জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) আট দফা দাবি উত্থাপন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবি শাখা ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবিগুলো উত্থাপন করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলন যৌথভাবে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র নওশীন নাওয়ার জয়া এবং কেন্দ্রীয় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক কিশোর সাম্য। লিখিত বক্তব্যে তারা এ দাবিগুরো তুলে ধরেন। একইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়ন না করলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দেন।

লিখিত বক্তব্যে নওশীন নাওয়ার জয়া বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ গত ৫ আগস্ট থেকে শিক্ষার্থীবান্ধব ন্যায়সঙ্গত দাবি-দাওয়া উত্থাপন করে আসছে। দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো অগ্রগতি বা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। এ প্রেক্ষিতে আমরা গভীর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান বৈষম্য অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেও শিক্ষার্থীরা যথাযথ প্রতিকার পাচ্ছে না। আমাদের উত্থাপিত দাবিসমূহের পুঙ্খানুপুঙ্খ বাস্তবায়ন এবং প্রশাসনের সর্বশেষ উদ্যোগের ভিত্তিতে একটি সুস্পষ্ট রোডমাপ প্রকাশের জন্য আমরা নিম্নোক্ত আট দফা দাবি ঘোষণা করছি।”

লিখিত বক্তব্যে কিশোর সাম্য বলেন, “এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে আমরা বৃহত্তর ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হব। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান, দায়িত্বশীলতা ও শিক্ষার্থী স্বার্থের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়ন করুন।”

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ফ্যাসিস্ট হামলাকারী ও ইন্ধনদাতাদের বিচারের আওতায় আনা; আহত শিক্ষার্থীদের সব অ্যাকাডেমিক ফি মওকুফ; গত ১৫ বছরে সকল নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছ তদন্ত ও প্রতিবেদন প্রকাশ; দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত সম্পন্ন ও অগ্রগতির প্রকাশ।

অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০ কার্যদিবসের মধ্যে সব দুর্নীতির শ্বেতপত্র উপস্থাপন; শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন; আবাসন বৃত্তি প্রদান ও আনুপাতিক বাজেট বরাদ্দকরণ; সমাবর্তন আয়েজন এবং তিন কর্মদিবসের মধ্যে জকসুর নীতিমালা ও নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশ।

সংবাদ সম্মেলনে জবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মাসুদ রানা, সদস্য সচিব সিফাত হাসানসহ বৈষম্যবিরোধী ও কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেছে পাকিস্তান

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তান বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। গত বুধবার রাতে দুই দেশের মধ্যে এ চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। এর ফলে পারস্পরিক শুল্ক কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। যদিও কোনো দেশই নির্দিষ্টভাবে শুল্কহার নিয়ে কোনো ঘোষণা দেয়নি।

এদিকে, চুক্তির অংশ হিসেবে পাকিস্তানের তেলসম্পদ উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর ডনের।

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব বর্তমানে ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন। পাল্টা শুল্ক নিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। বুধবারই তাঁর সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার, বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিকের বৈঠক হয়।

চুক্তি স্বাক্ষরের পরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত পাকিস্তান দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে জানায়, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বাজার প্রবেশাধিকার জোরদার করা এবং বিনিয়োগ আকর্ষণ ও পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণ করাই এ চুক্তির মূল লক্ষ্য।

পাকিস্তান দূতাবাস আরও জানায়, চুক্তির ফলে পাকিস্তানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক কমবে। এতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য আরও ভালো হবে। অবকাঠামো ও উন্নয়ন খাতেও যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাড়বে।

অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ‘আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি। এখন থেকে দেশটির বিশাল তেলসম্পদের উন্নয়নে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে।’ ট্রাম্প আরও লেখেন, ‘আমরা এখন তেল কোম্পানি বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় আছি। কে জানে, একদিন হয়তো পাকিস্তান ভারতেও তেল রপ্তানি করবে!’

তবে চুক্তিটির বিস্তারিত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

এ চুক্তির বিষয়ে আজ সকালে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি এক্সে লেখেন, ‘এই ঐতিহাসিক চুক্তি আমাদের স্থায়ী অংশীদারত্বকে আরও জোরদার করবে। ট্রাম্প প্রশাসনের নেতৃত্বে এমন একটি চুক্তি সম্ভব হয়েছে বলে আমি কৃতজ্ঞ।’

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী আওরঙ্গজেব চুক্তিটিকে ‘উইন-উইন’ বা উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক বলে বর্ণনা করেছেন। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘যে যাত্রা আমরা কয়েক মাস আগে শুরু করেছিলাম, আজ তা সফলভাবে শেষ হলো।’

আওরঙ্গজেব আরও বলেন, ‘শুল্ক আলোচনার পাশাপাশি অশুল্ক বাধা, বাণিজ্য ভারসাম্য ও শুল্ক কাঠামোর পুনর্মূল্যায়ন নিয়েও আমরা কাজ করেছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ