চা শ্রমিকদের জীবন: সামান্য বেতনে বেঁচে থাকার সংগ্রাম
Published: 1st, May 2025 GMT
চা বাগানে নারী শ্রমিকরাই বেশি কাজ করেন। সকাল থেকে ছাতা, চুপড়ি নিয়ে বের হন, রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে তারা টিলায় টিলায় কাজ করেন দিনভর। ১৬৮টি চা বাগানে রয়েছেন দেড় লাখ চা শ্রমিক। তারা পাচ্ছেন না ন্যায্য মজুরি। তাদের জীবনে রয়েছে নানা বঞ্চনার গল্প। জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। তাদের সংগ্রামী জীবনের বাঁকে বাঁকে সৃষ্টি হয় নতুন উপাখ্যান।
তবে বৈষম্য ছেড়ে দেয়নি তাদের। নতুন করে চা শিল্পে নানা সংকট দেখা দিয়েছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে উৎপাদন খরচ। এর মধ্যে বাজারে চায়ের দাম কমে যাওয়ায় বাগান চালাতে মালিকপক্ষ হিমশিম খাচ্ছেন।
চা শ্রমিকরা জানান, তাদের জীবনমান উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের নেই কোনো উদ্যোগ। উপযুক্ত মজুরি না পাওয়ায় দেড়শ বছর ধরে তারা বৈষম্যের শিকার। চা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চা উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাজারে চায়ের দাম কমে গেছে। বাজার দখল করে নিয়েছে চোরাই পথে আসা নিম্নমানের চা। ভোক্তারা না জেনেই নিম্নমানের চা কিনছেন।
আরো পড়ুন:
সমান কাজ করেও কম মজুরি পান আদিবাসী নারীরা
গাজীপুরে পেশা বদলাচ্ছেন অনেক শ্রমিক
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) মৌলভীবাজার কুলাউড়া লংলাভ্যালীর বিভিন্ন চা বাগান ঘুরে শ্রমিকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, শ্রমিক দিবস নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। কাজ করতে পারলেই ভালো থাকেন তারা।
কথা হয় করিমপুর চা বাগানে কর্মরত শ্রমিক শেফালী গোয়ালার সাথে। তিনি বলেন, “আমার স্বামী নেই। ১৭০ টাকা মজুরি পেয়ে কষ্টে চলে সংসার। দু্ই মেয়ে লেখাপড়া করে। তাদের খরচ জোগাতে অনেক কষ্ট হয়।”
ইটা চা বাগানের চা শ্রমিক রুবি মৃগধা বলেন, “বাজারে চায়ের দাম বৃদ্ধি পেলে আমাদেরও মজুরি বাড়বে। বর্তমান মজুরি দিয়ে চলতে কষ্ট হয়।” একই ভ্যালীর উত্তর ভাগ চা বাগানের শ্রমিক ভারতী গোড়াইত বলেন, “ম্যানেজার বলেন চা পাতার দাম নেই। বাজারে পাতার দাম বাড়লে আমাদেরও মজুরি বাড়বে। এই মজুরি দিয়ে সংসার চালানো কঠিন।”
লংলাভ্যালীর সভাপতি শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, “চা শ্রমিকরা যুগ যুগ ধরে বৈষম্যের শিকার। নানা অজুহাত দেখিয়ে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করে না।”
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দীপংকর ঘোষ বলেন, “দেড়শ বছর ধরে চা শ্রমিকরা বৈষম্যের শিকার। ১৬৮টি চা বাগানে রয়েছেন দেড় লাখ চা শ্রমিক। ১৫ বছর পর ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটলেও শ্রমিকদের ন্যূনতম একটা মজুরি বৃদ্ধি হয়নি। বাগান কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাত দেখিয়ে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করছে না।”
কথা হয় চা বিশেষজ্ঞ ও উত্তরভাগ চা বাগানের সিনিয়র ম্যানেজার মো.
ঢাকা/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম দ বস চ দ বস ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার
ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।
আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।
বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।
অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।
আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।