ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিলসহ কয়েকটি দাবিতে একদল শিক্ষার্থীর স্মারকলিপি
Published: 4th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যানজট নিরসন, কার্বনমুক্ত শাটল সার্ভিস চালু, পরিবেশবান্ধব শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলা এবং ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিলসহ কয়েকটি দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। রোববার দুপুরে প্রক্টর অফিসে এই স্মারকলিপি দেন তাঁরা।
তাঁদের দাবিগুলো হলো যানজট নিরসন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাস এলাকায় শুধু রেজিস্টার্ড, নির্ধারিত, অধূমপায়ী রিকশাচালকদের চলাচল নিশ্চিত করা, শিক্ষার্থীদের চলাচলে দুর্ভোগ লাঘব, পরিবেশ রক্ষায় একটি কার্বনমুক্ত, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই শাটল সেবা চালু করা।
স্মারকলিপি প্রদান শেষে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, ‘আপনারা জানেন ট্রান্সজেন্ডার শব্দটি বিতর্কিত একটি শব্দ, যা সম্পূর্ণ জোরপূর্বকভাবে আমাদের ক্যাম্পাসসহ সারা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। যখন এই কোটাটি আমদানি হয়, তখনই আমরা এই কোটা বাতিল করার জন্য আন্দোলন করেছি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সে দাবি মেনেও নিয়েছিল। কিন্তু তারপরও বারবার ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে আমরা দেখেছি এই শব্দটি চলে এসেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তাঁদের বলেছেন, এই শব্দটি ভুলক্রমে ঢুকে গেছে। পরবর্তী সময়ে আর কোনো ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে এমনটি থাকবে না।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস