ঢাকাসহ সারা দেশে সাত দিনের যৌথ অভিযানে আটক ২৫৮
Published: 22nd, May 2025 GMT
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গত সাত দিনে যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অভিযোগে ২৫৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, মাদকদ্রব্য ও সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহৃত চোরাই মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলমান পরিস্থিতিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। এরই অংশ হিসেবে ১৫ থেকে ২১ মে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদাতিক ডিভিশন ও স্বতন্ত্র ব্রিগেডের অধীন ইউনিটগুলো অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে।
এসব অভিযানে হত্যা মামলার পলাতক আসামি, অবৈধ অস্ত্রধারী, তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, চোরাকারবারি, কিশোর গ্যাং সদস্য, অবৈধ মাটি উত্তোলনকারী, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকাসক্ত ও দালাল চক্রের সদস্যসহ ২৫৮ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযানে ১৪টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ১০৫টি বিভিন্ন ধরনের গুলি, বিপুল পরিমাণ মাদক, দেশি অস্ত্র, চোরাই মুঠোফোন ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়। আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশব্যাপী জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী নিয়মিত টহল ও নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ন্ত্রণে সেনা টহল দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনাজনিত অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সেনাসদস্যরাও সরাসরি অগ্নিনির্বাপণে অংশ নিয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। একই সঙ্গে সাধারণ জনগণকে যেকোনো সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কাছের সেনা ক্যাম্পে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সেন্ট্রাল রোডে নৃশংসতা, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব নাকি অন্য কিছু
রাজধানীর নিউ মার্কেট থানাধীন সেন্ট্রাল রোডের ভূতের গলিতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। এক যুবককে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছে। বিষয়টিকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হিসেবে দেখছেন সাধারণ মানুষ।
গুরুতর জখম ওই যুবকের নাম সাইফুল ইসলাম মুন্না (৩২)। তাকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সোমবার (১৯ মে) রাতে নিউ মার্কেট থানার অফিসার ইনচার্জ মাহফুজুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘‘আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি অপরাধীদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’’
তবে ঘটনার কারণ এখনও জানা যায়নি। ভিডিওতে দেখা যায় রবিবার (১৮ মে) রাত ১১ টা ৩২ মিনিটে মুন্নাকে সাদা প্যান্ট ও নেভি ব্লু ফুলহাতা জামা পরা এক যুবক প্রথমে শূন্যে তুলে মাটিতে আছড়ে ফেলছে। এরপর তাকে লাথিমারাসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। কিছু সময়ের মধ্যেই ঘটনাস্থলে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে দুজন তরুণকে আসতে দেখা যায়। মোটরসাইকেলের পেছনে বসা তরুণটি নেমে এসে প্রথম তরুণের সঙ্গে যোগ দেয়। লাথির সঙ্গে চলতে থাকে এলোপাথাড়ি ধারালো অস্ত্রের কোপ। মুন্না মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও চলতে থাকে দুর্বৃত্তের তাণ্ডব। এবার নৃশংসতায় যোগ দেয় মোটরসাইকেলের চালক। কালো পাঞ্জাবি ও হেলমেট পরা ওই ব্যক্তি নিজের কাছে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মুন্নাকে পুনরায় কুপিয়ে বাকিদের মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে পালিয়ে যায়।
এখানেই নৃশংসতার শেষ নয়। যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল মুন্নার শরীরের ওপর দিয়ে চালিয়ে নিয়ে যায়। এরপর আশপাশের লোকজন মুন্নাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়া।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয় মুন্না। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন (পঙ্গু) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে, আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। এবং ঘটনা পরিকল্পিত। এলাকার সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব নিয়ে ঘটনা কিনা খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে ঘটনার পরপরই পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়। রাতেই নিউ মার্কেট থানা পুলিশ অপরাধীদের ধরতে তৎপরতা শুরু করে। ইতোমধ্যে আসামিদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সনাক্ত করা হয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
ঢাকা/এম/আর