ইন্টারন্যাশনাল বুকার প্রাইজে মনোনয়ন
Published: 17th, April 2025 GMT
চলতি বছরের ইন্টারন্যাশনাল বুকার পুরস্কারের দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ তালিকার ১৩ জন লেখকের সবাই প্রথমবারের মতো স্থান পেয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন স্থান করে নিয়েছেন তাঁদের প্রথম বই নিয়ে। আটজন এবারই প্রথম বইয়ের ইংরেজি অনুবাদ নিয়ে আন্তর্জাতিক এ পুরস্কারের তালিকায় জায়গা পেয়েছেন। শুধু একজন অনুবাদক ব্যতিক্রম, সোফি হিউজ।
সোফি পঞ্চমবারের মতো এবারের তালিকায় আছেন। ইতালির লেখক ভিনসেঞ্জো লাত্রোনিকার ‘পারফেকশন’ উপন্যাসের অনুবাদক হিসেবে রয়েছেন সোফি হিউজ। তিনি ছাড়াও আরও তিনজন অনুবাদক আগেও স্থান পেয়েছেন বুকারের তালিকায়।
বুকারের দীর্ঘ তালিকায় ভারতের কর্ণাটকের কন্নড় ভাষার লেখক বানু মুস্তাকের লেখা দীপা ভাস্তি অনূদিত ‘হার্ট ল্যাম্প’ উপন্যাসও রয়েছে। কন্নড় ভাষার প্রথম কোনো লেখা এ তালিকায় এলো।
সাম্প্রতিক নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হান কাং তাঁর গ্রন্থ ‘উই ডু নট পার্ট’-এর জন্য এই বছরের পুরস্কারের জন্য যোগ্য ছিলেন। তবে তিনি তালিকায় স্থান পাননি। এর আগে ২০১৬ সালে তাঁর যুগান্তকারী উপন্যাস ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ ডেবোরা স্মিথ অনুবাদ করেছিলেন, যার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক বুকার জিতেছিলেন। ক্যাং ছাড়াও, পূর্ববর্তী লেখকদের মধ্যে রয়েছেন ওলগা তোকারচুক এবং লুকাস রিজনেভেল্ড। গত বছর, জেনি এরপেনবেক এবং অনুবাদক মাইকেল হফম্যান কায়রোসের জন্য পুরস্কার জিতেছিলেন।
তালিকার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : সোলেনয়েড— লেখক, কার্তারেস্কু; হার্ট ল্যাম্প— লেখক বানু মুশতাক, অনুবাদক দীপা ভাস্থি; আন্ডার দ্য আই অফ দ্য বিগ বার্ড— লেখক কাওয়াকামি; ইউরোট্র্যাশ— লেখক, ক্রিস্টিয়ান ক্রাচট; দ্য বুক অফ ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স— লেখক, ইবতিসাম আজেম, অনুবাদক সিনান আন্তন; অন আ ওম্যান’স ম্যাডনেস— লেখক, অ্যাস্ট্রিড রোমার, অনুবাদক লুসি স্কট। বিচারক প্যানেলে রয়েছেন, ম্যাক্স পোর্টার, কালেব ফেমি, সানা গোয়েল, আন্তন হার, বেথ অরটন প্রমুখ। বিচারকরা প্রকাশকদের দ্বারা জমা দেওয়া ১৫৪টি বই থেকে তালিকাটি নির্বাচন করেছেন।
এবারের বিচারক প্রধান লেখক ম্যাক্স পোর্টার বলেন, ‘অনুবাদের বই সম্পর্কে বলা যায়, এগুলোতে সম্ভাব্য সব জায়গার সব রকমের গল্প আছে। সবার জন্য প্রযোজ্য। আমাদের মধ্যে মিল-অমিল দুটোই থাকতে পারে। তবে দেয়াল থাকতে পারে না। অনুবাদের মাধ্যমে আমরা মাঝের এই দেয়াল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারি।’
এ বছর মে মাসের ২০ তারিখ লন্ডনের টেট মডার্নে আনুষ্ঠানিকভাবে ৫০ হাজার পাউন্ড মূল্যমানের ইন্টারন্যাশনাল বুকার পুরস্কারপ্রাপ্তদের চূড়ান্ত নাম ঘোষণা করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বই প রস ক র অন ব দ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বাণিজ্যবিরোধ: ভারত কেন ট্রাম্পের নিশানায়
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের বাণিজ্যনীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। ভারতীয় পণ্যের ওপর হোয়াইট হাউসের শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তুতি নেওয়ার পর থেকেই এ আক্রমণের মাত্রা বেড়েছে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর প্রশাসন আজ শুক্রবার (১ আগস্ট) থেকে ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করছে এবং এর পাশাপাশি অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ট্রাম্প যখন বিশ্বের বহু দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছিলেন, তখনই ভারতকে উদ্দেশ করে তাঁর এমন কঠোর অবস্থান সামনে উঠে আসে।
হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
‘ভারতের শুল্ক বিশ্বে অন্যতম সর্বোচ্চ’, গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন মন্তব্য করেন ট্রাম্প। জবাবে ভারত সরকার জানিয়েছে, তারা ট্রাম্পের বক্তব্য ‘লক্ষ্য করেছে’ এবং এর ‘প্রভাব মূল্যায়ন’ করবে।
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্যবিরোধ: পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়িয়ে
আজ থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্পের ধার্য করা ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক গত ২ এপ্রিল হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে ঘোষিত সম্ভাব্য শুল্ক থেকে মাত্র ১ শতাংশ কম।
এ হার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ শুল্কের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশ শুল্কের চেয়ে কিছুটা কম।
হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।এ শুল্ক ভারতের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা আরও জটিল করে তুলতে পারে। একাধিক দফা আলোচনার মধ্য দিয়ে উভয় পক্ষ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ১২তম বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার ভারত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে নেওয়া অনেক কোম্পানির নতুন গন্তব্য হয়েছে দেশটি। মে মাসে অ্যাপলের সিইও টিম কুক জানান, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য আইফোন এখন ভারতে উৎপাদিত হচ্ছে; যাতে উচ্চ শুল্ক এড়ানো যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ওটিআর) তথ্যমতে, গত বছর ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাণিজ্যের মোট পরিমাণ ছিল প্রায় ১২৯ বিলিয়ন (১২ হাজার ৯০০ কোটি) ডলার। ভারতের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পোশাক, রাসায়নিক, যন্ত্রপাতি ও কৃষিপণ্য।
ট্রাম্প কেন ভারতকে নিশানা করছেন
সম্প্রতি ট্রাম্প একাধিকবার বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভারতের ‘অতি উচ্চ’ শুল্ক আরোপের সমালোচনা করেছেন। এর মধ্যে কৃষিপণ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যও রয়েছে।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, ‘বছরের পর বছর আমরা ভারতের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে খুব কম ব্যবসা করেছি। কারণ, তাদের শুল্ক অত্যন্ত বেশি।’
এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টদেশীয় শিল্পকে রক্ষা করতে ভারত কিছু পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপ করেছে।
ওটিআরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে পণ্যবাণিজ্যে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন (৪ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের ঘাটতি দেখেছে। এটি আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। তুলনামূলকভাবে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে প্রায় ২৯৫ বিলিয়ন (২৯ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের বাণিজ্যঘাটতিতে ছিল।
আরও পড়ুনভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা, ইরানের পণ্যের বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগ ৩১ জুলাই ২০২৫ট্রাম্প আরও ক্ষুব্ধ যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে।
‘এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা’, বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন ট্রাম্প।
ভারতের প্রতিক্রিয়া
এ সপ্তাহে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ভারত সরকার ট্রাম্পের ওই বক্তব্যে তুলনামূলকভাবে মৃদু, তবে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
ভারতের ওপর ধার্য করা শুল্কহার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশের চেয়ে কিছুটা কম।বুধবার দেওয়া এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কয়েক মাস ধরে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সরকার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।’
আগস্টের শেষ দিকে দুই দেশের মধ্যে আরেক দফা বাণিজ্য আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুনভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য আলাদা ‘দণ্ড’৩০ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্কে ভারতের অর্থনীতি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কী বলছেন অর্থনীতিবিদেরা১৪ ঘণ্টা আগে