গাজীপুরের টঙ্গী ফ্লাইওভারের ওপরে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে এক প্রাইভেটকার চালকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৬ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। শনিবার (১৭ মে) টঙ্গীর পশ্চিম থানার ওসি ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত গাড়ি চালকের নাম মো. রনজু খাঁ (৩০)। তিনি পাবনা সদর থানার মজিদপুর গ্রামের মো.

শামছুল খাঁর ছেলে। পরিবার নিয়ে তিনি টঙ্গীর সাতাইশ এলাকায় থাকতেন।

নিহতের স্বজনরা জানান, রনজু খাঁ টঙ্গীর সাতাইশ এলাকায় থাকতেন। সেখানে থেকে তিনি রাজধানীর উত্তরায় বসবাসকারী যুমনা গ্রুপের এক কর্মকর্তার গাড়ি চালাতেন। রনজু প্রতিদিন মোটরসাইকেল নিয়ে গাজীপুর থেকে উত্তরায় ওই কর্মকর্তার বাড়িতে যাওয়া আসা করতেন। গত শুক্রবার রাতে দায়িত্ব পালন শেষে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। 

আরো পড়ুন:

চিত্তরঞ্জনকে হত্যার ঘটনায় মামলা, প্রেমিকার বাবা-মা ও ভাবি গ্রেপ্তার

মুন্সীগঞ্জে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার

রাত সাড়ে ১২ টার দিকে টঙ্গী ফ্লাইওভারের ওপর টেশিস কারখানার সামনে পৌঁছালে ছিনতাইকারীরা রনজুর গতিরোধ করে। এসময় বাধা দিলে ছিনতাইকারীরা রনজুর পিঠের নিচের অংশে ছুরিকাঘাত করে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা রনজুকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। রাত ৩টার দিকে চিকিৎসক রনজুকে মৃত ঘোষণা করেন। 

নিহতের ছোট ভাই শরিফুল ইসলাম জানান, তার ভাই টঙ্গীর সাতাইশ এলাকায় ভাড়া থেকে উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার চালাতেন। বাড়ি থেকে তিনি প্রতিদিন মোটরসাইকেল নিয়ে উত্তরা যাওয়া আসা করতেন। শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হাসপাতাল থেকে লাশ তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

টঙ্গীর পশ্চিম থানার ওসি ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, “ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে। এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ছ নত ই

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ