চলতি বছরের ইন্টারন্যাশনাল বুকার পুরস্কারের দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ তালিকার ১৩ জন লেখকের সবাই প্রথমবারের মতো স্থান পেয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন স্থান করে নিয়েছেন তাঁদের প্রথম বই নিয়ে। আটজন এবারই প্রথম বইয়ের ইংরেজি অনুবাদ নিয়ে আন্তর্জাতিক এ পুরস্কারের তালিকায় জায়গা পেয়েছেন। শুধু একজন অনুবাদক ব্যতিক্রম, সোফি হিউজ।  
সোফি পঞ্চমবারের মতো এবারের তালিকায় আছেন। ইতালির লেখক ভিনসেঞ্জো লাত্রোনিকার ‘পারফেকশন’ উপন্যাসের অনুবাদক হিসেবে রয়েছেন সোফি হিউজ। তিনি ছাড়াও আরও তিনজন অনুবাদক আগেও স্থান পেয়েছেন বুকারের তালিকায়। 
বুকারের দীর্ঘ তালিকায় ভারতের কর্ণাটকের কন্নড় ভাষার লেখক বানু মুস্তাকের লেখা দীপা ভাস্তি অনূদিত ‘হার্ট ল্যাম্প’ উপন্যাসও রয়েছে। কন্নড় ভাষার প্রথম কোনো লেখা এ তালিকায় এলো। 
সাম্প্রতিক নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হান কাং তাঁর গ্রন্থ ‘উই ডু নট পার্ট’-এর জন্য এই বছরের পুরস্কারের জন্য যোগ্য ছিলেন। তবে তিনি তালিকায় স্থান পাননি। এর আগে ২০১৬ সালে তাঁর যুগান্তকারী উপন্যাস ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ ডেবোরা স্মিথ অনুবাদ করেছিলেন, যার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক বুকার জিতেছিলেন। ক্যাং ছাড়াও, পূর্ববর্তী লেখকদের মধ্যে রয়েছেন ওলগা তোকারচুক এবং লুকাস রিজনেভেল্ড। গত বছর, জেনি এরপেনবেক এবং অনুবাদক মাইকেল হফম্যান কায়রোসের জন্য পুরস্কার জিতেছিলেন।
তালিকার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : সোলেনয়েড— লেখক, কার্তারেস্কু; হার্ট ল্যাম্প— লেখক বানু মুশতাক, অনুবাদক দীপা ভাস্থি; আন্ডার দ্য আই অফ দ্য বিগ বার্ড— লেখক কাওয়াকামি; ইউরোট্র্যাশ— লেখক, ক্রিস্টিয়ান ক্রাচট; দ্য বুক অফ ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স— লেখক, ইবতিসাম আজেম, অনুবাদক সিনান আন্তন; অন আ ওম্যান’স ম্যাডনেস— লেখক, অ্যাস্ট্রিড রোমার, অনুবাদক লুসি স্কট। বিচারক প্যানেলে রয়েছেন, ম্যাক্স পোর্টার, কালেব ফেমি, সানা গোয়েল, আন্তন হার, বেথ অরটন প্রমুখ। বিচারকরা প্রকাশকদের দ্বারা জমা দেওয়া ১৫৪টি বই থেকে তালিকাটি নির্বাচন করেছেন। 
এবারের বিচারক প্রধান লেখক ম্যাক্স পোর্টার বলেন, ‘অনুবাদের বই সম্পর্কে বলা যায়, এগুলোতে সম্ভাব্য সব জায়গার সব রকমের গল্প আছে। সবার জন্য প্রযোজ্য। আমাদের মধ্যে মিল-অমিল দুটোই থাকতে পারে। তবে দেয়াল থাকতে পারে না। অনুবাদের মাধ্যমে আমরা মাঝের এই দেয়াল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারি।’
এ বছর মে মাসের ২০ তারিখ লন্ডনের টেট মডার্নে আনুষ্ঠানিকভাবে ৫০ হাজার পাউন্ড মূল্যমানের ইন্টারন্যাশনাল বুকার পুরস্কারপ্রাপ্তদের চূড়ান্ত নাম ঘোষণা করা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বই প রস ক র অন ব দ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ