রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তিচুক্তির খুব কাছাকাছি: ট্রাম্প
Published: 26th, April 2025 GMT
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তিচুক্তি নিয়ে অগ্রগতির কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মস্কোতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পর ট্রাম্প বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনকে বাদ রেখেই মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা শেষে ট্রাম্প বলেন, এটি একটি ভালো দিন। অন্যদিকে ক্রেমলিন জানায়, আলোচনা গঠনমূলক ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, প্রধান বিষয়গুলোর বেশিরভাগ নিয়েই একমত হওয়া গেছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনায় বসে চুক্তি চূড়ান্ত করার আহ্বান জানান তিনি।
তবে শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, নিঃশর্তভাবে যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করা প্রয়োজন। এর আগে দিনের শুরুতে জেলেনস্কি বিবিসিকে বলেছিলেন, পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি হলে কিয়েভ আর মস্কোর মধ্যে ভূখণ্ডের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া শান্তি প্রস্তাব বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে রাশিয়ার অধিগ্রহণ করা ভূমির বড় অংশ ইউক্রেন ছেড়ে দিতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
শনিবার রোমে পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ২০১৪ সালে অবৈধভাবে দখল করা ক্রিমিয়া অঞ্চল রাশিয়ার হাতে রেখে দেওয়ার পক্ষে। কিন্তু জেলেনস্কি এই দাবিকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় হামলা চালায় রাশিয়া। বর্তমানে দেশটির প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।