সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে চলছে সিন্ডিকেট বৈঠক। এদিকে আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন পেট্রোলিয়াম ও খনি প্রকৌশল (পিএমই) বিভাগের একদল শিক্ষার্থী।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পিএমই বিভাগে যোগ্যতা পূরণ না করেই গত বছরের জুনে একজন প্রভাষককে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁদের দাবি, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত না মানা সত্ত্বেও তৎকালীন প্রশাসন ওই শিক্ষককে নিয়োগ দেয়। এ নিয়োগ বাতিলের দাবি জানান তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী আজ বেলা ১১টা ২০ মিনিটে উপাচার্যের কার্যালয়ে সিন্ডিকেট সভা শুরু হয়।

প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন—‘জুলাইয়ের বাংলায়, দুর্নীতির ঠাঁই নাই’, ‘যোগ্যতা না গোলটেবিল, যোগ্যতা যোগ্যতা’, ‘ঘুষ না মেধা, মেধা মেধা’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ’, ‘এই নিয়োগ বাতিল করো, করতে হবে’ ইত্যাদি।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া পিএমই বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আবু বকর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বিভাগে তাজবিউল ইসলাম নামের এক প্রভাষককে নিয়োগ দেওয়া হয়, যিনি নিয়োগের যোগ্যতা পূরণ করেননি। গত (২৩৫তম) সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে যে তাঁর নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে এবং তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো তিনি কোনো উত্তর দেননি। আমাদের একটাই দাবি, এই অযোগ্য শিক্ষককে আমরা ক্লাসে দেখতে চাই না। যদি তাঁর নিয়োগ বাতিল না হয়, তাহলে আমরা ক্লাস বর্জন করব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য গ যত

এছাড়াও পড়ুন:

স্যারের চেম্বারে পড়া বুঝতে গিয়েছিলাম, দাবি সেই ছাত্রীর

“কয়েকদিন পর আমার পরীক্ষা ছিল। তাই, আমি পড়া বুঝতে স্যারের চেম্বারে যায়। সেখানে সকালে যাওয়ার কথা থাকলেও স্যার একটু ব্যস্ত থাকায় আমি বিকেলে গিয়েছিলাম। স্যারের কাছে পড়া বুঝতে বুঝতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। এ সময় হঠাৎ কয়েকজন স্যারের চেম্বারে নক করে। পরে স্যার দরজা খুলে দেন।“

শনিবার (১৭ মে) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পরিবহন মার্কেটের আমচত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান শিক্ষকের চেম্বার থেকে আটক হওয়া ফাইন্যান্স বিভাগের ছাত্রী।

আরো পড়ুন: চেম্বারে ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় রাবি শিক্ষক, ভিডিও ভাইরাল

আরো পড়ুন:

পাবিপ্রবিতে নতুন হল খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জবিতে ৪ বছর পর নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি, ক্লাস শুরু ২২ জুন

সংবাদ সম্মেলনে ওই ছাত্রী বলেন, “রুমে ঢুকে তারা প্রথমে আমার শরীরে হাত দেয়। এতে আমার শরীর থেকে ওড়না পড়ে যায়। তারা আমাকে ধর্ষণ করার হুমকি দেয় এবং মোবাইলে ভিডিও করার কথা বললে আমি টেবিলের নিচে গিয়ে লুকাই। পরে তারা বের হওয়ার জন্য জোর করলে আমি গামছা মাথায় নিয়ে বের হই।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “তারা প্রথম ৫ লাখ টাকা দাবি করে। স্যার আমার নিরাপত্তার ভয়ে একপর্যায়ে টাকা দিতে রাজি হন এবং চেম্বার থেকে বের হয়ে জুবেরী ভবনের দিক থেকে ১ লাখ টাকা নিয়ে দেন। পরদিন তাদের আরো ২ লাখ টাকা দিতে হয়।”

এ সময় তিনি ক্যাম্পাসের দুজন সাংবাদিকসহ চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এ অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ আনেন। তারা হলেন, কালবেলার রাবি প্রতিনিধি সাজ্জাদ হোসেন সজীব, খবরের কাগজের রাবি প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম সুমন, আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব, আইবিএ বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশের) রাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শনিবার বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের আমচত্বরে সংবাদ সম্মেলন করেন সাংবাদিক সাজ্জাদ ও সুমন।

সম্মেলন তারা বলেন, গত ১১ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এক স্যারের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, হেদায়েত উল্লাহ স্যার তার চেম্বারে এক ছাত্রীসহ অবস্থান করছেন। খবর পাওয়ার পর আমরা কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রক্টর স্যারের অনুমতিক্রমে ওই চেম্বারের সামনে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি, রুমের লাইট বন্ধ। আমরা নক করলে স্যার নিজেই দরজা খুলে দেন। তখন আমরা রুমে প্রবেশ করি। স্যারের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে টেবিলের নিচে ওই নারী শিক্ষার্থীকে লুকিয়ে থাকতে দেখি।

তারা আরো বলেন, পরে স্যার নিজেই ছাত্রীকে টেবিলের নিচ থেকে বের করে আনেন। এ সময় ছাত্রীটি অনুরোধ করে বলেন, যেন ভিডিও বা সংবাদ প্রকাশ না করা হয়। অন্যথায় তিনি আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে হুমকি দেন। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা প্রক্টর স্যারকে কল করি বিষয়টি জানানোর জন্য। পরে হেদায়েত উল্লাহ স্যারের অনুরোধে আমরা প্রক্টর স্যারকে আর ঘটনা খুলে বলিনি। এ সময় ওই শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা তখন ভিডিও প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নেই।

আরো পড়ুন: চেম্বারে ছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষক: স্থায়ী বহিষ্কার দাবিতে রাবিতে বিক্ষোভ

এ দুই সাংবাদিক বলেন, পরবর্তীতে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যারকে জানানো হয়। স্যারের পক্ষ থেকে আমাদের একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয় এবং জানানো হয়, অভিযোগকারীদের পরিচয় গোপন রেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এরই মধ্যে আমাদের অজ্ঞাতে একটি সোর্সের মাধ্যমে ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আমরা লক্ষ্য করি, ওই শিক্ষক ও ছাত্রী আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলেন—যেখানে আর্থিক লেনদেনের মতো গুরুতর গুজব ছড়ানো হয়েছে।

এ দুই সাংবাদিক আরো বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের সঙ্গে অভিযুক্ত শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়নি। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল কেবল একটি অনৈতিক ঘটনার যথাযথ প্রতিবাদ ও প্রশাসনকে অবহিত করা। ঘটনার সত্যতা আড়াল করতে কেউ যেন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা না করে। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।

টাকা লেনদেনের বিষয়ে তারা বলেন, সেখানে টাকা লেনদেনের কোনো কথাই আসেনি। আমরা ওই মেয়ের আত্মহত্যার হুমকির কারণে ভিডিও আগে প্রকাশ করিনি।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ