রাজধানীর মাটিকাটা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ‘হিটলু বাবু গ্যাং’-এর ১০ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী।

মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার দিবাগত রাত দুটা থেকে আজ মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৩টি স্বয়ংক্রিয় পিস্তল, ১টি রিভলবার, ২৮টি গুলিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৮৬ স্বতন্ত্র সিগন্যাল ব্রিগেডের ভাষানটেক সেনাক্যাম্প এই বিশেষ অভিযান চালায়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এই ক্যাম্প থেকে গ্যাংটির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। আনুমানিক ভোর পাঁচটার দিকে অভিযান চলাকালে গ্যাংয়ের সদস্যরা গ্রেপ্তার এড়ানো অসম্ভব বিবেচনা করে টহলদলের ওপর হামলার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাদল সতর্কতামূলক ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরবর্তী সময়ে সন্ত্রাসীরা পালাতে ব্যর্থ হন। তারা সেনাবাহিনীর টহলদলের হাতে গ্রেপ্তার হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জননিরাপত্তা নিশ্চিত ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। যেকোনো ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রমের তথ্য কাছের সেনাক্যাম্প অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অভ য ন

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ঢাকায় গুলিবর্ষণের তথ্য দিয়েছেন মাত্র ৭ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে (১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট) ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৯৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন। তাঁদের মধ্যে মাত্র সাতজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিবর্ষণের তথ্য দিয়েছেন।

ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের নথি পর্যালোচনা করে এই তথ্য পাওয়া গেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তকাজে সহায়তায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ জানুয়ারি ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয় এই নথি পাঠায়।

নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৯৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন। তাঁদের মধ্যে সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজেদের আওতাধীন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিবর্ষণের তথ্য দিয়েছেন। অন্যরা ‘গুলিবর্ষণ হয়ে থাকলে সংখ্যা, অস্ত্রের ধরন’-সংক্রান্ত তথ্যে ‘না’ উল্লেখ করেছেন।

যে সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গুলিবর্ষণের তথ্য দিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে প্রথম আলো। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের দাবি, তাঁরা গুলিবর্ষণের অনুমতি দেননি। ঘটনার কয়েক দিন পর তাঁদের কাছ থেকে গুলিবর্ষণের অনুমতিসংক্রান্ত কাগজে সই নেওয়া হয়। আর তখন সই না দিয়ে তাঁদের কোনো উপায় ছিল না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর অনুমতি ছাড়াই দায়িত্বের আওতাধীন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলির ঘটনা ঘটেছিল। তবে এতে কোনো আহত-নিহত ছিল না। ঘটনার দিন কয়েক পরে তিনি গুলির অনুমতির কাগজে সই করেছিলেন।

আরেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলন চলাকালে তিনি দুই দিন দায়িত্ব পালন করেছেন। গুলিবর্ষণের অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

উল্লিখিত পাঁচজনের বাইরে আরেকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, নথিতে নাম থাকলেও আন্দোলন চলাকালে তিনি মাঠে ছিলেন না।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর আহমেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি। তাঁর মুঠোফোন খুদে বার্তা পাঠালে সাড়া দেননি।

হাজারো গুলি

ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা সাত ধরনের তথ্য চায়।

যেসব তথ্য চাওয়া হয়, সেগুলো হলো, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নাম ও পরিচিতি নম্বর। কর্তব্যে নিয়োজিত হওয়ার তারিখ, সময় ও স্থান। গুলিবর্ষণ হয়ে থাকলে সংখ্যা ও অস্ত্রের ধরন। অস্ত্র ব্যবহারকারী সদস্যের নাম ও পরিচিতি। হতাহত হয়ে থাকলে তার বিবরণ। নির্বাহী তদন্ত হয়ে থাকলে তার প্রতিবেদনের অনুলিপি। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের নথিতে ১ হাজার ১৩২টি গুলি ছোড়ার তথ্যের উল্লেখ আছে। তবে হতাহত হওয়ার কোনো তথ্য নেই।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একটি সূত্র বলছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে ডিএমডির বিভিন্ন থানায় করা ২৮টি মামলার এজাহারে ৪ দিনেই প্রায় ২৫ হাজার গুলি ছোড়ার তথ্য পাওয়া যায়।

ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের নথির তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে রামপুরা এলাকায়। বাকি গুলির ঘটনা ঘটেছে যাত্রাবাড়ী, আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, মহাখালী, বিজয় সরণি ও সংসদ ভবন এলাকায়। এসব স্থানে যাঁরা গুলি করেছেন, তাঁদের নাম নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে। গুলির ধরন হিসেবে উল্লেখ আছে এসএমজি ও আরএফএল।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ডিএমপির একটি থানায় দায়িত্ব পালককারী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ১৮ জুলাই থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এরপরই পুলিশের শীর্ষ পর্যায় থেকে গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক প্রধান উপদেষ্টার
  • জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ঢাকায় গুলিবর্ষণের তথ্য দিয়েছেন মাত্র ৭ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
  • রাজধানীর মাটিকাটা এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ১০
  • আইএসপিএবির নতুন সভাপতি আমিনুল, মহাসচিব নাজমুল
  • আইএসপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি-মহাসচিব নির্বাচিত
  • আইএসপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুল, মহাসচিব নাজমুল
  • অব্যাহতি পাওয়া সাবেক সেনাসদস্যদের বিক্ষোভ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবস্থান
  • বরখাস্ত-অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাবেক সেনাসদস্যদের বিক্ষোভ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবস্থান
  • সাবেক সেনাসদস্যদের বিক্ষোভ নিয়ে যা জানালো আইএসপিআর