আড়িয়াল বিলের প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় চেষ্টা চলছে: উপদেষ্টা
Published: 26th, April 2025 GMT
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘‘আড়িয়াল বিলের প্রাণবৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনতে খালখনন করা হবে এবং বিলের মাটিলুট বন্ধে আলমপুর সেতু পয়েন্টে সার্বক্ষণিক পুলিশ চেকপোস্ট থাকবে। সার্বক্ষণিক চেক পোস্টের জন্য ১২ জন অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যকে শ্রীনগর থানায় পদায়ন করা হবে।’’
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়াল বিলে ধান কাটা ও মাড়াই কার্যক্রম পরিদর্শন ও বাড়ৈখালীর শ্রীধরপুর ধানখেতে মাড়াই কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘আপনারা জানেন, এটা আমার মায়ের জন্মস্থান। এটা আমার নানির বাড়ির এলাকা। এই এলাকার প্রতি আমার আলাদা একটা নাড়ির টান রয়ে গেছে। আর আদিলুর রহমান খান (উপদেষ্টা) ভাইয়ের বাড়ি তো এই শ্রীনগরে। এ জন্য আমাদের পক্ষে যতটা সম্ভব, ততটা করবো। আড়িয়াল বিলের একটা বৈচিত্র্য আছে। এটা যেন কোনো অবস্থায় নষ্ট না হয়, সেদিকে আমরা চেষ্টা করবে। এখানে ছোটখাট যত সমস্যা আছে, এটা আমার অবশ্যই সমাধান করবো।’’
আরো পড়ুন:
শীতে গরম পানিতে গোসল, অজান্তেই ডেকে আনছেন ক্ষতি
ভাত খেয়ে ওজন কমানোর উপায়
আড়িয়ল বিলের ভেকু ও অবৈধ মাটি কাটা বন্ধ করতে আলমপুর খালের প্রবেশমুখে পুলিশ পোস্ট স্থাপনসহ দুটি কৃষি হিমাগার চালু করা হবে বলে তিনি এ সময়ে সাংবাদিকদের জানান।
এ সময় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান জানান, বিল সুরক্ষায় ৭০০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বিলের প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষায় সকলকে সচেতন থাকতে হবে।
এই দুই উপদেষ্টা স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তারা স্থানীয় কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগের কথা শোনেন এবং সেগুলো দূরীকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
ধান মাড়াই কার্যক্রম ও কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আরো অংশ নেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো.
ঢাকা/রতন/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।