শনিবার (১৭ মে) দেশের সব ব্যাংক ও শেয়ারবাজার খোলা থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) পৃথকভাবে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।

এর ফলে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও শাখাগুলোতে স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম চলবে। একইসঙ্গে শেয়ারবাজারেও অন্যান্য কর্মদিবসের মতো লেনদেন চালু থাকবে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত শেয়ারবাজারে লেনদেন চলবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী ২৪ মে (শনিবার) দিনটিতেও ব্যাংক ও শেয়ারবাজার খোলা থাকবে।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ বাড়ছে

ঈদুল আজহা: ১১ ও ১২ জুন বন্ধ থাকবে ফাইন্যান্স কোম্পানি

জানা গেছে, আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টানা ১০দিনের ছুটি কার্যকর হবে ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত। এ দীর্ঘ ছুটির সমন্বয় করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের ৬ মে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঈদের আগে দুইটি শনিবার-১৭ ও ২৪ মে-সরকারি অফিস খোলা থাকবে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ দেয়।

এ সিদ্ধান্তের ফলে গ্রাহকরা শনিবার সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা নিতে পারবেন এবং পুঁজিবাজারে স্বাভাবিকভাবে লেনদেন করতে পারবেন।

ঢাকা/এনএফ/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ য় রব জ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পরাবাস্তবতার আবেদন কি ফুরিয়েছে

অবচেতনের মানচিত্র ধরে এক অন্তহীন অভিযাত্রা কবি–সাহিত্যিকেরা যুগ যুগ ধরে করে আসছেন। সাহিত্যের দীর্ঘ যাত্রাপথে এমন কিছু বাঁক আসে, যা তার গতিপথকে চিরতরে বদলে দেয়। পরাবাস্তবতা বা সুররিয়ালিজম ছিল এমনই এক যুগান্তকারী আন্দোলন, যা কেবল শিল্পের আঙ্গিক নয়; বরং শিল্পীর বিশ্ববীক্ষা এবং আত্মবীক্ষণকে সম্পূর্ণ নতুন এক দর্শন দান করেছিল। এটি ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ। এর মূল লক্ষ্য ছিল মানব মনের সেই গভীরে প্রবেশ করা, যেখানে যুক্তির আলো পৌঁছায় না; সেই অবচেতনের অন্ধকার মহাসাগর থেকে তুলে আনা বিস্মৃত স্বপ্ন, অবদমিত ইচ্ছা আর আদিম প্রবৃত্তির মণি–মুক্তা। পরাবাস্তবতা তাই কেবল একটি শিল্পরীতি নয়, এটি চেতনার শৃঙ্খলমুক্তির এক দুঃসাহসী ইশতেহার।

১৯২৪ সালে ফরাসি কবি ও লেখক আঁদ্রে ব্রেটন তাঁর ‘পরাবাস্তবতার প্রথম ইশতেহার’ (ম্যানিফেস্টো অব সুররিয়ালিজম) প্রকাশের মাধ্যমে এই আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। ব্রেটনের সংজ্ঞায়, পরাবাস্তবতা হলো, ‘বিশুদ্ধ মানসিক স্বয়ংক্রিয়তা, যার মাধ্যমে মুখ বা লেখনী দিয়ে অথবা অন্য যেকোনো উপায়ে চিন্তার আসল কার্যকারিতাকে প্রকাশ করার ইচ্ছা পোষণ করা হয়। এটি যুক্তির সমস্ত নিয়ন্ত্রণ থেকে এবং সকল প্রকার নান্দনিক ও নৈতিক উদ্দেশ্য থেকে বিযুক্ত চিন্তার এক শ্রুতলিখন।’

এই দর্শনের প্রধান পাথেয় ছিল ভিয়েনার মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েডের যুগান্তকারী মনঃসমীক্ষণ তত্ত্ব। ফ্রয়েড দেখিয়েছিলেন যে মানুষের সচেতন মনের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক বিশাল অবচেতন জগৎ, যা তার আচরণ, স্বপ্ন ও ব্যক্তিত্বকে নিয়ন্ত্রণ করে। পরাবাস্তববাদীরা ফ্রয়েডের এই তত্ত্বকে লুফে নিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে শিল্পসৃষ্টির উদ্দেশ্যই ছিল যুক্তির সেন্সরশিপকে ফাঁকি দিয়ে অবচেতন মনের এই লুকানো জগৎকে উন্মোচিত করা। তাঁরা চেয়েছিলেন, স্বপ্ন ও বাস্তবতাকে একীভূত করে এক ‘পরম বাস্তবতা’ বা ‘সুররিয়ালিটি’ তৈরি করতে।

পরাবাস্তবতা ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ।

পরাবাস্তবতার পদযাত্রা প্যারিসের শৈল্পিক পরিমণ্ডল থেকে শুরু হলেও এর ঢেউ খুব দ্রুতই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। আঁদ্রে ব্রেটন ছিলেন এই আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা, কিন্তু তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় সমবেত হয়েছিলেন বহু প্রতিভাবান স্রষ্টা, যাঁরা নিজ নিজ ভাষায় ও সংস্কৃতিতে পরাবাস্তবতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।

আঁদ্রে ব্রেটন (জন্ম: ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৬—মৃত্যু: ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৬৬)

সম্পর্কিত নিবন্ধ