খাগড়াছড়ি থেকে অপহরণের আট দিন পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বৃহস্পতিবার বিকেলে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল পাঁচজনের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এছাড়া বিকাল ৩টার দিকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) সভাপতি নিপন ত্রিপুরাও তাদের মুক্তির বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

পিসিপি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তথ্য ও প্রচার সম্পাদক রিবেক চাকমার সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- পিসিপি চবির শাখা সদস্য রিশন চাকমা ও তার চার বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো এবং চারুকলা বিভাগের অলড্রিন ত্রিপুরাকে ধাপে ধাপে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে পিসিপি।

বর্ষবরণের বিঝু উৎসব শেষে চট্টগ্রামে ফেরার পথে ১৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৬টায় খাগড়াছড়ির সদর উপজেলার গিরিফুল এলাকা থেকে পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা একজন গাড়ি চালককেও তুলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনার জন্য সন্তু লালমার সমর্থক পিসিপি অংশের নেতারা শুরু থেকেই পাহাড়ের তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক সংগঠন ইউপিডিএফকে দায়ী করলেও; প্রসীত খিসার নেতৃত্বাধীন অংশটি তা অস্বীকার করে আসছিল।

পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির দাবিতে পার্বত্য তিন জেলায় ধারাবাহিক বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থীরা। ৯ দিন পর তাদের মুক্তির খবর এল।

পিসিপি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির দাবিতে আপামর সাধারণ শিক্ষার্থী, প্রগতিশীল ব্যক্তি ও ছাত্র সংগঠনসমূহ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তোলে। অবশেষে ব্যাপক জনরোষের মুখে পড়ে অপহরণকারীরা কয়েক দফায় মুক্তি দিয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির দাবিতে যারা সোচ্চার ছিলেন বিশেষ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অপহরণ

এছাড়াও পড়ুন:

সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্যের ৪৫% রাজনৈতিক

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত ভুল তথ্য ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এ সময়ে যাচাই করা ভুল তথ্যের ৪৫ শতাংশই ছিল রাজনৈতিক। গতকাল বুধবার তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত ভুল তথ্য ছিল ১ শতাংশ। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে তা বেড়ে ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সংখ্যার হিসাবে গত প্রান্তিকে এ ধরনের ভুল তথ্য ছিল মাত্র ১১টি। সেটি এ বছরের প্রথম তিন মাসে সাত গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭টিতে। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশ-সংশ্লিষ্ট আটটি ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পেয়েছে ডিসমিসল্যাব। 

সংস্থাটির গবেষণায় দেখা গেছে, জানুয়ারি-মার্চ সময়ে ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠানগুলো ১ হাজার ২৩৬টি তথ্য যাচাইয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে স্বতন্ত্র ভুল তথ্য পাওয়া গেছে ৮৬৭টি, যা আগের প্রান্তিকে রেকর্ড করা ৮১৬টির তুলনায় কিছুটা বেশি। ভুল তথ্যের প্রায় অর্ধেকই (৪৫ শতাংশ) রাজনীতি সম্পর্কিত ছিল। এর পর ছিল ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্য (১৩ শতাংশ), যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় সামান্য কম।

অপরাধ-সম্পর্কিত ভুল তথ্য বেড়েছে 

বছরের প্রথম তিন মাসে প্রচারিত খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই ও ডাকাতি-সংক্রান্ত খবর ছিল ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনা ছিল ভারতের, যা বাংলাদেশের বলে ভুলভাবে প্রচার করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে একটি ইউটিউব চ্যানেলে হোটেল থেকে লাফিয়ে পড়া এক ভিডিও প্রচার করে বাংলাদেশের বলে দাবি করা হয়, কিন্তু সেটি ছিল মূলত ইন্দোনেশিয়ার।

 রাজনৈতিক ভুল তথ্য 

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে যাচাই করা ভুল তথ্যের ৪৫ শতাংশই রাজনৈতিক। আগের বছরও রাজনীতি-সংক্রান্ত ভুল তথ্য প্রচারিত হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ (৩৪.৮ শতাংশ) ও অন্তর্বর্তী সরকারকে (২১.৮ শতাংশ) নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। তবে আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র করে প্রচারিত ভুল তথ্যগুলোর অধিকাংশই (৬৮ শতাংশ) ছিল ইতিবাচক। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপি, জামায়াত-শিবির ও সমন্বয়কদের নিয়ে ছড়ানো অধিকাংশ ভুল তথ্য ছিল নেতিবাচক।

 ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্য

ধর্ম-সম্পর্কিত ভুল তথ্যের সংখ্যা সর্বশেষ প্রান্তিকে কিছুটা কমেছে। গত বছরের শেষ প্রান্তিকে ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্যের পরিমাণ ছিল মোট যাচাইকৃত ভুল তথ্যের ১৮ শতাংশ, যা চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ শতাংশে। তবে এর ধরন ছিল একই রকমের। যেমন, পুরোনো বা সম্পাদিত ছবি-ভিডিও সাম্প্রতিক বলে প্রচার করা। 

বেড়েছে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্য 

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্যের পরিমাণ বাড়তে দেখা গেছে। ২০২৪ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্য নিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল ২৭টি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন। সেখানে এ বছরের প্রথম তিন মাসে এই সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪টিতে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব ভুল তথ্যের ২৪ শতাংশ ছিল রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্যের ৪৫% রাজনৈতিক
  • নির্বাচনে র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করাসহ ১২ প্রস্তাব
  • আগারগাঁওয়ে সেনা অভিযানে অপহৃত ৪ কিশোর উদ্ধার
  • গাইবান্ধায় বাবা-মাকে মারধর করে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ, অভিযুক্ত আটক
  • অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩
  • ডিবির অভিযানে আ.লীগের সাবেক এমপিসহ গ্রেপ্তার ৭
  • পুলিশ সপ্তাহ শুরু মঙ্গলবার, নির্বাচনী নির্দেশনা পাবে আইনশৃঙ্খলা ব
  • সাবেক আইজিপিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আবার বাড়ল
  • অপহৃতকে ছেড়ে দিয়ে পালানোর সময় অস্ত্র ও গুলিসহ অপহরণকারী আটক
  • ছাড়া পেলেন অপহৃত কৃষক, এক অপহরণকারী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার