর পরিবর্তে তারা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে এবং রাশিয়া ও বেলারুশে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছে, যাদের সাথে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সম্পর্ক আরো গভীর হয়েছে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়া সেন্টারের একজন ভিজিটিং স্কলার সিওং-হিওন লি বলেন, “নিষ্ঠুর বাস্তবতা হল যে কিম জং উনের অংশগ্রহণের কোনো উৎসাহ ছিল না। ওয়াশিংটনের বিশ্বাস করা যে তিনি আসবেন, এটি একটি মৌলিক ভুল হিসাব ছিল।”

লি জানান, ট্রাম্পের বারবার প্রস্তাব উত্তর কোরিয়ার নেতার জন্য একটি ‘বিজয়’ হিসেবে দেখা যায়, যা তাকে এবং তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে বিশাল মাত্রার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রদান করে।

তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কিমকে একটি বিশাল, অপ্রাপ্ত ছাড় দিয়েছেন।”

২০১৯ সালে শেষবারের মতো ডিমিলিটারাইজড জোনের (ডিএমজেড) পানমুনজমে দেখা করেছিলেন ট্রাম্প ও কিম জং উন। ট্রাম্পের নেতৃত্বে পিয়ংইয়ংয়ের সাথে সেই বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সুযোগের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়।

তারপর থেকে উত্তর কোরিয়া নিজেকে একটি‘অপরিবর্তনীয়’ পারমাণবিক রাষ্ট্র ঘোষণা করেছে এবং রাশিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মস্কোকে সমর্থন করার জন্য সেনা পাঠিয়েছে।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-এর সাবেক বিশ্লেষক সু কিম এএফপিকে বলেছেন, কিম এখন ‘বেশ স্বাচ্ছ্যন্দের জায়গায়’ আছেন।

তিনি বলেন, “রাশিয়ার সমর্থন সম্ভবত আজকাল উত্তর কোরিয়ার কৌশলগত হাতকে শক্তিশালী এবং দৃঢ় করার সবচেয়ে নির্ধারক কারণগুলোর মধ্যে একটি। তিনিই (উন) সর্বোচ্চ ক্ষমতা ধরে রেখেছেন, যার ফলে ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানানো তার পক্ষে সহজ হয়ে যায়।”

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বাড়ি ফিরে চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠকের সময় ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি কিমের সাথে দেখা করার জন্য খুব ‘ব্যস্ত’ ছিলেন।

দৃশ্যটি ২০১৯ সালের থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত ছিল, যখন ভিয়েতনামের হ্যানয়ে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার আলোচনা নাটকীয়ভাবে ভেঙে পড়েছিল - কিমকে কোনো চুক্তি ছাড়াই পিয়ংইয়ং ফিরে যাওয়ার জন্য দীর্ঘ ট্রেন যাত্রা সহ্য করতে হয়েছিল।

অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোরিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক ভ্লাদিমির টিখোনভ এএফপিকে বলেছেন, “অভিজ্ঞতা পিয়ংইয়ংকে বেদনাদায়ক করে তুলেছে। তারা খুব তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে যেতে চায় না।” 

তিনি জানান, পিয়ংইয়ং ট্রাম্পের কাছ থেকে আরো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের জন্য অপেক্ষা করছে, যার মধ্যে রয়েছে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক স্বীকৃতি এবং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ছাড়াই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার।
 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তাঞ্জানিয়ায় নির্বাচনী বিক্ষোভে নিহত ৭০০
  • এককালের প্রেম যখন উপেক্ষিত