থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙুর। এমন দৃশ্য দেখে মনে হবে বিদেশ। কিন্তু বিদেশ নয়, দেশের মাটিতেই আঙুর চাষে সফল হয়েছেন চাঁদপুরের যুবক কামরুজ্জামান প্রধানিয়া।
প্রথমবারের মতো মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে আঙুর চাষ করেছেন তিনি। তাঁর সংগ্রহে এখন ১৮টি দেশের ৮৫ জাতের আঙুর গাছ রয়েছে। চাঁদপুর জেলা-উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ প্রতিদিন এই বাগান দেখতে আসেন। চাঁদপুর সদর উপজেলার চাঁদপুর-মতলব পেন্নাই সড়কের কালিভাংতি এলাকায় কামরুজ্জামানের আঙুর বাগান। লম্বা বাঁশের মাচায় ঝুলে থাকা সবুজ ও লাল আঙুর নজর কাড়ছে। এরই মধ্যে আঙুর বাজারে বিক্রি করেছেন।
কামরুজ্জামান বলেন, ২০২১ সালে করোনার সময় শখের বশে আঙুর চাষ শুরু করেন। প্রথমে ছাদ বাগান করেন। সেখানে ভালো ফলন হওয়ায় জমিতে বাগান গড়ে তোলেন। বাড়ির পাশের ২০ শতাংশ জমি পাঁচ বছরের জন্য ইজারা নিয়ে সেখানে বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষ শুরু করেন গত বছরের এপ্রিলে। চলতি বছরের একই সময়ে ফল পাওয়া শুরু। ৫০-৬০ কেজি বাজারে বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে জর্ডানের নারু জাতের (বিচিহীন) ৩৯ কেজি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ইতালি, ভারত, জর্ডান, চীন, ইউক্রেন, জাপান, তুরস্কসহ বেশ কয়েকটি দেশের শত জাতের আঙুর আছে তাঁর বাগানে। প্রায় ১০ হাজার চারা তৈরি করেছেন। এসব চারা ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
কামরুজ্জামানের ভাষ্য, বাংলাদেশে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে আঙুর গাছ ছাঁটাই করলে মার্চ-এপ্রিলে ফল পাওয়া যায়। এরপর আবার শীতের সময়ে ফল আসে। তিনি বলেন, ‘অনেক বেকার যুবক এখান থেকে চারা নিয়ে আঙুর চাষ শুরু করেছেন। বিশেষ করে, অনলাইনে অর্ডার করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তারা আঙুরের চারা সংগ্রহ করছেন। অনেকে সরাসরি এসে দেখে বুঝে যাচ্ছেন।’
চাঁদপুর সদর উপজেলা থেকে আসা শরীফুল ইসলাম ও ফরিদগঞ্জের ওমর ফারুক জানান, বেশ কিছু দিন ধরে কামরুজ্জামান প্রধানিয়ার আঙুর চাষের ভিডিও দেখছেন তারা। এখানে এসে অবাক হয়েছেন তারা। এত চমৎকারভাবে আঙুর ধরে আছে, যে কেউ দেখলে অভিভূত হবে।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, দোআঁশ লালমাটি, জৈবিক সার সমৃদ্ধ কাঁকর জাতীয় মাটি এবং পাহাড়ের পাললিক মাটিতে আঙুর চাষ ভালো হয়। জমি অবশ্যই উঁচু হতে হবে, যেখানে পানি জমে থাকবে না এবং প্রচুর সূর্যের আলো পড়বে এমন জায়গা আঙুর চাষের জন্য নির্বাচন করতে হবে। চাঁদপুরের মাটি বেলে ও দোআঁশ, এটি আঙুর চাষের উপযোগী।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের হামলা: ইসলামাবাদ ও পাঞ্জাবে সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা
বিমান থেকে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জেরে পাল্টা হামলার প্রস্তুতি হিসেবে ইসলামাবাদ ও পাঞ্জাব প্রদেশের সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান।
বিবিসি লিখেছে, এর আগে বুধবার গভীর রাতে ভারত সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, তারা পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে মোট ৯টি স্থানে হামলা চালিয়েছে। এই হামলা ছিল গত মাসে পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার জবাব।
হামলার পর ভারতের সামরিক বাহিনীর এক্স হ্যান্ডলে এক পোস্টে বলা হয়, ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তার কয়েক মুহূর্ত পরই ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিন্দুত্ববাদী নেতা যোগী আদিত্যনাথ সেনাবাহিনী প্রসংশা করে এক্সে পোস্ট দেন।
আরো পড়ুন:
ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ও ১টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের
পাকিস্তানে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করেছে দিল্লি
পহেলগাম হামলার জন্য দিল্লি দায়ী করছে ইসলামাবাদকে; যদিও তারা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
গত কয়েক দিনে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও সরকার সাংবাদিকদের ভাওয়ালপুর ও মুজাফফরাবাদ-সংলগ্ন এলাকায় ঘুরিয়ে দেখিয়েছে, যেগুলো পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী ভারতীয় হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল।
পাকিস্তান এই সফরের মাধ্যমে ভারতের দাবিকে খণ্ডন করতে চেয়েছিল, দেখাতে চেয়েছিল এগুলো জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির নয়।
এদিকে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার জানান, হামলায় ৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং ৩৫ জন আহত হয়েছেন। নিহতের মধ্যে দুজন শিশু রয়েছে।
ভারত এখনো পাকিস্তানের এই দাবি সম্পর্কে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
পাকিস্তান আরো দাবি করেছে, হামলার সময় ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ও একটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। অবশ্য, এই দাবির বিষয়ে ভারতও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
ভারতের হামলার জবাবে শিগগির প্রতিক্রিয়া দেখানোর হুমকি দিলেও পাকিস্তানের তরফে পাল্টা হামলার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এই অবস্থায় ভারতজুড়ে আজ মঙ্গলবার (৭ মে) বেসামরিক পর্যায়ে যুদ্ধকালীন নিরাপত্তা মহড়া হওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকা/রাসেল