পুঁজিবাজারে পতন: বিনিয়োগকারীদের কফিন মিছিল, কঠোর হুঁশিয়ারি
Published: 18th, May 2025 GMT
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস রবিবার (১৮ মে) সূচকের পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক দরপতনের প্রতিবাদে এদিন লেনদেনে শেষে বিনিয়োগকারীরা মতিঝিলে সড়ক অবরোধ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পুরনো ভবনের সামনে বিক্ষোভ ও কফিন মিছিল কর্মসূচি পালন করেছেন।
এ সময় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ দাবি করেছেন। একইসঙ্গে তারা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে অপসারণ করা না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক পতনের ফলে পুঁজি হারিয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এর প্রতিবাদে রবিবার দুপুরে দিকে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এ সময় সংগঠনটির সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন, সমন্বয়ক ও মুখপাত্র নুরুল ইসলাম মানিকসহ অন্যান্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এদিনে ডিএসই ও সিএসইতে আগের কার্যদিবসের চেয়ে টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। তবে, ডিএসই ও সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম কমেছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ২৯.
ডিএসইতে মোট ৪০০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১০২টি কোম্পানির, কমেছে ২৪১টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৭টির।
এদিন ডিএসইতে মোট ২৯২ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৬২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ৫০.০২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮ হাজার ১৯১ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭৮.০৪ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৪০৩ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৩.৮১ পয়েন্ট কমে ৮৬৩ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১৯.৩০ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৪৭৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সিএসইতে মোট ২৩৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৮৮টি কোম্পানির, কমেছে ১১৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৩০টির।
সিএসইতে ১০ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৯ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
ঢাকা/এনটি/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল খ ট ক র শ য় র ও ইউন ট স এসইত স এসই ড এসই
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন সূচক, মূলধন কমেছে ৪১৭৩ কোটি টাকা
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনের মধ্যে দিয়ে বিদায়ী সপ্তাহের (১২ থেকে ১৫ মে) লেনদেন শেষ হয়েছে। এ সময়ে ডিএসই ও সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন কমেছে। একইসঙ্গে উভয় পুঁজিবাজারে বিদায়ী সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ৪ হাজার ১৭২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
শনিবার (১৭ মে) ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স নেমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭৮১ পয়েন্টে। যেটা ২০২০ সালের ২৪ আগস্টের পর অর্থাৎ গত ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। আর গত তিন কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ১৪০ পয়েন্টের বেশি।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমানে বাজারে প্রতিনিয়ত যেসব শেয়ার বিক্রি হচ্ছে, তার বড় অংশই মার্জিন ঋণের দায়ে বাধ্যতামূলক বিক্রি। এতে করে বাজারের ওপর চাপ বাড়ছে, দরপতন বাড়ছে, আর পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারীরা আরও দ্রুত মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। বর্তমানে পুঁজিবাজারে যে সংকট দেখা দিয়েছে তাতে কেবল সূচকই নয়, আস্থা ও বিশ্বাসও নষ্ট হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।
তথ্য মতে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২১.২৬ পয়েন্ট বা ২.৪৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৮১ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৫০.২৪ পয়েন্ট বা ২.৭৬ শতাংশ কমে ১ হাজার ৭৭০ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩৫.৩৯ পয়েন্ট বা ৩.২৯ শতাংশ কমে ১ হাজার ৩৮ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) ০.৪৬ পয়েন্ট বা ০.০৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯১৫ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৫২ হাজার ৪৪৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ২ হাজার ৯৫৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৯৯ কোটি ৫ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৪১৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ১ হাজার ১১৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৫০টির, দর কমেছে ৩২২টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টির। তবে লেনদেন হয়নি ১৭টির।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২২৬.৭১ পয়েন্ট বা ১.৬৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৪৭৭ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক ১.৪৯ শতাংশ কমে ১১ হাজার ৪৯৮ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক ১.৫১ শতাংশ কমে ৮ হাজার ২৪০ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক ১.৬৫ শতাংশ কমে ৮৬৯ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স (এসএমই ইনডেক্স) .৫৩ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮১ হাজার ৯৮৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৮৩ হাজার ২০২ কোটি ১০ লাখ টাকা। টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ২১৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫২ কোটি ৪১ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ১৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩০০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৪টির, দর কমেছে ২০৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টির শেয়ার ও ইউনিট দর।
ঢাকা/এনটি/টিপু