চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুরে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি হামলায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ফাঁকা গুলি ছুড়েছে একটি পক্ষ। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এস এম পাইলট উচ্চবিদ্যালয় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে জামায়াতের আহত তিন নেতাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপিরও এক কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে জামায়াতের তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন উপজেলা জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি কুতুব উদ্দিন শিবলী, ইউনিয়ন জামায়াতের নেতা মোহাম্মদ আলী ও আবদুস সালাম।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে একই সময়ে জঙ্গল সলিমপুরে বিএনপি ও জামায়াতের পৃথক দুটি সভা ছিল। জঙ্গল সলিমপুর এস এম পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও জামায়াতের নেতা শহিদুল ইসলামের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিকেলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে সলিমপুর ইউনিয়ন জামায়াত। ওই বিদ্যালয়ের কিছুটা দূরে একটি মাদ্রাসায় বিএনপির একটি প্রস্তুতি সভা ছিল। সে সভায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরীর উপস্থিত থাকার কথা ছিল। উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার পথে মুখোমুখি হলে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ লাঠিসোঁটা নিয়ে পাল্টাপাল্টি হামলা করে।

ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হামলার সময় ফাঁকা গুলি ছোড়ার শব্দ শুনেছেন তাঁরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জামায়াতের আহত তিন নেতাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বিএনপির এক কর্মী আহত হওয়ার খবর পেলেও তাঁরা ঘটনাস্থলে পাননি। এ ঘটনা থানায় কোনো মামলা করা হয়নি বলে জানান তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ