প্রমত্তা রূপসী হাতিমারা নদী এখন ফসলি জমি
Published: 25th, April 2025 GMT
বহু বছর আগে রূপসী হাতিমারা নদীতীরবর্তী এলাকাকে বিবেচনা করা হতো মূল নৌবন্দর হিসেবে, যাকে কেন্দ্র করে বর্তমান নবীগঞ্জ এলাকার বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গোড়াপত্তন হয়। যেখানে পণ্য পরিবহনের প্রধান মাধ্যমই ছিল এই হাতিমারা নদী।
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার এই নদীটিই কালের বিবর্তনে একেবারে বিলীন হয়ে গেছে। সেটি এখন প্রান্তিক চাষিদের ফসলি জমি। কথিত আছে, হাতিসহ নদী পার হওয়ার সময় বরযাত্রীর নৌকাডুবির পর এই নদীর নাম হয়ে যায় হাতিমারা নদী।
এ নদীর তীরে গড়ে উঠেছে নবীগঞ্জ উপজেলার ১০ থেকে ১৫টি গ্রাম ও দুটি বাজার। এক সময় হাতিমারা নদী দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। জেলেদের মাছ ধরাসহ নদীর পানি দিয়ে জমি চাষ করতেন চাষিরা। স্থানীয়দের জীবন ও জীবিকার প্রধান উৎস ছিল এই নদী। অবৈধ দখল আর পারের বাসিন্দাদের ভাগাড়ে পরিণত হয়ে মরে গেছে নদীটি, যার সামান্য একটি অংশ সরু খালে পরিণত হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে সেখানেও কোনো পানি থাকে না। এখন নদীটি সম্পূর্ণ দখল হয়ে গেছে। এর একেক অংশ দখলে নিয়ে চলছে চাষাবাদ।
সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা বলেন, দেখে বোঝার উপায় নেই এখানে নদী ছিল। মাত্র ১৫ থেকে ২০ বছর আগেও যে নদীতে ৫০০ মণ ওজন নিয়েও বড় বড় নৌকা যাতায়াত করত, তার অস্তিত্ব নেই এখন।
নদীর অস্তিত্ব না থাকায় বর্ষায় ঢলের পানি নেমে যাওয়ার স্বাভাবিক কোনো পথ নেই। নদীপথে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ এই মরা হাতিমারার কারণে বের হতে না পারায় নবীগঞ্জের পূর্বাঞ্চলের আউশকান্দি, দেবপাড়া ও দীঘলবাক ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বর্ষার জলাবদ্ধতা ও অকাল বন্যার সমস্যা দীর্ঘদিনেও সমাধান করা যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নতুন প্রজন্ম এই নদীটিকে বিল হিসেবে চেনে। সংরক্ষণ ও যত্নের অভাবে নদীটি বিলীন হয়ে গেল। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করেও সমাধান পাচ্ছেন না। নদীর অধিংকাশ রয়েছে ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালীদের দখলে।
বিগত সময়ে হাতিমারা নদী রক্ষায় নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার অভিযান চালানো হয়েছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীটির অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছিল। আরও দুই বছর আগে নদীটি খননের জন্য জাইকা প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও কোনো কাজ না করে সেই বরাদ্দের টাকা লুটপাট করা হয়।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, প্রকল্প শুরুর কিছু দিনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়। এর পর আর এই প্রকল্প নিয়ে কোনো ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছে না।
দিনারপুর কলেজের অধ্যক্ষ তনুজ রায় বলেন, হাতিমারা নদীর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। হাতিমারা নদীতে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
সাংস্কৃতিক কর্মী পলাশ চৌধুরী বলেন, দেবপাড়া ইউনিয়নের রুস্তমপুর এলাকা থেকে আউশকান্দি ইউনিয়নের আমুকোনা দিয়ে যে নদী হাতিমারা নামে প্রবাহিত হয়ে শেরপুর বেরিবিক্কেল পর্যন্ত গেছে। এই পথ ধরে প্রবাহিত নদী এখানকার জনগোষ্ঠী আগলে রেখেছে বছরের পর বছর ধরে।
বাংলাদেশ পরিবেশন আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, শাখা বরাকের মতোই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নদী ছিল হাতিমারা। অসাধু লোকজন নিজেদের ভোগবিলাসের জন্য নদীটিকে শেষ
করে ফেলেছে। দখলের মাধ্যমে অস্তিত্ব শেষ করে দেওয়া হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নদ
এছাড়াও পড়ুন:
বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ দুই মাস। প্রশিক্ষণটি আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে, চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি সনদ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আবেদন করতে হবে।
প্রশিক্ষণের বিষয়১. বেসিক কম্পিউটার,
২. অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ইউনিকোড বাংলা,
৩. ইন্টারনেট,
৪. গ্রাফিক ডিজাইন,
৫. ফ্রিল্যান্সিং,
৬. মার্কেটপ্লেস ও কনসালটিং।
আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা১. ন্যূনতম দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে,
২. হাফেজদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হবে,
৩. উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে,
৪. প্রার্থীকে কম্পিউটার চালনায় বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে,
৫. যাঁদের নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যে ৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে১. ঢাকা,
২. চট্টগ্রাম,
৩. রাজশাহী,
৪. খুলনা,
৫. বরিশাল,
৬. সিলেট,
৭. দিনাজপুর,
৮. গোপালগঞ্জ।
আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ৭ ঘণ্টা আগেদরকারি কাগজপত্র১. শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি,
২. জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি,
৩. এক কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে,
৪. ইমামদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কমিশনারের কাছ থেকে নেওয়া ইমামতির প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে,
৫. মাদ্রাসাছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ছাত্রত্ব প্রমাণের কপি জমা দিতে হবে।
নিবন্ধন ফিমনোনীত প্রার্থীদের নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।
দেশের ৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে