যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে সংক্ষেপে মন্তব্য করেছেন।
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমি উভয় পক্ষকে খুব ভালোভাবে চিনি। আমি চাই তারা বিষয়টি মিটিয়ে নিক। আমি চাই তারা থেমে যাক।”
ট্রাম্প আরও বলেন, “আমি যদি কোনোভাবে সাহায্য করতে পারি, তাহলে আমি অবশ্যই পাশে থাকব।”
আরো পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তান কি সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়াচ্ছে?
শ্রীপুরে ছাত্র আন্দোলনে হামলা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
এর আগে পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর শোনামাত্রই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘এটা দুঃখজনক। আমি চাই, এটি বন্ধ হোক।”
পাকিস্তানে হামলার পর ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ভারপ্রাপ্ত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিওর সঙ্গে কথা বলেন। তখন তিনি হামলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতির ওপর তারা নজর রাখছে। সেই সঙ্গে উভয় পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানায় দেশটি।
৭ মে রাতে পাকিস্তানের ৯টি স্থানের কয়েকটি জঙ্গি আস্তানায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপরাশেন সিঁদুর’। কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হওয়া ২৬ জন ব্যক্তির স্ত্রীরা বিধবা হওয়ায় ধর্মমতে তারা আর মাথায় সিঁদুর পরতে পারবেন না। এই নারীদের সম্মানে অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে অপরাশেন সিঁদুর।
হামলা নিয়ে দুই দেশের উত্তপ্ত বাক্য চালাচালির মধ্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছে তার দেশের সেনাবারা। ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে তারা। এই ঘটনাকে জবাব হিসেবে ব্যাখ্যা করে সময়মতো প্রতিশোধ নিতে সামরিক বাহিনীকে অনুমতি দিয়েছেন তিনি।
এর আগে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি বৈঠক করে সামরিক বাহিনীকে তাদের ‘নিজস্ব সময় ও পন্থায়’ ভারতকে জবাব দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে ভারত সরকার বলেছে, পাকিস্তান যদি কোনো ধরনের পাল্টা হামলা চালায় তাহলে আরো কঠিন হামলা চালানো হবে।
যুদ্ধের ডামাডোলে দুই দেশে বহু বেসামরিক ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে; বন্ধ করা হয়েছে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উভয় অংশের বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন, অনেক পরিবারকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে যেতে দেখা গেছে।
বুধবারের রাতের হামলায় পাকিস্তানে ৭০ জন নিহতের খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এলেও পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলেছে, নিহতের সংখ্যা ২৬ জন। আহত হয়েছেন ৫০ জনের মতো।
এদিকে ভারত বলেছে, পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে কাশ্মীরে ১৫ জন বেসামরিক ভারতীয় নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩৬ জনের মতো।
নতুন করে যুদ্ধের শঙ্কা এখনই উড়িয়ে দেওয়া না গেলেও দুই দেশের ভাষায় সেই ইঙ্গিত নেই। ভারত বলছে, হামলার মধ্য দিয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তারা সন্ত্রাসী স্থাপনায় হামলা চালিয়ে তাদের খতম করে দিয়েছে।
পাকিস্তান বলছে, তারা হামলার সমুচিত জবাব দিয়েছে, অভিযানের সময় ভারতের কয়েকটি বিমান ভূপাতিত করে এটি করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্ব ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ চায় না বলে পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে। বাংলাদেশও একই বার্তা দিয়েছে। ফলে পরিস্থিতি উন্নতির ইঙ্গিত স্পষ্ট।
ঢাকা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
লিওনেল মেসির আজ জন্মদিন: এমন মানবজনম আর কি হবে
শুরুটা হয়েছিল একটা স্যুটকেস থেকে কিংবা একটা ন্যাপকিন পেপার অথবা একটা বাইসাইকেল থেকে। সেসব তখন ছিল বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা। ধীরে ধীরে ঘটনাগুলো জোড়া লেগে রূপান্তরিত হলো একটা পূর্ণাঙ্গ গল্পে। স্মৃতির সেসব পাথরখণ্ড এখন গল্পের জগৎ পেরিয়ে মিথ বা কিংবদন্তিতে রূপ নিয়েছে। কে জানে, হয়তো কোনো এক মনোরম মনোটোনাস সকালে কফির মগ হাতে মনে মনে সেই স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসেন রূপকথার সেই মহানায়ক, যাঁকে ঘিরে তৈরি হয়েছে এই অনবদ্য গল্পগাথা।
রূপকথার সেই গল্পের মহানায়কের নামটা যে লিওনেল মেসি, তা বোধ হয় আলাদা করে না বললেও চলে। আজ ৩৮তম জন্মদিনে মেসি কি আরেকবার সেসব রূপকথার দিকে ফিরে তাকাবেন? হয়তো তাকাবেন, হয়তো না। কিন্তু আমরা তো কাঁটায় হেঁটে মুকুটের সন্ধান পাওয়া সেই গল্পটার দিকে ফিরে তাকাতেই পারি।
একজন মানুষের দেবদূত হয়ে ওঠার যাত্রাটা আরেকবার দেখে নিয়ে বলতে পারি, ‘এমন মানবজনম আর কি হবে।’ নাহ, এমনটা সব সময় হয় না। কখনো কখনো হয়, কদাচিৎ কেউ কেউ আসেন প্রকৃতির বর নিয়ে। যাঁর হাতে প্রকৃতি তুলে দেয় হ্যারি পটারের সেই জাদুর ছড়ি, যা মুহূর্তেই মাটিকে বদলে দিতে পারে হীরকখণ্ডে।
আরও পড়ুনফ্রি–কিকের সময় কী ভাবেন মেসি? গোল হয় কোন কৌশলে২১ জুন ২০২৫‘মেসি’ নামের এই মহাকাব্যটা লেখা শুরু হয়েছিল ৩৮ বছর আগে আজকের এই দিনে। কিন্তু এই গল্প যেন আর কখনোই শেষ হওয়ার নয়। অনন্তকাল ধরে বিনি সুতার মালায় গাঁথা হতে থাকবে সেই গল্পটা। প্রজন্মের পর প্রজন্ম বয়ে বেড়াবে এক অলৌকিক জাদুকরের গল্প, যে গল্পে একজন মানুষ ভীষণ কঠিন এক লড়াই শেষে পান করবেন অমরত্বের সঞ্জীবনী।
কিন্তু অমরত্বের পর আর কী? আর্জেন্টাইন সাহিত্যিক রবার্তো ফুনতানারোজার ‘এন আর্জেন্টাইন’স হেভেন’ নামক গল্পে একদল মানুষ মৃত্যুর পরে কীভাবে ফুটবল খেলা দেখার মধ্য দিয়ে স্বর্গে আরোহণ করেছিলেন সেটা দেখিয়েছিলেন। ফুটবলীয় সেই স্বর্গ কাতারে আড়াই বছর আগেই পেয়ে গেছেন মেসি। আঙুলের ইশারায় পুরো পৃথিবীকে একাই নাচিয়ে তুলেছিলেন ট্যাঙ্গোর তালে। কিন্তু এরপর? অমরত্বের পর সত্যিই কি কিছু থাকে? হ্যাঁ থাকে। অমরত্বের পর থাকে উপভোগ। অমরত্বের পর থাকে বয়ে যাওয়া।
বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে লিওনেল মেসি