প্রশাসনকে ‘মৃত’ ঘোষণা করে ববি শিক্ষার্থীদের কফিন মিছিল
Published: 30th, April 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) প্রশাসনকে প্রতীকী ‘মৃত’ ঘোষণা করে অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টায় ক্যাম্পাসে কফিন মিছিল ও গায়েবানা জানাজার আয়োজন করেন তারা। এ সময় তারা চার দফা দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবি-দাওয়া না মেনে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আসছে। দাবি-দাওয়া পূরণ, হয়রানিমূলক মামলা ও সাধারণ ডায়েরি উঠিয়ে নিতেই তারা এ প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করছেন।
আরো পড়ুন:
আন্দোলন দমাতে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে জিডি করেছে ববি প্রশাসন
ফয়জুল করীমকে বরিশালের মেয়র ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড.
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোকাব্বেল শেখ বলেন, “আমরা গত ১০ দিন ধরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফ্যাসিস্টদের বিদায়ে আন্দোলন করছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো দাবি মেনে নেয়নি। এমনকি গতকাল আমরা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করলেও কেউ দেখা পর্যন্ত করতে আসেনি। সুতরাং আমরা মনে করছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন মারা গেছে। সেজন্যই আমরা আজ প্রতীকী জানাজা ও কফিন মিছিল করেছি।”
শিক্ষার্থী নাজমুল ঢালি বলেন, “শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবী দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে জানিয়ে আসছি কিন্তু প্রশাসন এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি এবং তাদের এই নিস্তব্ধতার জন্য আজকে আমাদের এই কফিন মিছিল কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবি জানালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে আমাদের নামে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা ও জিডি করে আন্দোলনকে দমন করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে যা সম্পূর্ণ সৈরাচারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। আমরা অতিশীঘ্রই এ প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করছি।”
ঢাকা/সাইফুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।